হলদিয়ার বিসি রায় মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন বাতিল হওয়া সত্ত্বেও সুপ্রিম কোর্ট সেখানকার ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সেই সুবাদেই ওই পড়ুয়ারা এ বার এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস ফার্স্ট সেমেস্টার পরীক্ষা দেবেন। পরীক্ষা হবে ২৬ জুন। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আইকেয়ার’ পরিচালিত ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ৭৭ জন ছাত্রছাত্রীর পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে বাধ্য হল রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা শুক্রবার বলেন, “সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ। তাই অনেক সমস্যা সত্ত্বেও আমরা ঠিক করেছি, এসএসকেএম থেকেই ওই কলেজের পড়ুয়াদের পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে আমরা এখনও মনে করি, বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ক্যাপিটেশন ফি দিয়ে ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের ভার এ ভাবে সরকারের উপরে চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।” পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি পেলেও ওই ৭৭ জন পরীক্ষার্থীর সমস্যা এখনও কাটেনি। কারণ, এখনও তাঁদের ফর্ম পূরণ হয়নি। বিলি হয়নি অ্যাডমিট কার্ডও। কেন? স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ সূত্রে বলা হয়, ১২ জুন হলদিয়ার ওই ছাত্রছাত্রীদের ফর্ম পূরণের নির্দেশনামা জারি করা হয়েছিল। কয়েক জন শুধু এ ব্যাপারে টেলিফোন করেছিলেন। বাকিরা যোগাযোগই করেননি।
কিন্তু ওই মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া এবং কলেজ-কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, তাঁরা ফর্ম পূরণ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের ফর্ম পূরণ করতে দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছে, ‘হলদিয়ায় আইকেয়ার পরিচালিত মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রদের আমরা চিনি না।’ ওই কলেজের প্রশাসনিক আধিকারিক শ্রীমন্ত বসুর অভিযোগ, “রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ বারবার আমাদের অপমান করে ফিরিয়ে দিয়েছেন। কোন কলেজ থেকে আমাদের ছেলেমেয়েরা পরীক্ষায় বসবেন, সেটাও জানাতে চাননি তাঁরা।” এক ছাত্রের অভিভাবক বলেন, “স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় এখনও কেন যে ছেলেমেয়েগুলির সঙ্গে এমন অসহযোগিতা করে চলেছে, সেটা মাথায় ঢুকছে না।”
ওই কলেজের পড়ুয়ারা যে পরীক্ষা দিতে পারবেন, শীর্ষ আদালত সেই নির্দেশ দিয়েছে গত ৮ জুন। তা সত্ত্বেও ‘অসহযোগিতা’ কেন?
স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা বলেন, “হলদিয়ার ছাত্রছাত্রী ও কর্তারা চাইছেন, আমরা ওঁদের কলেজের নামে নোটিস বার করি এবং কলেজের নামে ফর্ম পূরণের চিঠি পাঠাই। সেটা সম্ভব নয়। কারণ মেডিক্যাল কাউন্সিল তো ওই কলেজের রেজিস্ট্রেশনই বাতিল করে দিয়েছে। আমরা তাই কোর্টে আবেদনকারী ৭৭ জন ছাত্রের নামে আলাদা আলাদা ভাবে নোটিস দিয়েছি।” তিনি জানিয়ে দেন, মার্কশিটেও কোনও কলেজের নাম লেখা থাকবে না। লেখা থাকবে আবেদনকারীদের নম্বর।
পড়ুয়ারা পরীক্ষার সুযোগ পেলেও হলদিয়া মেডিক্যালের জট এখনও খোলেনি। এই সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য সরকার হলফনামা দাখিলে গড়িমসি করায় বৃহস্পতিবারেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। |