
|
প্রাচীন যজ্ঞ |
কোচবিহার শহরের উত্তর প্রান্তে খাগড়াবাড়িতে সমাপ্ত হল পাঁচ দিন ব্যাপী ৬৫-তম শিবযজ্ঞ অনুষ্ঠান। কল্যাণ ও বিশ্বশান্তির বার্তা পৌঁছে দিতে এই শিবযজ্ঞের সূচনা হয়েছিল ১৯৪৮-এর ১৫ জুলাই। কোচবিহারের শেষ মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতায় এবং স্বর্গীয় রাজপণ্ডিত রামশঙ্কর কাব্যব্যাকরণ স্মৃতিতীর্থ মহাশয়ের পরামর্শে যজ্ঞের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে শিবযজ্ঞ অনুষ্ঠানের প্রচলন হয়। প্রথম বার আষাঢ় মাসে তিন দিন ব্যাপী যজ্ঞে এক লক্ষ আটটি আহুতি দান করা হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে যজ্ঞ জনপ্রিয় হওয়ায় ১৯৫১-থেকে আবার নতুন করে পাঁচ দিন ব্যাপী যজ্ঞ শুরু হয়। |
 |
ছবি: নির্মলেন্দু চক্রবর্তী |
সে বছর যজ্ঞ শুরু হয়েছিল অক্ষয়তৃতীয়ার শুভ দিনে। সেই থেকে এই বিশেষ দিনটিতে প্রতি বছর যজ্ঞানুষ্ঠান হয়ে আসছে। ত্র্যম্বক মহাদেবের মৃত্যুঞ্জয় মহামন্ত্রে ২০ জন যাজ্ঞিক ব্রাহ্মণ দ্বারা বিশাল অগ্নিকুণ্ডের চার পাশে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত যজ্ঞের মন্ত্র উচ্চারিত হয়। সঙ্গে বিভিন্ন দেবদেবীর পুজো করা হয়। এক লক্ষ আটটি আহুতি দান করা হয়। দূর দূরান্ত থেকে সাধারণ মানুষ এবং সাধুরা এতে যোগদান করেন। কোচবিহার রাজপরিবার থেকে মহারানি ইন্দিরা দেবী, রাজমাতা গায়ত্রী দেবী নিয়মিত এই যজ্ঞানুষ্ঠানে যোগ দিতেন। ঐতিহ্য বজায় রেখে খাগড়াবাড়িতে আজও চলে আসছে শিবযজ্ঞ।
|
সমাধিক্ষেত্র |
 |
ছবি: অনিতা দত্ত |
জলপাইগুড়ি শহরের রাঙামাটি চা বাগানের চাইবাসা ডিভিশনে রয়েছে শতাব্দীপ্রাচীন একটি সমাধিক্ষেত্র। প্রায় আশিটি সমাধি রয়েছে এখানে। সমাধিগুলির কোনও কোনওটির বয়স একশো বছরেরও বেশি। প্রাচীর বেষ্টিত সমাধিক্ষেত্রটির প্রবেশ পথেই যে সমাধিটি রয়েছে, তার স্মৃতিফলকে উৎকীর্ণ সময়কাল ১৮৯৬। সমাধির ওপরে নির্মিত হয়েছে তোরণ। রয়েছে ১৯২০-তে সামসিং চা বাগানের অ্যাসিস্ট্যান্ট যোশেফ ল’ ওয়লিকার সমাধি। পাথরঘোরা চা-বাগানের অন্যতম অংশীদার হারবার্ট ড্যাঙ্গারফিল্ড ১৯০৬-এ সমাধিস্থ হয়েছেন এইখানে। জর্জ রাইটের পঞ্চম পুত্র জর্জ মার্জে রাইটের সমাধিসৌধটি ১৯০৫-এ তৈরি। ১৯১৮-য় তৈরি ডব্লিউ ডি কুল-এর স্ত্রী মারিয়ান ইডার সমাধির ওপর শ্বেতপাথরের পরিটি শৈল্পিক দক্ষতায় মৌনমুখর। হেনরি যোসেফ ও মেরি রাসকম্ব পুল-এর পুত্র যোসেফ শায়িত হয়েছিলেন ১৯১৯-এ। সৌধগুলির গঠনশৈলী, মার্বেল ফলকের গায়ে লতাপাতার সূক্ষ্ম কাজ কোনও কোনওটির নকশায় রঙের ব্যবহার (যা আজও অমলিন) দেখে চমৎকৃত হতে হয়।
