২ নাবালিকা বোনের বিয়ে রুখল প্রশাসন
রযাত্রীদের পাশাপাশি আত্মীয়স্বজনের ভিড়ে গমগম করছে বিয়েবাড়ি। শুরু হয়ে গিয়েছিল আমন্ত্রিতদের খাওয়াদাওয়াও। শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার আগে বাড়ির অন্দরমহলে চলছিল দুই বোনের সাজসজ্জা। আচমকাই হাজির হলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। সঙ্গে চাঁচল থানার আইসি-সহ পুলিশ বাহিনী। নিমেষেই বদলে গেল উৎসব বাড়ির চিত্র। পুলিশ-প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়ে গেল দুই নাবালিকার বিয়ের অনুষ্ঠান। কনেদের না-নিয়েই বাড়ি ফিরতে হল দুই পাত্র-সহ বরযাত্রীদের। মালদহের চাঁচলের তারাপুরে বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটে।
ভোর রাত পর্যন্ত গরমে ঘেমেনেয়ে ঠায় বসে থাকেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অরুণ ঘোষ, চাঁচল থানার আইসি জ্যোতিষ বর্মন-সহ পুলিশকর্মীরা। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “পুলিশ-প্রশাসন দুই নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের বাবা আইন না-জেনে বিয়ে দিচ্ছিলেন বলে মুচলেকা দেওয়ায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অরুণ ঘোষ বলেন, “মেয়েদের বাবা মুচলেকা দেওয়ার পাশাপাশি পাত্রপক্ষও জানায়, আইনের বিষয়টি তাদের জানা ছিল না। তাই কারও বিরুদ্ধেই কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
চাঁচল মহকুমা জুড়েই নাবালিকার বিয়ে দেওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। সম্প্রতি চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ায় বিয়ের আসরে হাজির হয়ে একাধিক নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করেছে পুলিশ-প্রশাসন। সহজেই যে ওই কাজ হয়েছে তাও নয়। বিক্ষোভের পাশাপাশি হরিশ্চন্দ্রপুরের চকসাতন-মহারাজপুরে পুলিশের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও ঘটে। তবে আইন রক্ষায় নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করতে হলেও অন্য একটি বিষয়ও ভাবাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসনকে। সেটি হল, অধিকাংশ অভাবী পরিবারেই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। সর্বস্ব খরচ করে মাঝপথে বিয়ে বন্ধ হওয়ায় পথে বসতে হচ্ছে তাঁদের। আর এ জন্য দায়ী সচেতনতার অভাব। সাহাবুদ্দিন আহমেদের কথাই ধরা যাক। পেশায় ক্ষুদ্র চাষি। অভাবের সংসারে অর্থাভাবে প্রাথমিকের পর আর মেয়েদের পড়াতে পারেননি। ৪ মেয়ের মধ্যে বুধবার ছিল তৃতীয় ও চতুর্থ মেয়ে পারভিন ও গুলশিয়ারা খাতুনের বিয়ে। পারভিনের বিয়ে ঠিক হয় হরিশ্চন্দ্রপুরের কনুয়ার আব্দুল রশিদের সঙ্গে। গুলশিয়ারার বিয়ে ঠিক হয়েছিল চাঁচলেরই কালিগঞ্জের মাসিরুল শেখের সঙ্গে। দুই পাত্রই দিনমজুর পরিবারের। ধার করে একইসঙ্গে দুই মেয়ের বিয়ে ঠিক করেন তিনি।
সাহাবুদ্দিন বলেন, “পাত্র পাওয়ায় দুই মেয়ের বিয়ে ঠিক করি। আইন-কানুন জানতাম না। ১৮ বছর না-হলে ওদের শ্বশুরবাড়িতে পাঠাব না।” চাঁচলের ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক অশোক সরকার বলেন, “নাবালিকা বিয়ে বন্ধে সচেতনতা বাড়িয়ে তুলতে প্রচার জরুরি। পঞ্চায়েতগুলিকে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.