|
|
|
|
|
|
|
মুখোমুখি... |
|
মেঘনা থাকে বিষণ্ণ আমি হলাম গিয়ে জীবন |
কোয়েল মল্লিক। ‘হেমলক সোসাইটি’র চাঞ্চল্যকর চরিত্র রূপায়ণে আগামী শুক্রবার সিনে-দর্শকের
সামনে আসছেন
তিনি। কিন্তু তার চেয়েও বড় চাঞ্চল্য এই প্রথম বললেন এক বছরের মধ্যে বিয়ে করছেন।
তারপর আর টালিগঞ্জে
কি না, ভাববেন। ইদানীংকালের সবচেয়ে স্বতঃস্ফূর্ত সাক্ষাৎকারে।
ভুল লেখা হল তাঁর সঙ্গে নিছক আড্ডা মারলেন গৌতম ভট্টাচার্য |
কোয়েল: হাই!
পত্রিকা: আরে, এটা তো ‘সানি হাই’।
কোয়েল: ‘হাই’ আবার কেমন হবে?
পত্রিকা: ‘হেমলক সোসাইটি’র মেঘনা যে ভাবে ‘হাই’ বলে সেটা পুরোপুরি মেঘলা।
কোয়েল: (খিলখিল হাসি) সেই জন্যই চরিত্রটা এত ডিফিকাল্ট হয়ে গিয়েছিল। আমি যা, চরিত্রটা একদম অন্য মেরুর। নিজেকে পুরো ভেঙে চরিত্রটা করতে হয়েছে। আমি ছোটবেলা থেকে মোটেও এরকম ডিস্টার্বড ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ডে বড় হইনি। অথচ মেঘনা চরিত্রটা এমন যে ভীষণ ইনসিকিওরড। সব সময় মনমরা থাকে। বিটার থাকে। বাঁচার কারণ খুঁজে পায় না।
আর আমি হলাম গিয়ে সাক্ষাৎ জীবন। আমি সব সময় মনে করি লোকের জীবনে আমি খুশি আনতে পারি। চিরকাল সব পরিচিতের মধ্যে আমি অঘোষিত অ্যাগনি আন্ট। যে যার দুঃখ-কষ্ট আমাকে বিশ্বাস করে বলে। আর আমি সেগুলো গোপনও রাখি। কলেজে প্রফেসররা বলতেন, আমি নির্ঘাত প্রচণ্ড ভাল সাইকোলজিস্ট হব।
‘হেমলক’ করতে গিয়ে যেটা সমস্যা হচ্ছিলযখন যা চরিত্র করেছি, এ-দিক ও-দিক থেকে কিছু, কিছু খুঁড়ে নিয়ে করেছি। একে, তাকে ছোট, ছোট কপি করেছি। কিন্তু এরকম কিছু আমার জীবনে দেখিনি।
পত্রিকা: আপনার জীবনে কখনও কোনও ইনসিকিওরিটি হাজির হয়নি?
কোয়েল: কখনও না। আমি মানুষ হয়েছি ভীষণ সিকিওরড ভাবে। যৌথ পরিবারের মধ্যে। শুধু বাবা-মা নন, পরিবারের সবাই ভালবাসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। তাই আমার কাছে এত চ্যালেঞ্জিং চরিত্র কখনও আসেনি। কোনও রেফারেন্স লাইনই পাচ্ছিলাম না। সৃজিত বসেছিল আমার সঙ্গে। আর ওয়ার্কশপে সোহাগদি খুব হেল্প করেছেন। সেটে পৌঁছে আমি একদম মেঘনাই হয়ে যেতাম। ‘অ্যাকশন’ থেকে‘কাট’ অবধি।
পত্রিকা: গল্ফ ক্লাবের বাড়িতে ফিরত কে? মেঘনা না কোয়েল?
কোয়েল: আমি ফিরতাম। মেঘনা তো ডিরেক্টর কাট বলা অবধি। আমি বাই নেচার ভীষণ সুখী মানুষ। সেটা বদলাবে কেন?
পত্রিকা: সুখী হোন আর যাই হোন। স্লিপিং পিল্স তো নিশ্চয়ই খেয়েছেন?
