মহাকাব্য থেকে লোকগান, বঙ্গ-সংস্কৃতি উৎসব বহরমপুরে
হরের প্রথম বঙ্গসংস্কৃতি উৎসবকে ঘিরে উৎসাহে মেতে উঠল বহরমপুর। কেন্দ্রীয় ভাষা শহিদ স্মারক সমিতির (কলকাতা) সহায়তায় গত ৮ ও ৯ জুন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে ওই উৎসবে প্রখর গ্রীষ্মকে উপেক্ষা করে হাজির হয়েছেন শহরের বহু মানুষ। কর্ণকুন্তী সংবাদ থেকে বাউল গান পর্যন্ত বঙ্গ সংস্কৃতির বৈচিত্রময় ভান্ডার উদ্ভাসিত হয়েছে এই উৎসবে। কেন্দ্রীয় ভাষা শহিদ সমিতি তথা কেন্দ্রীয় বঙ্গসংস্কৃতি উৎসব কমিটি’র সাধারণ সম্পাদক চিত্রা লাহিড়ি বলেন, “কেন্দ্রীয় ভাষা শহিদ স্মারক সমিতি ভাষার প্রচার ও সংস্কৃতি প্রসারের কাজ করে থাকে। কলকাতায় ১২ বছরে পা দিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় যেখানে এর শাখা রয়েছে, সেখানেই বঙ্গসংস্কৃতি উৎসব আয়োজন করা হয়ে থাকে। বহরমপুরে এই প্রথম ওই উৎসব আয়োজন করা হল। তাতে ব্যাপক সাড়া মিলেছে।”
পাঁচ বছর আগে ২০০৭ সালে বহরমপুরে ভাষা শহিদ স্মারক সমিতির শাখা তৈরি হয়। কিন্তু রাজ্যের বাইরে বিভিন্ন জেলায় ভাষা শহিদ স্মারক সমিতির শাখায় বঙ্গসংস্কৃতি উৎসব পালন করা হলেও মুর্শিদাবাদ তথা বহরমপুরের নাগরিকদের ওই উৎসবের আঁচে নিজেদের সেঁকে নেওয়ার সুযোগ ছিল না। অবশেষে বঙ্গসংস্কৃতি উৎসবের বৈচিত্র্যের স্বাদ পেলেন মুর্শিদাবাদের শিল্পীরা। চিত্রাদেবী ছাড়াও কলকাতা থেকে কেন্দ্রীয় ভাষা শহিদ স্মারক সমিতির দিলীপ চক্রবর্তী ও সজল রায়চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন তরুণ দম্পতি পার্থ দে ও শিউলি দে ভট্টাচার্য।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে ‘বাংলা সংস্কৃতি বিষয়ে পরবর্তী প্রজন্মকে সচেতন করার প্রয়োজনীয়তা’ বিষয়ক আলোচনা করেন দিলীপবাবু। অন্য দিকে সজলবাবু ‘বাংলা ভাষা নিয়ে আন্দোলন কেন করতে হবে?’ প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন। উৎসবের সূচনা করেন শিল্পী দম্পতি পার্থ ঘোষ ও গৌরী ঘোষ। বঙ্গসংস্কৃতি উৎসব কমিটির বহরমপুর শাখার সদস্যবৃন্দের সমবেত সঙ্গীত ছাড়াও ছিল বহরমপুর ইয়ুথ কয়্যারের সমবেত গান। এছাড়াও সুমনা ধর, শিউলি দে ভট্টাচার্য, সুব্রত বৈদ্য, গৌতম ভট্টাচার্য, শ্রীমন্ত সাহা শোনান ভিন্ন স্বাদের বাংলা গান। আবৃত্তিতে অংশ নেন দীপক লাহিড়ি, তরুণ সরকার, তৃষা সেন। লোকগীতিতে পরিবেশন করেন শুভেন্দু মাইতি ও তাঁর সম্প্রদায়। সমাপ্তি পর্বে দুপুরে জেলার কবিদের নিয়ে কবি সম্মেলন এবং আলোচনার পরে সন্ধ্যায় ছিল নাজমুল হকের লোকগীতি, ঘনশ্যাম সর্দার ও সম্প্রদায়ের বাউল গান। অসিত সমাদ্দার, অনিন্দিতা মোদক, চিত্রা লাহিড়ি, চন্দন মজুমদারের আবৃত্তি। পূর্ণিমা সমাদ্দার, কণিকা দাস, পিয়ালি পাল, অনিন্দিতা খান, জয়দেব সাহা, সুদেষ্ণা চট্টোপাধ্যায়ের বাংলা গান। এ ছাড়াও কর্ণকুন্তী সংবাদ পাঠ করেন পার্থ ঘোষ ও গৌরী ঘোষ।
চিত্রাদেবী বলেন, “চিকিৎসক বিকাশ সরকার, ধনঞ্জয় দে, তরুণ মুখোপাধ্যায়, পার্থ দে-সহ বহু বিশিষ্টজনের সহযোগিতায় উৎসব সার্থকতা পেয়েছে।” এত দিন বাংলাদেশের ভাষা শহিদ ও বরাক উপত্যকার ভাষা শহিদ স্মরণে ২১ ফেব্রুয়ারি ও ১৯ মে পালনের পাশাপাশি বিজয়া সম্মিলনী ও বাংলা নববর্ষ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করে বহরমপুর শাখা। গত ২০০৯ সালের অগস্টেও এক সাংস্কৃতিক আয়োজন করলেও বঙ্গসংস্কৃতি উৎসবের স্বাভাবিক আগ্রহ তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত ওই উৎসবের খোলা বাতাসে নিজেদের গা ভাসিয়ে দেতে পেরে তৃপ্ত বহরমপুরের নাগরিক।
ছবি: গৌতম প্রামাণিক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.