শিল্পমহলের আশায় জল ঢেলে ফের ঊর্ধ্বমুখী মূল্যবৃদ্ধির হার। মে মাসে তা ছুঁয়েছে ৭.৫৫%। এপ্রিলের হার ৭.২৩%। চড়া মূল্যবৃদ্ধি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানোর পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে, এই উৎকণ্ঠার প্রভাব পড়ে শেয়ার বাজারেও। ফলে সেনসেক্স নেমে যায় ২০৩ পয়েন্ট। ডলারে টাকার দামও পড়েছে ১২ পয়সা। ফলে দিনের শেষে প্রতি ডলারের দর দাঁড়ায় ৫৫.৮০ টাকা। নিরাপদ লগ্নির মাধ্যম হিসেবে ও বিয়ের মরসুমে চাহিদার চাপে বেড়েছে সোনাও। মুম্বইয়ে প্রতি ১০ গ্রামে ৩০,৫৫০ টাকা ছুঁয়ে নতুন নজির গড়েছে পাকা সোনা। মূলত শাক-সব্জি ও পেট্রোলের চড়া দামের জেরেই মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে মূল্যবৃদ্ধির সরীসৃপ। যা সুদ কমানোর ব্যাপারে ১৮ জুনের ঋণনীতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে ফের দোলাচলে ফেলতে পারে বলেই আশঙ্কা শিল্পমহলের। সে ক্ষেত্রে শিল্পোৎপাদনকে টেনে তোলার আশাও মরীচিকাই থেকে যাবে কি না, তাদের দুশ্চিন্তা তা নিয়েই। আরবিআই গভর্নর ডি সুব্বারাও এ দিনই বলেন, মূল্যূবৃদ্ধিকে বাগে আনকে হলে আর্থিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ত্যাগ স্বীকার করতেই হবে। মূল্যায়ন সংস্থা মুডিজ ইতিমধ্যেই মন্তব্য করেছে, ভারত এই মুহূর্তে মন্দা সত্ত্বেও মূল্যবৃদ্ধি বা ‘স্ট্যাগফ্লেশন’-এর কবলে। তাই সুদ কমানোর ব্যাপারে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষেও বেশি সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। ফিচ রেটিংস ইন্ডিয়া-র ডিরেক্টর দেবেন্দ্র কুমার পন্থ-ও বলেছেন, শিল্পপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি কিন্তু নভেম্বর থেকে কমছে। অন্য দিকে বাড়ছে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি। ভাল বর্ষার হাত ধরে গোটা অর্থবর্ষের জন্য অবশ্য মূল্যবৃদ্ধি ৬.৫-৭.৫ শতাংশে বেঁধে রাখা যাবে বলে আশাবাদী প্রণব মুখোপাধ্যায়।
|
বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা ২০% বৃদ্ধি। অথচ মে মাসে রফতানি বাড়া দূরের কথা, তা সরাসরি কমলো ৪.১৬%। চিরাচরিত বাজারে, বিশেষত ইউরোপে বিক্রি কমার জেরেই ভারতের রফতানি কমে দাঁড়িয়েছে ২৫৬৮ কোটি ডলার। তবে বিশ্ব বাজারে চাহিদা কমা ছাড়াও দেশে শিল্পোৎপাদন আশানুরূপ না-বাড়াও এর অন্যতম কারণ বলে জানান বাণিজ্য সচিব এস আর রাও। তিনি বলেন, “এই পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রক সমাধানসূত্র বার করতে নতুন কৌশল স্থির করছে।” মূলত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া-সহ বিভিন্ন নতুন বাজার ধরার ক্ষেত্রেই ভারত জোর দেবে বলে সরকারি সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত, এপ্রিলে রফতানি বেড়েছিল ৩.২%। পাশাপাশি, আমদানিও কমেছে ৭.৩৬% হারে। ফলে তা নেমে এসেছে ৪,১৯০ কোটি ডলারে। এটাও দুর্বল অর্থনীতির একটি লক্ষণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে কারখানায় ব্যবহারের জন্য যন্ত্রপাতি আমদানি। যা শিল্পে লগ্নি কমারই প্রতিফলন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। বাণিজ্য ঘাটতি অবশ্য গত বছরের ১,৮৫০ কোটি ডলার থেকে কমে হয়েছে ১,৬৩০ কোটি।
|
পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে প্রস্তাবিত ১,০০০ মেগাওয়াটের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের চূড়ান্ত নকশা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া দেওয়া হল কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ওয়াপকস-কে। চুক্তি অনুসারে, দু’বছরের মধ্যে ওয়াপকস পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প রিপোর্ট রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কাছে জমা দেবে। অযোধ্যা পাহাড়ের কোলে বণ্টন সংস্থার এখন ৯০০ মেগাওয়াটের একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে। ভবিষ্যতে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে ধরে নিয়েই পুরনোটির থেকে কিছু দূরে নতুন একটি প্রকল্প গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। খরচ ৩,৫০০ কোটি টাকা। এক বিদ্যুৎ কর্তা জানান, ওয়াপকস নকশা জমা দিলে নির্মাণ কাজ শুরু করতে আন্তর্জাতিক বাজারে দরপত্র চাওয়া হবে। ২০১৯-’২০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে।
|
জনমুখী রাজনীতির চাপে ফের পিছু হটল আর্থিক সংস্কার। বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি কমানোর লক্ষ্যে ইউরিয়ার দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পাশ হল না কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়। কৃষকের উপর মূল্যবৃদ্ধির চাপ আর না বাড়ানোর যুক্তিতে কৃষিমন্ত্রী শরদ পওয়ারের প্রতিরোধে মন্ত্রিসভার অর্থনীতি বিষয়ক কমিটি ইউরিয়ার দাম টনে ১০% বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দিল। বর্তমান দাম টনে ৫,৩১০ টাকা। গত বছরের ভর্তুকি ২৪,৫০০ কোটি। এখন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গড়া কমিটি বিষয়টি নতুন করে খতিয়ে দেখবে। ইউরিয়া সারের দামেই এখনও পুরোপুরি সরকারি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
|
সফটওয়্যার শিল্পের দাবি মেনে এই শিল্পে একাধিক স্তরে উৎসে কর কাটার ব্যবস্থা রদ করতে চলেছে কেন্দ্র। বর্তমানে সফটওয়্যার বণ্টন ব্যবস্থার প্রতি স্তরে (সরবরাহকারী, খুচরো বিক্রেতা, ক্রেতা ইত্যাদি) আলাদা ভাবে ১০% করে কর দিতে হয়। ১ জুলাই থেকে নতুন ব্যবস্থা চালু হবে বলে কেন্দ্রীয় প্রত্যক্ষ কর পর্ষদ জানিয়েছে। |