কোয়েল: জীবনে না। নট অ্যাট অল (চোখ বিস্ফারিত)।
পত্রিকা: নর্ম্যাল ঘুমের ওষুধ খাওয়া বলছি না। বেশি ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার কথা বলছি...
কোয়েল: হোয়াট আর ইউ সেয়িং!
পত্রিকা: টালিগঞ্জের নামী নায়িকা অথচ বেশি ঘুমের ওষুধ খাননি, ডাক্তার দৌড়ে আসেনি, হয় না কি?
কোয়েল: অফ কোর্স হয়। আমি এমনিতেও কোনও দিন স্লিপিং পিল খাইনি। ঘুম-টুম না এলে বই পড়েছি। বা ফিল্ম দেখেছি। অন গড বলছি।
পত্রিকা: সিগারেট খান?
কোয়েল: না! (চোখ বড় বড় করে)
পত্রিকা: মদ?
কোয়েল: না-আ-আ!
পত্রিকা: কেন না?
কোয়েল: আমার ওগুলো থেকে এক্সাইটমেন্টের কোনও প্রয়োজন হয় নি।
পত্রিকা: নাইট ক্লাবে যান?
কোয়েল: না-আ-আ-আ! শুটিংয়ের জন্য গেছি। এমনিতে কখনও না।
|
ওরা তিনজন |
প্রসেনজিৎ: অসম্ভব এনার্জি। বলা যেতে পারে এনার্জির স্টোরহাউজ। আমি শুধু এনার্জির বহরটা অবাক হয়ে দেখি আর মুগ্ধ হই। |
জিৎ: আমার প্রথম ছবির হিরো। আমায় প্রচুর সাহায্য করেছে। যে সময়ে আমি লেফ্ট অ্যাঙ্গেল আর রাইট অ্যাঙ্গেল আলাদা করে বুঝতাম না, তখন ও আমার পাশে ছিল। জিৎ খুব ভাল অভিনেতাও। |
দেব: ভীষণ হার্ড ওয়ার্কিং। ভীষণ সিনসিয়ার। কিন্তু খালি আমার পেছনে লাগে। |
|
পত্রিকা: নাইট ক্লাব কী দোষ করল?
কোয়েল: ওই লাউড মিউজিকের মধ্যে কেউ কারও কথা শুনতে পায় না। শুনতে বোধহয় চায়ও না।
লোকে বলে স্ট্রেস বাস্টার। আমি তো ছাই কিছু বুঝতে পারি না। তার চেয়ে আমার কাছে বাড়িতে বসে আড্ডাটা অনেক বেটার।
পত্রিকা: এইবার বুঝতে পারছি আপনাকে ইন্টারভিউ করতে আসার আগে পত্রিকার সহকর্মীরা কেন জনে জনে বলছিল ‘বেস্ট অফ লাক’...
কোয়েল: মানে?
পত্রিকা: ‘বেস্ট অফ লাক’ মানে এখানে আমাদের কয়নেজে ‘দুগ্গা, দুগ্গা’।
কোয়েল: কীহা, হা, হা, হা, হা, হা, হা, হা.... এটা কিন্তু চূড়াম্ত অপমানজনক হল (হাসি)। চূড়াম্ত!
পত্রিকা: ওরা তো ঠিকই বলেছিল যে কোয়েল এমন জমাট ডিফেন্স যে ভেদ করা যাবে না।
কোয়েল: আরে কী করা যাবে। আমি মানুষটাই এমন। বোরিং। সেনসেশনাল উত্তর দিতে পারি না, কী করব?
