‘জিরো এনার্জি’ পুজো
দিনের আলো ধরে রাতে রোশনাই মণ্ডপে
ফিকে হচ্ছে না আলোর জৌলুস। অথচ বিদ্যুৎ বিলের বোঝা নেই। স্রেফ সৌরশক্তির রোশনাইয়ে চোখ টানবে পুজো-মণ্ডপের স্বপ্নালু পরিবেশ।
অভূতপূর্ব এই দৃশ্য দেখা যাবে এ বছর পুজোর কলকাতায়। পুরোপুরি ‘জিরো-এনার্জি’ মণ্ডপ হচ্ছে দক্ষিণ কলকাতার উপকণ্ঠে, মাদুরদহের হোসেনপুরে। দুনিয়া জুড়ে নগরায়ন ও শিল্পায়নের ধাক্কায় যখন পরিবেশ-সচেতনতা বাড়ছে, তখন এমন উদ্যোগ নজর কাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। পৃথিবীর উষ্ণায়ন ঘিরে আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে মণ্ডপসজ্জার এমন ভাবনাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন পরিবেশপ্রেমীরাও।
এর আগে এ শহরে রাজারহাট-নিউটাউনে ৭০ শতাংশ শক্তি সঞ্চয় করে ‘রবি-রশ্মি আবাসন’ গড়ে উঠেছে। পুণের একটি কর্পোরেট সংস্থার অফিসে ৮০ শতাংশ কম শক্তি খরচের নিদর্শন রয়েছে। এ বার শুধুমাত্র সৌরশক্তির প্রয়োগে আলোকসজ্জা ও বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা গড়ে উঠছে মাদুরদহের মণ্ডপটিতে। কেন্দ্রীয় অপ্রচলিত শক্তি মন্ত্রকের পরিদর্শক তথা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অপ্রচলিত শক্তি উন্নয়ন সংস্থা (ওয়েবরেডা)-র প্রাক্তন কর্তা শান্তিপদ গণচৌধুরী নিজে রয়েছেন এই আয়োজনের পুরোভাগে। মহাতীর্থম দুর্গোৎসব কমিটির উদ্যোগে এই পুজোর সভাপতিও তিনিই।
শান্তিবাবুর কথায়, “এমনিতে কলকাতার পুজোয় বাড়তি ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হয়। তা উৎপাদনের জন্য বিপুল কয়লাও পোড়ে। বিন্দুমাত্র বিদ্যুৎ ছাড়াও যে পুজোর জৌলুস কমবে না, এ বার সেটাই দেখিয়ে দেব।” তাঁর দাবি, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী তিন দিনই আকাশের মুখ ভার হয়ে থাকলেও সৌরালোকিত এই মণ্ডপটি ঠিক জ্বলজ্বল করবে। আবহাওয়ার দুর্বিপাকের আশঙ্কার দিকগুলো বিবেচনায় রেখেই মণ্ডপের সৌর প্যানেলগুলি তৈরি হচ্ছে। প্রধানত বাঁশ দিয়ে নির্মিত মণ্ডপটি গড়ে উঠছে সম্পূর্ণ ‘পরিবেশ-বান্ধব’ সামগ্রী দিয়ে।
অভিনব এই মণ্ডপ-ভাবনা ইতিমধ্যে শহরের অন্য পুজো কমিটিগুলোর মধ্যেও আগ্রহ তৈরি করেছে। শ্যামবাজারের একটি পুজোর কর্তারা শান্তিবাবুর সঙ্গে কথাও বলেছেন। কিন্তু পুজোর বাজেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কতটা সাশ্রয় হবে বাঁধা গতের বাইরের এই আলোকসজ্জা?
কলকাতার পুজোর পোড়খাওয়া আলোক-শিল্পী পিনাকী গুহের কথায়, “সৌরশক্তি নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে। এই মুহূর্তে কিন্তু মনে হচ্ছে, সৌরশক্তির কাজে খরচা অনেকটাই বেশি। তবে এই ধরনের কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ সন্দেহ নেই।” শান্তিবাবুর যুক্তি, “এই ধরনের ব্যবস্থায় বিপুল বিদ্যুৎ বিল কিন্তু বেঁচে যাচ্ছে।” তাঁর বক্তব্য, বিভিন্ন সংস্থার ‘স্পনসরশিপে’ সৌরালোকের ব্যবস্থা করা সম্ভব। পুজোর পরে ফের ব্যবহারের জন্য ‘সোলার প্যানেল’গুলো খুলে নিলেই হল। এর আগে দূষণ কমাতে সীমিত আলোর পুজো-মণ্ডপ দেখেছে কলকাতা। শান্তিবাবুর দাবি, পুরোপুরি সৌরালোকিত মণ্ডপ কলকাতায় এই প্রথম। অক্টোবরের শেষ দিকে পুজো। এখনও চার মাস বাকি। কিন্তু অভিনব পুজো-মণ্ডপটির পরিকল্পনা ও নকশার কাজ শেষ করে উৎসাহে ফুটছেন উদ্যোক্তারা। ইতিমধ্যেই প্রস্তুত মণ্ডপের নকশা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.