১ কোটি ডলার খুইয়ে ভেঙে পড়েন রজত গুপ্ত, দাবি কন্যার
বেআইনি ভাবে গোপন তথ্য ফাঁস করে নিজের আখের গোছানো দূর অস্ৎ। বরং রাজারত্নমের সঙ্গে যৌথ ভাবে লগ্নি করে ১ কোটি ডলারের বেশি লোকসান হওয়ায় মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন রজত গুপ্ত। বাবার হয়ে সাক্ষ্য-প্রমাণ দিতে এসে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে এই কথাই আদালতকে জানালেন ম্যাকিনসের এই প্রাক্তন কর্ণধারের বড় মেয়ে, ৩৩ বছরের গীতাঞ্জলি। তবে সব কিছু ছাপিয়ে আমেরিকার ম্যানহাটান ফেডারেল আদলতকে এ দিন ছুঁয়ে গেল বাবা-মেয়ের সম্পর্কের গভীর আবেগ। যেখানে অভিযুক্ত বাবাকে বাঁচাতে মরিয়া ছিল মেয়ে।
“বাবাকে ভালবাস?” বা “ওঁকে সাহায্য করার জন্য কি সব কিছু করতে পার?” সরকারি কৌঁসুলির এই প্রশ্নের খোঁচায় বাবাকে অসম্ভব ভালবাসার কথাই এ দিন জানান গীতাঞ্জলি। পাশাপাশি তাঁর জবাব, “আদালতে দাঁড়িয়ে মিথ্যে কথা বলা ছাড়া, বাবাকে সাহায্য করার জন্য সমস্ত কিছু করতে পারি আমি।” সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, মেয়েকে আদালতে ঢুকতে দেখার পর আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন ৬৩ বছরের রজতবাবুও।
ম্যানহাটান ফেডারেল আদালতে গত চার সপ্তাহ ধরেই চলছে বিশ্ব জুড়ে সাড়া ফেলে দেওয়া এই মামলার শুনানি। রজত গুপ্তর বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে গোপন তথ্য জানানোর অভিযোগের বিচারে সরকারি পক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ পর্ব শেষ হয়েছে সদ্য। এখন চলছে বাদী পক্ষের কথা শোনার পালা। সব জল্পনা উড়িয়ে দু’দিন আগেই রজতবাবু জানিয়েছেন নিজেকে বেকসুর প্রমাণের জন্য তিনি আর আত্মপক্ষ সমর্থন করবেন না। এর পরই একে একে সাক্ষীর কাঠগড়ায় হাজির হন তাঁর শুভানুধ্যায়ী বন্ধুরা। যাঁরা প্রত্যাশিত ভাবেই আদালতের সামনে তুলে ধরেন বন্ধুর সততা ও চারিত্রিক ঋজুতাকে। এ বার শুনানির প্রায় শেষের দিকে কাঠগড়ায় উঠেছেন হার্ভার্ডে আইন ও ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া গীতাঞ্জলি।
অন্যান্য দিনের মতো এ দিনও আদালতে হাজির ছিলেন রজতবাবুর স্ত্রী ও অন্য তিন মেয়ে। জুরিদের সামনে গীতাঞ্জলি বলেন, “হেজ ফান্ড গ্যালিয়নের প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার শ্রীলঙ্কার রাজ রাজারত্নমের সঙ্গে যৌথ ভাবে লগ্নি করতে গিয়ে বাবাকে প্রায় ১ কোটি ডলার লোকসান গুনতে হয়েছিল। এর ফলে তিনি হতাশ হয়ে পড়েন। প্রবল মানসিক চাপে ভুগতে থাকেন।” তাঁর বাবা শান্ত স্বভাবের হলেও এই আর্থিক ক্ষতি নিয়ে আলোচনা করতে গেলেই অস্থির হয়ে পড়তেন বলেও জানান তিনি। রজতবাবুর আইনজীবী এই পরিপ্রেক্ষিতে বাবা-মেয়ের মধ্যে চালাচালি হওয়া ই-মেল বার্তাও তুলে ধরেন জুরিদের সামনে।
নিউ ইয়র্কের হেজ ফান্ড গ্যালিয়ন-কে বেআইনি ভাবে গোপন তথ্য জানানোর অভিযোগেই রজতবাবুকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে মার্কিন আদালত। ভারত ও আমেরিকার কর্পোরেট জগৎ তো বটেই। এই মামলায় নজর সারা দুনিয়ারই। রজতবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর কাছে পাওয়া গোপন তথ্য কাজে লাগিয়েই শেয়ার কেনা-বেচার মাধ্যমে বিপুল মুনাফা করেছে গ্যালিয়ন। অভিযোগ উঠেছে, ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক গোল্ডম্যান স্যাক্সের পরিচালন পর্ষদে থাকাকালীন ওই সংস্থায় ওয়ারেন বাফের বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের ৫০০ কোটি ডলার লগ্নির সিদ্ধান্ত গ্যালিয়ন কর্তা রাজারত্নমকে আগাম জানিয়েছিলেন তিনি। আর এক বার জানিয়েছিলেন ব্যাঙ্কের ত্রৈমাসিক ফলাফলও। প্রোক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বলের পরিচালন পর্ষদে থাকাকালীনও তিনি একই ‘অপরাধ’ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এই বেআইনি লেনদেনে অভিযুক্ত সকলের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হয়েছে প্রায় এক বছর আগেই। যার জেরে গত অক্টোবরে ১১ বছরের জেল হয়েছে রাজারত্নমের। মামলায় প্রায় প্রতিদিনই উঠে এসেছে রজত গুপ্তের নাম। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ২৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে তাঁরও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.