উন্নয়নের টাকা খরচে অনিয়মের অভিযোগ
রিকাঠামো উন্নয়নে ৩ বার বরাদ্দ টাকা ব্যয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠল পুণ্ডিবাড়ি রামগোপাল লাখোটিয়া হাই স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনা নিয়ে সর্বশিক্ষা মিশনের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার দফতরের জেলা আধিকারিককে প্রাথমিক রিপোর্ট দিয়েছেন। রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কোচবিহার জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের এডিপিও কস্তুরী চক্রবর্তীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মিশন। সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা আধিকারিক আমিনুল আহসান বলেন, “রামগোপাল লাখোটিয়া হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ একাধিক প্রকল্পে বরাদ্দ টাকা বিধি মেনে খরচ করেননি বলে প্রাথমিক রিপোর্ট পেয়েছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ৭ সদস্যের কমিটি গড়া হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সর্বশিক্ষা মিশন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৭-২০০৮ আর্থিক বছরে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষকে তিনটি ক্লাস ঘর তৈরির জন্য ১ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা করে মোট ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। অভিযোগ, ওই টাকায় মাত্র দুইটি ক্লাস ঘর তৈরি করা হয়েছে। দফতরের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার ঘটনাটি খতিয়ে দেখে জেলা আধিকারিকের কাছে একটি রিপোর্ট দেন। ওই রিপোর্টে ক্লাস ঘর নির্মাণে আরও দুইটি অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তার মধ্যে একটি ‘ক্লাস্টার রিসোর্স সেন্টার’ অন্যটি নতুন ক্লাস ঘর তৈরি কাজে অনিয়ম। বলা হয়েছে, ২০০৭-২০০৮ আর্থিক বছরে স্কুলের ক্লাস্টার রিসোর্স সেন্টার নির্মাণের জন্য বরাদ্দ হয় প্রায় ২ লক্ষ টাকা। ২০০৯-২০১০ আর্থিক বছরে আরও একটি নতুন ক্লাস ঘর তৈরির জন্য বরাদ্দ হয় ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। অভিযোগ, বরাদ্দ টাকা খরচ হলেও প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। খরচের বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ সর্বশিক্ষা মিশন দফতরে ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ জমা দিতে পারছেন না। এখানেই শেষ নয়। ২০০৯-২০১০ সালে স্কুল সংস্কার খাতে সর্বশিক্ষা মিশন দফতরের দেওয়া ২৮৯৯৪ টাকা খরচ নিয়েও রিপোর্টে প্রশ্ন তুলেছেন জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার। সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা আধিকারিক বলেন, “জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে এডিপিও-র নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গড়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কমিটিকে দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’’ দফতরের কয়েকজন আধিকারিক জানান, পরিকল্পনা মতো নিয়ম মেনে বরাদ্দ টাকা খরচ করা হলে কোনও কাজ অসম্পূর্ণ থাকত না। ওই ঘটনায় অস্বস্তিতে পুণ্ডিবাড়ি রামগোপাল লাখোটিয়া হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শরণকুমার দে বলেন, “ফেব্রুয়ারি মাসে স্থায়ী প্রধানশিক্ষক অবসর নেন। এর পরে আমি দায়িত্ব নিয়েছি। ফলে যার সময় ওই টাকা বরাদ্দ হয়েছে তিনি বিষয়টি ভাল বলতে পারবেন।” অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হেমন্ত বর্মা বলেন, “স্কুল পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত মেনে কাজ হয়েছে। আমি একা কোনও কাজ করিনি। কাজের সিদ্ধান্ত নিইনি। তবে এটুকু বলতে পারি বরাদ্দের টাকা নয়ছয় হয়নি।” নিয়ম মেনে বরাদ্দ টাকা খরচ করা হলে এত দিনেও নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি কেন! প্রশ্নের উত্তরে হেমন্তবাবু বলেন, “একটি ক্লাস ঘর তৈরির জন্য ১ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা করে পেয়েছিলাম। তিনটি ক্লাস ঘর করার কথা ছিল। নিচু জমিতে মাটি ভরাট করে কাজ করতে হয়েছে। তাই কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি।’’ প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ার অভিযোগের বিষয়ে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের দাবি, জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় ওই কাজ সম্পূর্ণ করতে সমস্যা হয়েছে। মেরামত খাতের বরাদ্দ দিয়ে বেঞ্চ মেরামতের কাজ করা হয়েছে।” একই দাবি করে স্কুল পরিচালন সমিতির তৎকালীন সম্পাদক রবিরঞ্জন ভাদুড়ি বলেন, “সর্বশিক্ষা মিশনের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে আলোচনা করে সব কাজ হয়েছে। তিনটি ঘর করার প্রকল্পে ধরা সামগ্রীর দামের তুলনায় বাজার দর বেশি থাকায় সমস্যা হয়েছিল।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.