নিউ টাউনকে দূষণমুক্ত রাখতে আধুনিক দূষণহীন যানবাহন চালানোর বিষয়ে উদ্যোগী হল হিডকো। কলকাতায় যানদূষণ একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা। নিউ টাউনের মতো নতুন উপনগরীতেও যাতে সেই সমস্যা না থাকে, তাই তৎপর হয়েছে হিডকো।
নিউ টাউনে এখনও পর্যন্ত গণ-পরিবহণ যথেষ্ট সংখ্যায় নেই। হিডকো-কর্তৃপক্ষের দাবি, যে কোনও উপায়ে যানবাহনের সংখ্যা বাড়িয়ে এই সমস্যার সমাধান করতে চাইছেন না তাঁরা। একই সঙ্গে দেখা হচ্ছে দূষণের মাত্রা যেন কোনও ভাবেই না বাড়ে। নিউ টাউনে তাই অন্যান্য পরিবহণ ব্যবস্থার পাশাপাশি দূষণহীন গণ-পরিবহণ চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে। হিডকো-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলেন, “ইতিমধ্যেই আমরা দিল্লির আর্বান মাস ট্রানজিট কোম্পানির সঙ্গে কথা বলেছি। নিউ টাউনে দূষণহীন গণ-পরিবহণ ব্যবস্থা চালু করতে মেট্রো রেলের পাশাপাশি বিদ্যুৎচালিত বাস, অটো, মোনোরেল, ফুটপাথের ধারে পার্সোনাল র্যাপিড ট্রান্সপোর্ট চালানো যায় কি না, তার চিন্তাভাবনা চলছে। এই ব্যাপারে ওই সংস্থা একটি সমীক্ষা-রিপোর্ট জমা দিচ্ছে। সেই অনুযায়ী কাজ শুরু হবে।” দেবাশিসবাবু জানিয়েছেন, শুধু গাড়িই নয়, রাস্তার ধারে সাইকেল চালানোর জন্য আলাদা ‘ট্র্যাক’ তৈরি করার কথাও ভাবা হচ্ছে। |
এমনই ‘পার্সোনাল র্যাপিড ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম’ চালানো হতে পারে নিউ টাউনে। |
গত কয়েক বছরে নিউ টাউনে জনসংখ্যা বেড়েছে অনেকটাই। গড়ে উঠেছে তথ্যপ্রযুক্তির বহু অফিস। তবে অভিযোগ, লোক বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পর্যাপ্ত যানবাহন চালানোর ব্যবস্থা হয়নি ওই অঞ্চলে। এখনও নিউ টাউনে মানুষের প্রধান ভরসা সেই পুরনো অটো। অভিযোগ, দূষণ সৃষ্টিকারী ওই টু-স্ট্রোক অটো কলকাতায় নিষিদ্ধ হয়ে গেলেও দেখতে পাওয়া যায় নিউ টাউনের বেশ কিছু অঞ্চলে। চলাচল করে দূষণ সৃষ্টিকারী পুরনো ট্যাক্সিও। এর ফলে এক দিকে যেমন নতুন শহরে দূষণ বাড়ছে, তেমন যানবাহন সমস্যার স্থায়ী সমাধানও হচ্ছে না। আর এই যান-সমস্যার কারণেই বহু আবাসনে স্থায়ী ভাবে বাসিন্দারা আসছেন না। দেবাশিসবাবু জানিয়েছেন, গণ-পরিবহণের সংখ্যা বাড়াতে তাঁরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। ওই এলাকায় খুব শীঘ্রই সার্কুলার বাস চালু হয়ে যাবে। ভূতল পরিবহণ দফতরের সঙ্গে আলোচনার পরে ঠিক হয়েছে, ৭০টি বাস চালানো হবে নিউ টাউনে।
তবে এই গণ-পরিবহণ ব্যবস্থায় কিছু অভিনবত্ব আনতে উদ্যোগী হয়েছে হিডকো। এক দিকে যেমন মেট্রো রেলের কাজ চলছে, তেমনই আবার মোনোরেল চালানো যায় কি না, সে বিষয়ে ‘আর্বান মাস ট্রানজিট কোম্পানি’র সঙ্গে সমীক্ষা হচ্ছে বলে হিডকো সূত্রে খবর। কোনও বাসস্টপে নেমে বাড়ি পর্যন্ত যাওয়ার জন্য সমান্তরাল লিফ্টের মতো দেখতে রাস্তার ধারে পার্সোনাল র্যাপিড ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম রাখা যায় কি না, ভাবা হচ্ছে। দেবাশিসবাবু বলেন, “ওই সংস্থা শুধু সমীক্ষা ও পরকল্পনা করেই দায়িত্ব শেষ করবে না। পুরো প্রকল্পের আর্থিক পরিকল্পনাও করবে তারা। এই দূষণহীন যানবাহন নিউ টাউনে চালানো আর্থিক ভাবে কতটা লাভজনক হতে পারে, সে ব্যাপারেও রিপোর্ট দেবে তারা।” |