বড় বড় অক্ষরে লাল রং দিয়ে লেখা রয়েছে ব্লাড ব্যাঙ্ক। অথচ কাঁচের দরজা ঠেলে ঢুকতেই দেখা মেলে একগাদা ফাইল নিয়ে বসে রয়েছেন কয়েকজন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী। তাঁরা জানান, এটা ব্লাড ব্যাঙ্ক নয়, হাসপাতালের অফিস ঘর। ডোমকল মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের ছবিটা এমনই।
মহকুমা হাসপাতালটির বয়স সাত বছর। অথচ মর্গ বা ব্লাড ব্যাঙ্কের মতো জরুরি পরিষেবা নেই এখনও। ফলে একটু জটিল সমস্যা নিয়ে কোনও রোগী এলেই রেফার করতে হয় ৩৫ কিমি দূরের জেলা সদর বহরমপুরে।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, ভোটের জন্যই কোনও পরিকাঠামো ছাড়াই উদ্বোধন করে দেওয়া হয়েছিল ওই ব্লাড ব্যাঙ্ক। অথচ নেই মেডিক্যাল অফিসার, টেকনিসিয়ান। এমন কী লাইসেন্সও নেই ব্লাড ব্যঙ্কের। কেবল বাড়িটি তৈরি করে বিধানসভা নির্বাচনের আগে উদ্বোধন করে দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা জানান, পরে সরকার পরিবর্তনে থমকে গিয়েছে ব্লাড ব্যাঙ্ক চালু করার পুরো প্রক্রিয়াটাই। বারবার বিষয়টি নিয়ে আবেদন করেও কোনও লাভই হয়নি। এমন কী রোগীরা কখনই রক্ত পান না এখান থেকে। অন্য দিকে ব্লাড ব্যাঙ্কের বাড়ি তৈরি হতেই স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতালের ব্লাড স্টোরেজ ইউনিটটিও বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে রক্তের প্রয়োজন হলেই রোগীদের রেফার করা ছাড়া আর কোনও উপায়ও নেই। হাসপাতালের সুপার অরিন্দম পাল বলেন, “বড় অপারেশন তো দূরের কথা, রক্তাল্পতা বা গাইনোলজিক্যাল কোনও সমস্যা নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদেরও সঙ্গে সঙ্গেই রেফার করতে হয় আমাদের। অপারেশনের পরিকাঠামো থাকলেও রক্তের কোনও বন্দোবস্ত না থাকায় রোগীরা কোনও সুবিধাই পাচ্ছে না।” ডোমকলের গ্রামীণ চিকিৎসক সমিতির সম্পাদক আসরাফুল ইসলাম বলেন, “স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে মানুষকে ভাঁওতা দেওয়া হচ্ছে। পরিকাঠামো না থাকলে ঘটা করে উদ্বোধনের কী প্রয়োজন ছিল! মহকুমা হাসপাতালে একটাও রক্তের ইউনিট বা মেডিক্যাল অফিসার নেই, এটা ভাবাই যায় না।” সাফাইয়ে ডোমকলের এসিএমওএইচ সচিন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “ওই ব্লাড ব্যাঙ্কের জন্য স্বাস্থ্যভবন থেকে লাইসেন্স এখনও মেলেনি। অন্যদিকে ব্যাঙ্ক হবে ভেবে ব্লাড স্টোরেজ ইউনিটের পুনর্নবীকরন করানো হয়নি। ফলে রক্ত নিয়ে একটা জটিলতা তৈরি হয়েছে।” |