কাটোয়া ধর্ষণ-কাণ্ড
জেলে লোকটার দিকে জুতো হাতে তেড়ে গেলেন ‘ধর্ষিতা’
গারো বছরের মেয়েটি চিৎকার করে উঠেছিল “মা, ওই সেই বদমাইশটা!” রাগে-ঘৃণায় জুতো খুলে তেড়ে গিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু তেড়ে গিয়েও তিনি মারতে পারেননি। থমকে যান। তার পরে বিচারককে বলেন, “ওর গায়ে হাত দিতেই আমার ঘৃণা হচ্ছে! আমি চিনিয়ে দিলাম। এ বার আপনারাই ওর বিচার করুন।”
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বর্ধমানের কেতুগ্রামে ছোট ট্রেন থেকে নামিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছিল বিধবাকে। রিভলভার ধরে রাখা হয়েছিল ট্রেনে বসা তাঁর এগারো বছরের মেয়ের মাথায়। শনিবার দুপুরে কাটোয়া উপ-সংশোধনাগারে গিয়ে তাঁরা দু’জনেই ‘চিনিয়ে দিলেন’ মূল অভিযুক্তকে।
বৃহস্পতিবার রাতেই কেতুগ্রামের চাকটা থেকে রেজাউল মির্জা ওরফে বাবুকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তার আদত বাড়ি মুশির্র্দাবাদের বড়ঞায় কুলি চৌরাস্তায়। সেখানে একটি খুন করে সে বীরভূমের লাভপুরে চৌহাট্টায় আস্তানা গেড়েছিল বলে পুলিশের দাবি। তাকে জেরা করে কেতুগ্রামের কাজিপাড়া থেকে তাঁর শ্যালক স্বপন শেখকেও পুলিশ গ্রেফতার করে। অভিযোগকারিণী এ দিন তাকেও শনাক্ত করেছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, জেলের ভিতর ফাঁকা জায়গায় গেঞ্জি ও লুঙ্গি পরে দাঁড়িয়েছিল ২২ জন। ডান দিক থেকে চার জনের পরে থাকা লম্বা যুবককে দেখে অভিযোগকারিণীর মেয়ে বলে ওঠে, “ওই বদমাইশটাই আমার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়েছিল।” তার মা বলেন, “ও-ই আমায় ট্রেনে থেকে নামিয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। ওর হাত-পা ধরে ভিক্ষা চেয়েছিলাম। শোনেনি।” রেজাউল পাল্টা বলে ওঠে, “আমি বন্দুক ধরেছিলাম। কিন্তু অন্য কিছু করার চেষ্টা করিনি।”
উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় শুরু হয়ে যায়। আর তখনই উত্তেজিত হয়ে জুতো হাতে রেজাউলের দিকে তেড়ে যান মহিলা। আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েক জন পুলিশকর্মীও বলে ওঠেন, ‘মারুন দু’গালে দু’টো!’ কিন্তু তিনি মাঝপথে দাঁড়িয়ে যান। এসিজেএম-২ উদয় রানা এবং উপস্থিত পুলিশকর্মীরা তত ক্ষণে যা বোঝার বুঝে গিয়েছেন। বিচারককে মহিলা বলেন, “ ওর সঙ্গে আরও এক জন ছিল। ওদের শাস্তির জন্য আমার যা করণীয়, সবই করব।”
আগেও উপসংশোধনাগারে গিয়ে দুই অভিযুক্তকে শনাক্ত করেছিলেন মা-মেয়ে। গত মাসের শেষ দিকে আদালতে চার্জশিটও জমা দিয়েছে পুলিশ। অভিযোগকারিণীর বর্ণনা শুনে আঁকা ছবির সূত্র ধরেই রেজাউল ও কালাম শেখ নামে দু’জনকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। কালাম এখনও অধরা। বর্ধমানের পুলিশ সুপার বলেন, “তদন্তের স্বার্থে ধৃতদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আমরা আদালতে আবেদন করব। আরও কেউ জড়িত ছিল কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ রওনা দিয়ে উপ-সংশোধনাগার ঘুরে দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ বাড়ি ফেরেন মা-মেয়ে। ফিরেই শাশুড়িকে জড়িয়ে ধরেন মহিলা “মা, ওই লোকটা ধরা পড়েছে।” বৌমার পিঠে হাত রেখে বৃদ্ধা বলেন, “ভয় পাবে না মা। আমরা আছি। গোটা গ্রাম তোমার পাশে রয়েছে।”

বৃদ্ধ খুন উখড়ায়
প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে ‘আসা’ নোংরা জল বাড়ির সামনে জমছিল। অভিযোগ, তা নিয়ে প্রতিবাদ করাতেই খুন হতে হল উখড়ার এক বৃদ্ধকে। মারধর করা হল তাঁর ছেলে, জামাইকেও। পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে নিহত ভরত রুইদাস (৬১) ডাঙালপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তাঁর ছেলে কাজল রুইদাস, জামাই বাচ্চু রুইদাস জখম হয়ে বর্ধমান মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। শনিবার সকালে ওই ঘটনার জেরে ওই হামলায় অভিযুক্ত প্রতিবেশী গেনু রুইদাসের বাড়িতে ভাঙচুর চালান এলাকাবাসী। ভরতবাবুকে খুন করার অভিযোগে পুলিশ গেনু এবং তাঁর ছেলে রাজুকে গ্রেফতার করেছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.