পত্রিকা: ‘হেমলক’-এ একটা দৃশ্য আছে আপনার আর পরমের মধ্যে। প্রচণ্ড নাটকীয় অবস্থায় দু’জনে কাছাকাছি। অন্য কেউ হলে অবধারিত চুম্বন দৃশ্য। যেহেতু আপনি, ব্যাপারটা ঘটল না।
কোয়েল: আমি যেগুলোতে কমফর্টেবল নই, সেটা ক্যামেরার সামনে করলে আমার অস্বস্তিই ধরা পড়বে। শুধু খোলামেলা দৃশ্য বলে নয়। কোনও কস্টিউমবা রোল পছন্দ না হলেও আমি সেটা রিজেক্ট করি। আর ইন্টিমেট সিন দেখানোটা কিন্তু অনেক ভাবে করা যায়। আমি বলছি না দু’টো ফুল দেখান ওই সময়। তা বলে সব খোলামেলা দেখাতে হবে তারও কোনও মানে নেই। আমি মনে করি সব কিছু খোলামেলা দেখানোর মধ্যে বিশাল কোনও প্রাপ্তি নেই। মানুষের কল্পনার ওপর অনেক কিছু ছেড়ে দিতে হয়। আর অভিনেত্রী হিসেবে, আই ক্যান পুশ মাই লিমিট্স, বাট আই হ্যাভ ভেরি স্ট্রং বাউন্ডারিজ। আমার জীবনে সীমানা আছে।
পত্রিকা: তা হলে তো কলেজে প্রফেসররা যেমন ভেবেছিলেন, সাইকোলজিস্ট হলেই পারতেন।
কোয়েল: কী-ই-ই-ই-ই! আবার উল্টোপাল্টা অপমান!
অ্যাজ আ হিউম্যান বিয়িং, ইট ইজ ইম্পর্ট্যান্ট টু কিপ বাউন্ডারিজ ইন লাইফ।
পত্রিকা: ‘ছত্রাক’ স্বপ্নেও ভাবতে পারেন না।
কোয়েল: ওরে বাবা! না, না।
পত্রিকা: অভিনেত্রী পাওলি?
কোয়েল: টিপিক্যাল ইন্ডিয়ান চার্ম। আর সঙ্গে একজোড়া খুব বুদ্ধিদীপ্ত চোখ, যেটা খুব অ্যাট্র্যাকটিভ।
পত্রিকা: শ্রাবন্তী?
কোয়েল: খুব স্পনটেনিয়াস অভিনেত্রী। আর ভীষণ ভাল দেখতে।
পত্রিকা: পার্নো মিত্র?
কোয়েল: খুব ইনোসেন্ট একটা হাসি আছে। সুইটনেস আছে যেটা খুব অ্যাপিল করে। ওর ‘রঞ্জনা’ আমি দেখেছি।
পত্রিকা: স্বস্তিকা?
কোয়েল: খুব ভাল অভিনেত্রী। আর ডেফিনিটলি দারুণ দেখতে।
পত্রিকা: স্বস্তিকা আর আপনার মধ্যে নতুন করে
বন্ধুত্ব হয়েছে?
কোয়েল: বন্ধুত্ব হওয়ার কিছু নেই। আমরা কখনও একসঙ্গে কাজ করিনি বলে সে ভাবে বন্ধুত্ব হয়নি।
পত্রিকা: স্বস্তিকার সঙ্গে অনেক প্রজেক্ট নাকি আপনি করতে রাজি হচ্ছেন না?
কোয়েল: সে রকম কিছু নয়। চরিত্রে কমফর্টেবল না হলে কী করে হ্যাঁ বলব? যদি হই, ভবিষ্যতে কাজ হতেই পারে। স্বস্তিকার জন্য নয়। ও খুব ভাল অভিনেত্রী।
পত্রিকা: আবার সাবধানী জবাব। ঠিক আছে। এর পরের প্রশ্ন আর আপনার উত্তরদু’টো আমিই একসঙ্গে দিয়ে দিচ্ছি। কোয়েল আপনি জীবনে ডিপ্রেশন ফেস করেছেন? কোয়েলের উত্তর, না।
কোয়েল: উত্তরটা ভুল হল (হাসি)। আমি ডিপ্রেশন দেখেছি। ছোটবেলা থেকে আমার মধ্যে একটা ছোট ধারার মতো ওটা রয়েছে। আমার ব্যক্তিত্বের মধ্যেই আছে। একেক সময় আসে, কিছু দিন থাকে, আবার চলে যায়।
পত্রিকা: আপনার মধ্যেই বাস করা একটা ছোট পুকুর?
কোয়েল: বলতে পারেন। তবে সারাক্ষণ থাকে না।
পত্রিকা: পুকুরটা কখন ভরে? বর্ষার সময়ে?
কোয়েল: বর্ষা, শীত বলে কিছু নেই। যে কোনও সময়ে হতে পারে। আমার বাবার মধ্যেও এই বৈশিষ্ট্যটা আছে। বাবাকে দেখেছি ওই ফেজ-এর মধ্যে বই পড়তে, কবিতা পড়তে।
পত্রিকা: আপনি কী করেন?