|
কইন্যা |
 |
নাটক মানুষের কথা বলে। নাটক জীবনের কথা বলে। নাটক সমাজের কথা বলে। সেই নাটককেই হাতিয়ার করে আলিপুরদুয়ারের ‘সংঘশ্রী যুবনাট্য সংস্থা’ শহরের বেশ কিছু জনবহুল এলাকায় উপস্থাপিত করে চলেছে ‘কইন্যা’ পথনাটিকা। একবিংশ শতাব্দীতে বাবার অত্যাচারে তিন মাসের শিশুকন্যা আফরিনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। দেশ জুড়ে ঘটে চলেছে মেয়েদের ওপর অত্যাচার। বেড়ে যাচ্ছে নাবালিকার বিবাহের সংখ্যা। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে ‘কন্যা বাঁচাও’ শ্লোগানকে সামনে রেখে লেখা ‘কইন্যা’ পথনাটকটি। নাটকটিতে গফুর মিঞার একমাত্র নাবালিকা মেয়ে শাবানার জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পর নাবালিকা মেয়েটি কন্যা সন্তান প্রসব করে। শুরু হয় অত্যাচার। দ্বিতীয়বার আবার সে সন্তানসম্ভবা হয়। শাবানা ভয়ে মরে, আবার মেয়ে জন্মালে রক্ষে নেই। দিশেহারা হয়ে পড়ে সে। তবে এই সমাজে সবই খারাপ নয়, এগিয়ে আসেন সমাজ-সংস্কারক অলক। কন্যা সন্তান নিছক অবহেলার সামগ্রী নয়, সেই বিষয়ে সমাজকে সচেতন করতেই আলিপুরদুয়ারের মাঠে-ময়দানে ও পথেঘাটে দেখানো হচ্ছে নাটকটি।
|
পাগমার্ক |
উত্তরবঙ্গে রাজার শহর কোচবিহারে জন্ম নিয়েছে ‘পাগমার্ক’। ‘নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার স্টাডি গ্রুপ’-এর প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে এই ঘরোয়া পত্রিকাটি। অবচেতন সমাজে চেতনার উদ্রেক ঘটাতেই এর সৃষ্টি। সামাজিক পরিস্থিতি এবং পরিবেশও বন্যসম্পদকে নিয়ে এর বিচরণ। পরিবেশ সম্বন্ধে সাধারণ মানুষকে সচেতন করাই এর এক মাত্র লক্ষ্য।
|
বৃক্ষপ্রেমী |
 |
ছবি: তীর্থঙ্কর মণ্ডল। |
একবিংশ শতাব্দীর যান্ত্রিক সভ্যতার যুগে সারা বিশ্ব বৃক্ষচ্ছেদনে মাতোয়ারা। সেখানে নিজের উদ্যোগে বৃক্ষ রোপণ করে চলেছেন দিনহাটার উমাশঙ্কর সরকার। বেকারত্বের জ্বালাকে উপেক্ষা করে পরিবেশকে রক্ষা করতে গাছ লাগাতে উদ্যোগী হন উমাশঙ্করবাবু। এখনও পর্যন্ত নানা স্থানে এক হাজারেরও বেশি গাছ লাগিয়েছেন। নানা প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে তিনি এই কাজ করে চলেছেন। সমাজকে সচেতন করে একটা সবুজ পৃথিবী গড়ার আশায় তাঁর লড়াই আজও অব্যাহত।
|
ছবি ও লেখা দিলে নাম-ঠিকানা উল্লেখ করবেন।
উত্তরের কড়চা
এবিপি প্রাঃ লিমিটেড ১৩৬/৮৯ চার্চ রোড
শিলিগুড়ি ৭৩৪৪০১ |
|
|