ফব-য় ডামাডোল তুঙ্গে
সিদ্ধান্ত মানছি না, সম্পাদকের চিঠি রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীকে
লের প্রবীণ রাজ্য সম্পাদক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে। এই অবস্থায় বাকি রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী বৈঠকে বসে কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সেই খবর পৌঁছচ্ছে রাজ্য সম্পাদকের কাছে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি চিঠি পাঠাচ্ছেন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সতীর্থদের। পরিষ্কার জানাচ্ছেন, তাঁর অনুপস্থিতিতে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাজ্য সম্পাদক হিসাবে তিনি তা মানতে পারছেন না!
ঘটনা ঘটেছে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের অন্দরে। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের চিঠি পাঠিয়ে তাঁদের সিদ্ধান্তে ‘অসন্তোষ’ ব্যক্ত করেছেন দলের বর্ষীয়ান রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ। দলের অন্দরে এই মনোভাবও প্রকাশ করেছেন যে, রাজ্য নেতৃত্ব এ হেন আচরণ করতে থাকলে তিনি এই বয়সে, এই শরীরেই জেলায় জেলায় গিয়ে সেখানকার সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট হবেন!
বাম রাজনীতিতে দল পরিচালনা ঘিরে এমন ঘটনা অভূতপূর্ব!
বুকে ব্যথা নিয়ে সম্প্রতি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল অশোকবাবুকে। তিনি হাসপাতালে থাকাকালীনই গত ৭ জুন ফ ব-র রাজ্য দফতরে বৈঠকে বসে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী। উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় জনবাদী ফরওয়ার্ড ব্লকের কিছু কর্মীকে ফ ব-র সদস্যপদ দেওয়া নিয়ে দলের অন্দরে প্রবল গোলমাল চলছিল। ফ ব সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী ঠিক করে, তারা বিষয়টি নিয়ে সরাসরি দলের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাসের সঙ্গে আলোচনায় বসবে। এই খবর পেয়েই অশোকবাবু রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের চিঠি লিখে জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সম্পাদক হিসাবে এই সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিচ্ছেন না। প্রয়োজনে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যেরা তাঁর সঙ্গেই ওই বিষয়ে আলোচনায় বসুন। বিষয়টি পুরোপুরি রাজ্যের। তা ছাড়া, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর পাঁচ জন কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীরও সদস্য। তাই এর মধ্যে সাধারণ সম্পাদককে জড়ানোর প্রয়োজন নেই। ফ ব-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর ১২ জন সদস্যের মধ্যে অশোকবাবু ছাড়া অপরাজিতা গোপ্পী এবং গোবিন্দ রায় বৈঠকে ছিলেন না। সভাপতিত্ব করেন দলের রাজ্য কমিটির চেয়ারম্যান বরুণ মুখোপাধ্যায়। বৈঠকে উপস্থিত সকলকেই অশোকবাবু চিঠি পাঠিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। সকলের হাতে এখনও চিঠি পৌঁছয়নি।
রাজ্য নেতৃত্বকে চিঠি পাঠিয়েই থামেননি ‘মর্মাহত’ অশোকবাবু। চিঠি দিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক হরিপদ বিশ্বাসকেও। ওই জেলায় যে প্রস্তাবিত সদস্যপদ অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে গোলমাল দেখা দিয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হল বলে জেলা সম্পাদককে জানান তিনি। এর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জেলা সম্পাদকমণ্ডলীই নেবে বলেও জানানো হয়েছে। অর্থাৎ রাজ্য নেতৃত্বকে আর এর মধ্যে রাখতে চাননি অশোকবাবু।
দলে ‘জটিলতা’ সৃষ্টি হয়েছে মেনে নিয়েই ফ ব-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, “বৈঠকটা ডেকে রেখেছিলেন অশোকবাবুই। তা আর বাতিল করা হয়নি বলে আমরা বৈঠকে বসেছিলাম। দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পর্যন্ত সমস্যা বেড়েই চলেছে। তাই আমরা চেয়েছিলাম, দেবব্রতবাবুর সঙ্গে বসে তাঁকে বিষয়টি অবহিত করা হবে। যাতে কোনও সমাধানসূত্র বার করা যায়। অশোকবাবুকে অসম্মান করার কোনও উদ্দেশ্য আমাদের ছিল না।” গোটা ঘটনায় ‘বিস্মিত’ অশোকবাবু অবশ্য দলের অন্দরে বলেছেন, জেলায় জেলায় সমস্যা মেটাতে পর্যবেক্ষকদের আর মাথা না-ঘামালেও চলবে। দরকারে তিনিই এই বয়সে জেলার নেতাদের নিয়ে বসবেন, জেলা-সফরেও যাবেন। বর্ধমান জেলাকে সাংগঠনিক ভাবে দু’টি ভাগে ভেঙে অ্যাড-হক কমিটি করা হয়েছিল। অশোকবাবুর নির্দেশে আরও একটি অ্যাড-হক কমিটি করে প্রাক্তন বিধায়ক মেহবুব মণ্ডলকে (যাঁর সঙ্গে বাকিদের গোলমাল বেধেছিল) আহ্বায়ক করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। এ নিয়ে সাম্প্রতিক কালে ওই জেলাতেই অন্তত তিন বার অ্যাড-হক কমিটি ভাঙা হল!
এখন দেখার, রাজ্য সম্পাদকের সঙ্গে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর ‘দূরত্ব’ মেটাতে কে উদ্যোগী হন!



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.