কোয়েল: সেই সব দিনগুলোয় কোনও কিছুই ভাল লাগে না। আড্ডা মারতে ভাল লাগে না। কোনও কিছুই ভাল লাগে না। আমার সেরা বন্ধু তখন হয়ে যায় প্রকৃতি।
পত্রিকা: এই মুহূর্তের স্টেটাস আপডেট কী? পুকুর
কি ভরা?
কোয়েল: ধ্যাত! এখন পুকুরটা উধাও। দেখছেন না কী প্রচণ্ড জোরে হাসছি!
পত্রিকা: রিয়েল কোয়েল মল্লিক কে, কখনও কি জানা যাবে? মহিলা যা পলিটিক্যালি কারেক্ট...
কোয়েল: আরে আমি খুব সাধারণ। যে ভাবে মানুষ অফিসে যায়, সে ভাবে আমি শু্যটিংয়ে যাই। ফিরে এসে যে ভাবে সে বাড়িতে থাকে, পরিবারকে সময় দেয়, সে ভাবে আমিও দিই। সব সময় আমায় ব্যালান্সিং করতে হয়।
পত্রিকা: আপনি এমন বলছেন যেন বাড়ি ফিরে এসে বাসন মাজেন বা টোম্যাটো কাটেন!
কোয়েল: (খিলখিল হাসি) না, তা নয়। তবে আমাদের অনেক আত্মীয়, ভবানীপুরে বাড়ি আছে। সবার সঙ্গে সময় কাটাই। বৌদিদের সঙ্গে আড্ডা মারি।
পত্রিকা: আচ্ছা, এই যে ইন্ডাস্ট্রিতে সবাই জানে আপনার প্রেমিক কে, অথচ আপনি নিজে কখনও প্রকাশ্যে বলেন না, কারণটা কী?
কোয়েল: (মুখের মাস্লসের নাটকীয় বদল। শক্ত হয়ে যাওয়া) আমি ব্যক্তিগত ব্যাপারকে হাট করে দেওয়ার কোনও কারণ দেখতে পাই না। আমায় যদি খবরে থাকতেই হয়, সেটা আমার পেশার জন্য হোক। কিন্তু তার বাইরে আমার ভেতরকার ব্যাপারস্যাপার নিয়ে প্রকাশ্য আলোচনা
করতে চাই না। প্রেমিক থাকলেও বলতাম না, না
থাকলেও বলতাম না।
পত্রিকা: উফফফ!
কোয়েল: উফ কীসের? (হাসি) এটাই আমি।
পত্রিকা: বিয়ে করবেন তো?
কোয়েল: বিয়ে বলতে গিয়ে মনে পড়ল, একটা সময়ে, তখন বোধহয় ক্লাস সিক্স-সেভেনে পড়ি। বিয়ে করতে আমি এত আগ্রহী ছিলাম যে আনন্দবাজারের ‘পাত্র চাই’-য়ের বিজ্ঞাপন খুলে খুলে নিজের জন্য আদর্শ পাত্র খুঁজতাম। মন খারাপ হয়ে যেত কারণ প্রায় সবাই এডুকেশনাল কোয়ালিফিকেশন চাইত। ওই বয়সে আমার তো ছিল না।
পত্রিকা: তারপর যখন জীবনে প্রেম এল, বুঝলেন কী হাস্যকর ছিল ব্যাপারটা।
কোয়েল: উফ্ফ্ফ্! ঘুরে-ফিরে সেই...
পত্রিকা: কিন্তু আপনার বয়ফ্রেন্ডের যন্ত্রণার কথা ভাবুন। সে বেচারি বাইরে বলতে পারবে না আপনার কথা। ডিস্কে যেতে পারবে না। সিসিডি বা বারিস্তা যাওয়া যাবে না। কলকাতা হলে আড্ডা মারতে হবে বাড়িতে বসে। এই লোকটারই তো অ্যাগনি আন্টের কাছে যাওয়া উচিত।
কোয়েল: এ বার কিন্তু আমায় সাংঘাতিক অপমান করা হচ্ছে। হচ্ছেটা কী!
