গরু-ভর্তি ট্রাকের ধাক্কায় এক ফল-বিক্রেতার মৃত্যুতে রবিবার সকালে তেতে ওঠে উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের স্টেশনপাড়া এলাকা। আক্রান্ত হয় পুলিশ।
বাংলাদেশে পাচারের জন্য ওই গরু নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলে এবং অবিলম্বে তা বন্ধের দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা দেবকুমার বিশ্বাস (৪৫) নামে স্থানীয় ওই ফল-বিক্রেতার দেহ প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা আটকে রেখে অবরোধ করে বনগাঁ-চাকদহ সড়ক। পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গিয়ে বাধা পায়। গোপালনগর থানার এক সাব-ইনস্পেক্টর এবং এক কনস্টেবলকে মারধর করা হয়। পুলিশের একটি জিপ ভাঙচুর করে উল্টে দেওয়া হয়। আগুন ধরানো হয় রাস্তার ধারের একটি ফাঁকা পুলিশ-চৌকিতে। এসডিপিও (বনগাঁ) জয়ন্ত মুখোপাধ্যায় বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। |
পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, “গরু পাচার রুখতে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি নিজেও এ বার থেকে অভিযান চালাব। ওই ট্রাকটির খোঁজ চলছে।”
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই পাচারের জন্য গরু ভর্তি ট্রাক বনগাঁ-চাকদহ সড়কে বেপরোয়া ভাবে চলে। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু পুলিশ ব্যবস্থা নেয় না। পুলিশের একাংশ এবং রাজনৈতিক মদতেই পাচারকারীরা অবাধে যাতায়াত করে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, পুলিশকর্মীদের কারও পাচারে মদত থাকার নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিএসএফের সঙ্গে পুলিশ যৌথ ভাবে গরু পাচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। সাফল্যও আসছে। কিন্তু পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা থাকায় গরু পাচার পুরোপুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে তিনি মেনে নিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা তথা বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “গরু পাচার বন্ধ করতে প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বহুবার জানিয়েছি। ফের দাবি জানানো হবে। দলের কেউ গরু পাচারে যুক্ত প্রমাণ মিললে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।”
গোপালনগর রেল স্টেশনে ফলের দোকান রয়েছে দেবকুমারবাবুর। এ দিন সকাল ৬টা নাগাদ তিনি একটি ভ্যান নিয়ে গোপালনগর বাজারে যাচ্ছিলেন ফল আনতে। বনগাঁমুখী গরু ভর্তি ট্রাকটি পিছন থেকে ধাক্কা মারলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দেবকুমারবাবুর। এর পরেই স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশের বিরুদ্ধে তারা ঘটনাস্থলে দেরিতে আসার অভিযোগও তোলে। পুলিশ অবশ্য তা মানেনি। পুলিশ অবরোধকারীদের দাবি মেনে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মৃতের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। |