|
|
|
|
|
|
উত্তর কলকাতা
|
জেলাশাসকের কার্যালয় |
শিকেয় অগ্নিবিধি |
সত্যজিৎ চক্রবর্তী |
অগ্নিতে অরক্ষিত খাস জেলাশাসকের দফতরই। প্রায় ৭০টি অগ্নিনির্বাপক। কিন্তু অভিযোগ, অধিকাংশেরই মেয়াদ পেরিয়ে গিয়েছে। ফলে আগুন লাগলে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এমনই অবস্থা বারাসতে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসকের কার্যালয়ের।
বারাসতের কাছারির মাঠের কাছেই উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসকের কার্যালয়ের চার তলা ভবন। এর উপরে দু’টি তলা তৈরি হচ্ছে। ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে জেলা আদালত, বিভাগীয় মৎস্য দফতর, পরিবহণ দফতর এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের আবাসন। স্থানীয় বাসিন্দা ও কর্মচারীদের আশঙ্কা, এখানে কোনও আগুন লাগলে ভয়াবহ আকার নিতে পারে। কারণ, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকলেও অধিকাংশেরই মেয়াদ
পেরিয়ে গিয়েছে।
|
 |
ঝুলছে মেয়াদ শেষ হওয়া অগ্নিনির্বাপক |
স্থানীয় বাসিন্দা ও কর্মীরা জানান, এই ভবনে অগ্নিনির্বাপক ছাড়া আগুনের মোকাবিলার অন্য কোনও ব্যবস্থা নেই। কিন্তু অধিকাংশ অগ্নিনির্বাপকের রিফিলিং-এর তারিখ পেরিয়ে গিয়েছে। ফলে সেগুলি ব্যবহার করা সম্ভব নয়। যেমন, ভবনে ঢোকার মুখে ঝোলানো দু’টি সিলিন্ডারে লেখা রয়েছে সেগুলির কার্যকারিতার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২২-০৮-২০১১ তারিখে। তার পরে দু’টি অগ্নিনির্বাপক রিফিল হয়নি। এমনই অবস্থা অধিকাংশ অগ্নিনির্বাপকের। কর্মীদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট বিভাগের গাফিলতিতে রিফিলিং হয়নি। ভুল করে এই সিলিন্ডারগুলি নিয়ে আগুন নেভাতে গেলে মৃত্যুও হতে পারে।
এই ভবনে জেলাশাসক ছাড়াও বারাসতের মহকুমাশাসক-সহ একাধিক বিভাগের আধিকারিকেরা বসেন। নানা কাজে মন্ত্রী, বিধায়ক এবং সাংসদেরা যাতায়াত করেন। আসেন বহু সাধারণ মানুষও। এই ভবনে একাধিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র রয়েছে। চলে বেশ ক’টি জেনারেটরও। নীচের তলায় রয়েছে ক্যান্টিন। কাগজ, কাঠ, প্লাস্টিকের অসংখ্য জিনিস রয়েছে। কর্মীদের আশঙ্কা, কোনও ভাবে আগুন ভয়াবহ অবস্থা হবে। পুড়ে যেতে পারে গুরুত্বপূর্ণ অনেক নথিও। যাতে পরে খুব অসুবিধা হতে পারে। |
 |
জেলাশাসকের কার্যালয় সূত্রে খবর, সিলিন্ডারগুলির মেয়াদ থাকে এক বছর। তাই প্রতি বছর পরিবর্তন করতে হয়। ২০১১-’১২ আর্থিক বছরে কোনও পরিবর্তন হয়নি। ফলে আগুন নেভাতে ভরসা সেই দমকলই। এই ভবনে কাজে আসা ব্যারাকপুরের বাসিন্দা সুমন্ত গোলদার বলেন, “জেলাশাসকের ভবনেই সুরক্ষা নেই। দুর্ঘটনা ঘটলে দায় কে নেবে? সবাই ঠুঁটো জগন্নাথের মতো বসে আছে। বিপদ ঘটলে তদন্ত হবে। তার পরে যে-কে-সেই।”
উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সঞ্জল বনসল বলেন, “বিষয়টি জানতাম না। খুব শীঘ্রই সিলিন্ডারগুলি বদলানোর ব্যবস্থা করব। পাশাপাশি, এখনও সেগুলি বদলানো হয়নি কেন খোঁজ নেব।” বারাসতের সাংসদ তৃণমূলের কাকলি ঘোষদস্তিদার বলেন, “ঠিক সময়ে বিষয়টি জেলাশাসককে জানানো হলে সিলিন্ডারগুলি ১০ মাস ধরে পড়ে থাকত না। যে সংস্থা থেকে অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডারগুলি কেনা হয়, তাদের উচিত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সময়মতো সেগুলি বদলে দেওয়া।” |
|
দমকলের ডিজি দুর্গাপ্রসাদ তারানিয়া বলেন, “আমরা সব সময়ই অগ্নিবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিই। বিশেষত সরকারি দফতরগুলি আর্থিক কারণে গড়িমসি করে। এ ক্ষেত্রে দমকলের কিছু করার থাকে না। দ্রুত সিলিন্ডারগুলি বদলে ফেলা উচিত। আধিকারিকদের পরিদর্শনে পাঠাব।” |
ছবি: সুদীপ ঘোষ |
|
|
 |
|
|