পত্রিকা: কেন, এটা তো খুব ইনোসেন্ট প্রশ্ন...
কোয়েল: ইনোসেন্ট না হাতি! এটা হল জিলিপি।
পত্রিকা: অ্যাগনি আন্ট হিসেবে আপনার কাছে যারা আশ্রয় নেয়, তাদের আপনি কী বলেন?
কোয়েল: প্রথমে ডি-ফোকাস করে দিই। দুঃখটা থেকে একদম সরিয়ে দিই। জীবনের ভাল দিকগুলো দেখাই। তার ছোটবেলার ভাল স্মৃতিগুলোর কথা বলি। বাবা-মার কথা বলি। চেষ্টা করি বোঝাতে যাতে লাইফের ব্রাইট দিকগুলো সে দেখতে পায় অন্ধকারকে ভুলে গিয়ে। বলি, জীবন শেষ করে দেওয়ার মধ্যে কোনও বীরত্ব নেই। ওটার মানে হেরে যাওয়া। আরেকটা কাজ করিআমায় যে বিশ্বাস করে বলল, সেই মন্ত্রগুপ্তি কখনও ভাঙি না।
পত্রিকা: মনে করুন, আপনার এই দুঃখ দূর করে দেওয়ার দরবারে এক তরুণ হাজির হল। বলল, আমি খুব ডিপ্রেসড। আমার ভাবী স্ত্রী ভাবমূর্তি নিয়ে এত সচেতন যে সে ডিস্কে যায় না। সিসিডি-তে বসে না। বারিস্তায় যায় না...
কোয়েল: কী-ই-ই-ই! জিলিপি প্রশ্ন। দিস ইজ জিলিপি!
পত্রিকা: জিলিপি কেন? একে কী পরামর্শ দেবেন?
কোয়েল: (খিলখিল হাসি) প্রথমে বলব ইউ হ্যাভ টু ডিল উইথ ইট। তার পর দুঃখ থেকে মনটা সরিয়ে দেওয়ার জন্য আইসক্রিম খাওয়াতে নিয়ে যাব।
পত্রিকা: ট্রিটমেন্ট শেষ?
কোয়েল: বলব সত্যিই যদি তুমি মেয়েটাকে ভালবাস, তা হলে তুমিও ওর সমস্যাটা বুঝবে এবং এটার সঙ্গে মানিয়ে থাকতে পারবে।
পত্রিকা: সেই ডিজাইনার পিকচার পোস্টকার্ড উত্তর।
কোয়েল: একটুও না।
পত্রিকা: আচ্ছা, এই যে হেমলকের মতো ইনটেন্স ছবি করলেন। পরিচালকের এত গাইডেন্স পেলেন। এতটা সময় একান্তে কাটালেন। তা সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের প্রেমে পড়তে ইচ্ছে হয়নি?
কোয়েল: হোয়াট আ কোশ্চেন! (প্রায় রাগত)। মাই ডিরেকটর ইজ মাই ডিরেকটর। হি ওয়াজ মাই প্রফেসর।
পত্রিকা: হ্যালো কোয়েল... কোয়েল...
কোয়েল: এর মধ্যে হ্যালোর কিছু নেই। যে লোকটা শয়নে, স্বপনে, জাগরণে সিনেমা দেখে তার সঙ্গে কাজ করার সময় শুধু সিনেমাই মাথায় থাকে।
পত্রিকা: এই জন্যই লোকে আপনাকে পলিটিক্যালি কারেক্ট বলে।
কোয়েল: পলিটিক্যালি কারেক্ট-এর কী আছে? মাত্র দু’জন পরিচালক আছে যাদের আমি নাম ধরে ডাকিরাজ আর সৃজিত। বাকিরা সবাই দাদা বা কাকা। আমি কাজ করেছি সুজিত গুহ, সুজিত মণ্ডল, হরনাথ চক্রবর্তী, প্রভাত রায়... এ বার কি আপনি এঁদের কথাও জিজ্ঞেস করবেন... আস্ক, আস্ক, কিপ অন আস্কিং (চোখে কপট কৌতুক)।
পত্রিকা: আচ্ছা আপনি যখন বিয়ে করবেন, সেটাও কি এরকম ভয়ঙ্কর প্রাইভেট থাকবে?
