পূর্ব মেদিনীপুর
বরাত নিতে চাড়ই নেই ঠিকাদারদের, রাস্তা তৈরি থমকে
কেন্দ্র টাকা দিয়েছে। রাজ্য টেন্ডার ডেকেছে। তবু রাস্তা তৈরি হচ্ছে না। কারণ, কাজের বরাত নিতে ঠিকাদারদের আগ্রহ নেই। টেন্ডারে তাই সাড়া মিলছে না। জেলা পরিষদও ঠিকাদারদের দরজায় বার বার কড়া নেড়ে সাড়া পাচ্ছে না।
অবস্থা না-বদলালে কেন্দ্রের টাকা ফেরত চলে যাবে। রাস্তা হবে না।
ঘটনাস্থল: পূর্ব মেদিনীপুর। যে জেলার নন্দীগ্রাম রাজ্যের তৃণমূল-কংগ্রেস জোট সরকারের ধাত্রীগৃহ। সিঙ্গুরের পরে মূলত নন্দীগ্রামের জমি-আন্দোলনে সওয়ার হয়েই মহাকরণে পৌঁছেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রধান বিরোধী দলনেত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। আন্দোলন ও আন্দোলন-উত্তর পর্বে নন্দীগ্রাম-সহ পূর্ব মেদিনীপুরের উন্নয়নের জন্য দরাজ প্রতিশ্রুতি এসেছে তাঁর তরফে। বাস্তবায়িতও হয়েছে কিছু। কিন্তু উন্নয়নের অন্যতম মাপকাঠি যে সড়ক, তা থেকে এখনও বঞ্চিত নন্দীগ্রামের জেলা। মমতা-সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তির পরেও।
‘প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা’য় গোটা পূর্ব মেদিনীপুরে ১৯টি নতুন রাস্তা তৈরি হওয়ার কথা। সেগুলো বানাতে প্রায় ৬৬ কোটি ও রক্ষণাবেক্ষণে সাড়ে ৪ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। এ বাবদ কেন্দ্রের দেওয়া অর্থ রাজ্যের কাছে জমা আছে। কাজের বরাত দিতে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট রুরাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি’র তরফে টেন্ডারও ডাকা হয়েছে। কিন্তু কয়েকটি রাস্তার কাজের বরাত চেয়ে আবেদন জমা পড়েনি। মাত্র ছ’টি রাস্তার কাজ চেয়ে টেন্ডার দাখিল করেছে পাঁচটি সংস্থা। এদের দু’টি চেয়েছে তিনটি রাস্তার বরাত। আর বাকি তিনটির জন্য মাত্র একটি করে টেন্ডার পড়েছে। অথচ নিয়ম হল, একটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে ন্যূনতম তিনটি টেন্ডার থাকতেই হবে।
এই পরিস্থিতিতে টেন্ডার দাখিলের সময়সীমা বাড়াতে চেয়ে পূর্ত দফতরকে আর্জি জানিয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। ওই আর্জি মঞ্জুরও হয়েছে। পরিষদের সভাধিপতি গাঁধী হাজরা বলেন, “সময়সীমা ছিল ১৮ মে। তার মধ্যে সব ক’টা রাস্তার কাজের জন্য ঠিকাদারেরা আবেদন করেননি। তাই সময়সীমা বাড়াতে চেয়ে পূর্তমন্ত্রীকে চিঠি দিই। তাতে ২২ জুন পর্যন্ত সময় মিলেছে।” ঠিকাদারদের এই ‘অনাগ্রহের’ কারণ কী?
গাঁধীবাবুর ব্যাখ্যা, “রাস্তা তৈরি ও দেখভাল বাবদ যে টাকা ধরা হয়েছে, অধিকাংশ ঠিকাদার তা ন্যায্য মনে করছেন না। ওঁদের মতে, নির্মাণ-উপকরণের বর্তমান বাজারদর যা দাঁড়িয়েছে, তাতে ওই টাকায় কাজ করা অসম্ভব।” তা হলে বরাদ্দ না-বাড়িয়ে টেন্ডার দাখিলের সময়সীমা বাড়িয়ে কী লাভ? গাঁধীবাবু বলেন, “আপাতত কিছুটা কাজ শুরু হয়ে যাক। পরে টাকা বাড়াতে কেন্দ্রকে আর্জি জানাব।” পূর্ব মেদিনীপুরের ঠিকাদারদের ‘সুযোগ’ দেওয়া হলে তাঁরা এ বার আবেদন করবেন বলেও দাবি করেন তিনি। ওঁরা আগে আবেদন করেননি কেন?
গাঁধীবাবুর বক্তব্য, “ওঁরা টেন্ডারে সামিল হতে চেয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট রুরাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি-র সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু সুযোগ পাননি। সে কথা আমি সরকারকে জানিয়েছি।” এজেন্সির টেন্ডার-নোটিসে অবশ্য কোথাও পূর্ব মেদিনীপুরের ঠিকাদারদের ‘বাদ দেওয়া’র কথা বলা হয়নি। তবু তাঁরা কেন সুযোগ পেলেন না, এবং পরে কী ভাবে নিশ্চিত সুযোগ পাবেন, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা গাঁধীবাবুর কাছে মেলেনি। যদিও শেষ পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুরের ঠিকাদারদের মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদী। “ঊনিশটি রাস্তাই আমাদের দরকার। উন্নয়ন আমাদের চাই। কেন্দ্রের টাকা কিছুতেই ফিরে যেতে দেব না। প্রত্যয়ী ঘোষণা সভাধিপতির।
আশায় রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। আশায় রয়েছে নন্দীগ্রাম।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.