দাসপুরে ভোট ৭৪ শতাংশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দাসপুর |
প্রবল গরমের মধ্যেও দাসপুরের উপ-নির্বাচনে ভোট পড়ল ৭৪ শতাংশ। গত বছরে এই হার অবশ্য ছিল ৮২.২ শতাংশ। কিন্তু উপ-নির্বাচনে ভোটদানের হার সাধারণ নির্বাচনের তুলনায় কম হয়সেটাই বরাবর দেখা গিয়েছে। সে দিক থেকে দাসপুরে ভোটদানের হার ভাল বলেই মনে করছেন প্রশাসনিক আধিকারিক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতারা। তার উপর এই সময়ে তাপপ্রবাহ চলছে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের এই জেলায়। সে দিক থেকেও ভোটদানের হার ভাল বলেই মনে করা হচ্ছে। ঘাটালের মহকুমাশাসক অংশুমান অধিকারী ভোট-শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “ভোট নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কোথাও কোনও গোলমাল হয়নি। কোনও তরফে কোনও লিখিত অভিযোগও জমা পড়েনি। মৌখিক ভাবে কোথাও অভিযোগ উঠলেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গ্রেফতারের কোনও ঘটনা নেই।” |
|
দাসপুরে ভোটের লাইন। |
মোটের উপর শান্তিতেই দাসপুরের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হওয়ায় খুশি বিরোধী সিপিএম-নেতৃত্বও। দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন ,“মানুষ ভোট দিয়েছেন। তাঁরা যা রায় দেবেন, তাই-ই মেনে নিতে হবে। ৪টি বুথে সন্ত্রাস হয়েছে। সেখানে মানুষকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। আরও কয়েকটি জায়গায় বাধা এসেছে। তবে মানুষ সতর্ক ছিলেন।” জয়ের ব্যাপারে আশার কথাই শুনিয়ে দাসপুরের সিপিএম প্রার্থী সমর মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাড়ভরতপুর-সহ কয়েকটি জায়গায় সন্ত্রাস হয়েছে। ৪টি বুথে প্রত্যক্ষ এবং আরও ৯টি বুথে পরোক্ষ সন্ত্রাস হয়েছে। তবে জনগণের উপর আমাদের আস্থা রয়েছে। আমি জিতবই। কারণ, মানুষ তৃণমূল দলটাকে চিনে ফেলেছেন।” |
|
ভোট দিচ্ছেন সিপিএম প্রার্থী সমর মুখোপাধ্যায়। |
সিপিএমের দাসপুর জোনাল সম্পাদক সুনীল অধিকারীর বক্তব্য, “তৃণমূল তার স্বভাবমতো কয়েক জায়গায় সন্ত্রাস করেছে। বৈদ্যপুরে পোলিং এজেন্টকে ‘অপহরণ’ও করেছিল। পরে অবশ্য ছাড়া হয়। বাড়ভরতপুরেও ৩০০ জনকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। তবে আমাদের কর্মী-সমর্থকেরা কোমরের জোরেই লড়াই করেছেন।”
বিরোধী সিপিএমের তরফে এই ‘মোটের উপর শান্তিতেই ভোট শেষ হওয়া’র স্বীকারোক্তি তাঁদের আমলের প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং কৃতিত্বই তুলে ধরছে দাবি করে ‘শাসক’ তৃণমূলের নেতাদেরও বক্তব্য, “জিতব আমরাই। গত বারের প্রায় ২৫ হাজারের মার্জিন ধরে রাখা নিয়েই যা কিঞ্চিৎ সংশয়।” |
|
বুথে-বুথে ঘুরলেন তৃণমূল প্রার্থী মমতা ভুঁইয়া। |
তৃণমূল প্রার্থী মমতা ভুঁইয়া বলেন, “জেতার ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। মার্জিন বাড়বে কি না, সেটাই এখন দেখার।” সিপিএম প্রার্থী সমরবাবু এবং তৃণমূল প্রার্থী মমতাদেবীদু’জনেই এ দিন দাসপুরের দু’টি ব্লকের বিভিন্ন বুথ-এলাকায় ঘোরেন। দাসপুরেরই ভোটার সমরবাবু একটি বুথে ভোটও দেন। মমতাদেবী অবশ্য দাসপুরের ভোটার নন। বুথে-বুথে ঘুরলেও তাই তাঁর ভোটদানের সুযোগ ছিল না। আগামী শুক্রবার গণনা ও ফলপ্রকাশের দিকেই এখন তাকিয়ে যুযুধান রাজনৈতিক শিবির।
|
ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
|