কোয়েল: (একগাল হাসি) তখন কয়েক মাস আগেই আমি চিৎকার করে সবাইকে সেটা জানিয়ে দেব।
পত্রিকা: অভাবিত এই ব্যাপারটা কবে ঘটবে?
কোয়েল: এক বছরের মধ্যে ধরতে পারেন।
পত্রিকা: কোয়েল মল্লিকের তার মানে এক বছর বাদে বিয়ে?
কোয়েল: হ্যাঁ, এক বছরের মধ্যে হওয়া উচিত।
পত্রিকা: বিয়ের পর স্টুডিও যাত্রা অব্যাহত
থাকবে তো?
কোয়েল: জানি না। তখন তো দায়িত্ব দ্বিগুণ হয়ে যাবে। শ্বশুরবাড়ি আর বাবার বাড়ি, দু’টো সামলে কাজ করার সময় পাওয়া যাবে কি না, জানি না। এমনিতেও আমার কাছে বরাবরের চাহিদা
সফল মানুষের জীবন। নিছক স্টারডমের সাফল্য কখনও নয়।
পত্রিকা: কী বলছেন! বিয়ের পর বাই বাই টালিগঞ্জ? ক্যামেরা মিস করবেন না?
কোয়েল: ক্যামেরা মিস করব না বললে মিথ্যে বলা হবে। দশ বছর ধরে এই কাজটাই তো করে আসছি। কিন্তু আমি খুব নিশ্চিত নই পেশাটা চালাতে পারব বলে। প্রায়োরিটিগুলোই বদলে যাবে। বৌ হিসেবে আমার ওপর এক্সপেকটেশন থাকবে। তার পরেও ভবিষ্যতে সেই লাইনেই আরও দায়িত্ব আসবে।
আমার কাছে জীবন থেকে পাওয়া সুখ আগে, প্রফেশন পরে। নিজের লোকদের হাসিমুখ দেখাটা আমার কাছে নিজের হাসিমুখ দেখার চেয়ে অনেক ইমপর্ট্যান্ট।
পত্রিকা: সিদ্ধান্তের আরেকটা মানেও হয়। দ্যাখ টপ ফর্মে কেমন ছেড়ে দিয়ে চলে গেলাম।
কোয়েল: নাইস কোশ্চেন।
পত্রিকা: যাক!
কোয়েল: বিয়ের পরে ওই টিপিকাল কলেজ গার্ল করা পোষাবে বলে আমার মনে হয় না। আমার বয়েসের সঙ্গে মানানসই রোল-টোল পেলে দেখা যাবে। তবে, জানেন তো, অনেক কিছুই অদৃষ্টের ওপর থাকে। মানুষ ভাবে এক। সেটা বদলে যায়।
পত্রিকা: ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকে বলে আপনি ভেঙ্কটেশ কন্যা। ছেড়ে দেওয়ার আগে ভেঙ্কটেশের বাইরে কাজ করে কিছু প্রমাণ করে দেওয়ার
তাগিদ নেই?
কোয়েল: কাউকে ও রকম দেখিয়ে দেওয়ার মানসিকতায় আমি বিশ্বাস করি না। ওটা আমার মধ্যে নেই। ভেঙ্কটেশের সঙ্গে কাজ করছি আমার থার্ড ছবি থেকে। তার বাইরেও করেছি। এই তো এখন ‘দশমী’ করছি সিনে নাইন-এর সঙ্গে। তবে আপনি যে বিশেষণটা দিলেন সেটা আমার কানে পৌঁছয়নি। কিন্তু এটা ডেফিনিটলি মানতেই হবে যে আমার কেরিয়ারে ওদের একটা বড় কন্ট্রিবিউশন আছে।
পত্রিকা: কোয়েল মল্লিককে কী ভাবে মনে রাখা হলে আপনি খুশি হবেন?
কোয়েল: বাংলা সিনেমার একজন ইমপর্ট্যান্ট ফিগার আর সফল মানুষ হিসেবে।
পত্রিকা: মাত্র দশ বছরে ছেড়ে চলে গেলে কি ইম্পর্ট্যান্ট ফিগার হওয়া যায়?
কোয়েল: যায়। যায়। ইম্প্রেশন হওয়ার হলে
তাতেই হয়। |
|
|
|
|
|