টিএমসিপি-র মারপিট কলেজ ছাপিয়ে বাইরেও
বিবেকানন্দ কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ গড়াল মঙ্গলবারেও। গণ্ডগোল ছড়িয়ে পড়ল কলেজের বাইরেও। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামতে হল পুলিশ এবং র্যাফকে। ছাত্র-সহ জনা পাঁচেক জখম হয়েছেন। তবে রাত পর্যন্ত পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ফর্ম দেওয়াও বন্ধ হয়নি।
আজ, বুধবার কলেজে পার্ট-২ পাস পাঠ্যক্রমের পরীক্ষা রয়েছে। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম রায় জানান, পরীক্ষার পাশাপাশি ফর্ম বিলিও চলবে। তিনি বলেন, “জেলাশাসককে গোটা পরিস্থিতির কথা জানানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ চেয়েছি।” তৃণমূলের বর্ধমান জেলা পর্যবেক্ষক অলোক দাস বলেন, “বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। দু’পক্ষকে আলোচনায় বসতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ওঁরা তা করেননি। টিএমসিপি-র রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বকে হস্তক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।”
বিবেকানন্দ কলেজের সামনে পুলিশ। ছবি: উদিত সিংহ।
বর্ধমান শহরের ওই কলেজে ভর্তির ফর্ম তোলা নিয়ে টিএমসিপি-র গোষ্ঠী সংঘর্ষে সোমবারই পাঁচ জন জখম হয়েছিলেন। রবিবার ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক গোপাল দফাদার লাইন না মেনে ফর্ম তোলার চেষ্টা করা থেকেই এই গণ্ডগোলের সূত্রপাত বলে অভিযোগ। সংগঠনের আর এক নেতা সুমন চক্রবর্তী প্রতিবাদ করেন। সোমবার গোপাল ফের লাইন না মেনে ফর্ম তোলার চেষ্টা করেন অভিযোগ। এই নিয়ে দু’পক্ষে মারপিট হয়। তিন জনকে হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে ভর্তি করাতে হয়েছে।
সুমনের অভিযোগ, এর পর থেকে তিনি কলেজে ঢুকতে পারছিলেন না। এ দিন দুপুরে তাঁর এক অনুগামী কলেজে ঢুকলে ছাত্র সংসদ অফিসে তাঁকে আটকে রাখা হয়। কান ধরে ওঠবোসও করানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুর ২টো নাগাদ জনা পঞ্চাশ অনুগামী নিয়ে সুমন কলেজে ঢুকে পড়েন। ছাত্র সংসদের দিকে যাওয়ার সময়ে তাঁদের তাড়া করেন গোপালের লোকজন। তাড়া খেয়ে সুমনের অনুগামীরা আশপাশের কয়েকটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। ধাওয়া করে গোপালের লোকজনও সেখানে ঢোকেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, গোপালের গোষ্ঠীর ছেলেদের হাতে এক মহিলা-সহ দু’জন মার খান। কালাচাঁদ দে নামের এক জনের মাথা ফাটে।
এর পরেই এলাকার বেশ কিছু লোক রে-রে করে কলেজে ঢুকে পড়েন। গোপালের অভিযোগ, তাঁদের হাতে তিন ছাত্র মার খান। ছাত্রদের উচ্ছৃঙ্খলার বিহিত চেয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে স্মারকলিপিও দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকার বিল্বমঙ্গল দে, সান্ত্বনা দত্তদের অভিযোগ, “কলেজের গোলামালের চোটে আমরা তিষ্ঠোতে পারছি না। এ দিন বাড়িতে ঢুকে নিরীহ মানুষদের মারধর করা হয়েছে।” তাঁরা অবশ্য পুলিশে অভিযোগ জানাননি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবার বলেন, “কলেজের বাইরে কী হয়েছে, তার দায়িত্ব আমি নিতে পারব না।”
এ দিন গণ্ডগোলের সময়ে পুলিশ এবং র্যাফ নেমেই অবস্থা সামাল দেয়। তারাই গোপালের লোকজন এবং ফর্ম তুলতে এসে আটকে পড়া ছাত্রছাত্রীদের কলেজ থেকে বের করে আনে। গোপালের অনুগামীদের বাসে তুলে দেয়। পুলিশের মতে, কলেজ কর্তৃপক্ষ গোলমালে জড়িতদের নামে অভিযোগ দায়ের করতে না চাওয়ায় পরিস্থিতি ঘোরালো হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পাল্টা বলেন, “ছাত্রদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ দায়ের করা সম্ভব নয়। তবে পুলিশের যতটা শক্ত হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার কথা, তারা তা করছে না। তাতেই সমস্যা বাড়ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.