পুজোর আগে পুরকর বাড়ছে কোচবিহারে। পুরসভার ১৮০০০-এর বেশি বাসিন্দার ‘হোল্ডিং’ নম্বরেই ওই নতুন কর ধার্য হয়েছে। রাজ্য ভ্যালুয়েশন বোর্ড সমীক্ষা করে নয়া কর হার কোচবিহার পুরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। তার ভিত্তিতেই বাসিন্দারের মত যাচাইয়ে পুর কর্তৃপক্ষ শুনানির চিঠি পাঠানোর কাজে নেমেছেন। শুনানিতে বাসিন্দারা বর্ধিত করের হার নিয়ে আপত্তি জানাতে পারবেন। তার পরে কর্তৃপক্ষ বর্ধিত করের পরিমাণ চূড়ান্ত করবেন। পুর চেয়ারম্যান কংগ্রেসের বীরেন কুণ্ডু বলেন, “বাম আমলে ভ্যালুয়েশন বোর্ড নয়া পুর কর ধার্য করার ব্যাপারে সমীক্ষা চালায়। সমীক্ষার ভিত্তিতে বাসিন্দাদের নয়া করের হার ধার্য করা হয়েছে। বাসিন্দাদের ওপর যাতে চাপ না পড়ে সে জন্য তাঁদের মত নিয়েই পুজোর আগে বর্ধিত করের হার চূড়ান্ত হবে।” রাজ্য ভ্যালুয়েশন বোর্ডের কর্মীরা ২০০৯-১০ সালে কোচবিহার পুর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে বাড়িঘরের অবস্থা নিয়ে সমীক্ষা করেন। সমীক্ষা রিপোর্ট কলকাতায় বোর্ডের সদর দফতরে পাঠানো হয়। তা দেখেই নতুন পুর করের হার ঠিক করে তা কার্যকর করার জন্য পুরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকা পাঠানো হয়েছে। তবে বাসিন্দাদের মত না নিয়ে পুরসভা কর্তৃপক্ষ করের হার চূড়ান্ত করতে চাইছেন না। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তৃণমূলের আমিনা আহমেদ জানান, “কারও ওপরে বর্ধিত করের বোঝা চাপুক সেটা আমরা চাই না। ভ্যালুয়েশন বোর্ডের তালিকা নিয়ে সকলের মত শোনা হবে। প্রায় ৩ হাজার বাসিন্দাকে শুনানির জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডে ‘হোল্ডিং’ রয়েছে ১৮১৭৪টি। ২০০৫-০৬ আর্থিক বছরে শেষ বার বাসিন্দাদের পুর কর বাড়ানো হয়। কয়েক বছরের ব্যবধানে ওই সব হোল্ডিংয়ের বাড়িঘরের ছবি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। এক হাজারের বেশি একতলা ছাদের বাড়ি দোতলা হয়েছে। তৈরি হয়েছে বেশ কিছু বহুতলও। পুরসভার এক কর্তা বলেন, “ফি বছর গড়ে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা করের ডিমান্ড থাকলেও বড় জোর ৩০ লক্ষ টাকা আদায় করা যায়। বিদ্যুৎ, নিকাশি, সাফাইয়ের মতো পরিষেবা খাতে খরচ বেড়ে যাওয়ায় করের হার বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। ভ্যালুয়েশন বোর্ডের নতুন নির্দেশিকা কার্যকর করা গেলে কর আদায়ের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ১ কোটি টাকা।’’ পুরকর্তাদের ওই যুক্তি মানছেন না বিরোধী নেতারা। সিপিএমের মহানন্দ সাহা বলেন, “ভ্যালুয়েশন বোর্ড নিয়মমাফিক সমীক্ষা করে পুর কর বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। তা কতটা কার্যকর হবে নির্ভর করে পুরবোর্ডের ওপর। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে করের হার বাড়ানোর পক্ষে আমরা নই। তা হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। কোনও ভাবেই পক্ষপাতিত্ব যাতে না-হয় তাও নিশ্চিত করতে হবে। |