|
|
|
|
মেদিনীপুরে এ বি বর্ধন |
মানুষকে সঙ্গে নিয়ে পথে নামার আহ্বান |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর ‘জন -বিচ্ছিন্নতা’কে বারবার দায়ী করেছেন শীর্ষ বাম নেতৃত্ব। সে কথা স্মরণ করিয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের উপর জোর দিলেন সিপিআইয়ের কেন্দ্রীয় সম্পাদক মণ্ডলীয় সদস্য এ বি বর্ধন। ফ্রন্টের আভ্যন্তরীণ তিক্ততা ভুলে পরিস্থিতির নিরিখে জোট বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বানও জানালেন কর্মীদের। রবিবার মেদিনীপুরের জেলা পরিষদ হলে সিপিআইয়ের বিশেষ সাধারণ সভায় এসেছিলেন বর্ধন। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “পার্টি অফিসে বসে আগামী ২ -৩ দিনের পরিকল্পনা রাজনীতি নয়। কয়েকজন নেতা মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়াও রাজনীতি নয়। মানুষকে রাস্তায় নামিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। কেন এই আন্দোলন, আমরা কী করতে চাই তা বোঝাতে হবে। এটাই রাজনীতি।” |
|
সিপিআইয়ের সভায় দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বর্ধন। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ |
এ দিনের সভায় বর্তমান রাজ্য সরকারের কাজকর্ম নিয়ে সমালোচনার পাশাপাশি দুর্নীতি, দম্ভ ও মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্যই যে তিন দশক ক্ষমতায় থাকা বাম সরকারকেও সরে যেতে হয়েছে, তা মেনে নেন বর্ধন। তাঁর সাফ কথা, “বামপন্থীদের মধ্যেও খারাপ জিনিস ঢুকে পড়েছিল। নীচ থকে উপর দুর্নীতি, দম্ভ গ্রাস করেছিল। তার ফলেই পশ্চিমবঙ্গে ভোটের ফল এমন হয়েছে।” আর বর্তমান সরকার নিয়ে এই বাম নেতার অভিযোগ, “বর্তমান সরকার পরিবর্তনের নামে স্বৈরতন্ত্র চালাচ্ছে। পঞ্চায়েতগুলিকে নিষ্ক্রিয় করে দিচ্ছে।” আরও একধাপ এগিয়ে সিপিআই সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর আর এক সদস্য গুরুদাস দাশগুপ্ত বলেন, “কংগ্রেসি আমলের মতো বিডিওদের ক্ষমতা দিয়ে আমলাতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। তৃণমূল সরকার দ্বিচারিতা করছে। কেন্দ্রের সঙ্গে সরকারে রয়েছে, আবার মুখে কিছু জিনিসের প্রতিবাদ করছে। কিন্তু রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে না।” এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন মঞ্জুকুমার মজুমদার, সন্তোষ রাণা, প্রবোধ পান্ডা -সহ দলীয় নেতৃত্ব। জেলায় জেলায় তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’, একের পর এক ধর্ষণ, ঢালাও উন্নয়নের ‘মিথ্যা প্রচারে’র প্রতিবাদ জুলাই জুড়ে বুথ স্তর থেকে রাজ্যস্তর পর্যন্ত মিটিং -মিছিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিআই। মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ৩০ জুলাই থেকে ৩ অগস্ট সংসদের বাইরেও আন্দোলন হবে। বর্ধন বলেন, “সংসদের ভেতরে সাংসদেরা প্রতিবাদ জানাবেন। আর হাজার হাজার মানুষ সংসদের বাইরে প্রতিবাদ করবেন। বর্তমানে যে নয়া অর্থনীতি চলছে, তার কারিগর অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। তারই বিরোধিতায় যন্তরমন্তরে ৫দিন ধরে ধর্না চলবে।”
এ রাজ্যে পুনরায় জায়গা করে নিতে বামেদের খানিকটা সময় লাগবে বলেও অভিমত বর্ধনের। তাঁর মতে, “বড় বিপর্যয় হয়েছে। সামলাতে কিছুটা সময় লাগছে। এ রাজ্যে তো এখন গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, ৫ বছর চুপ করে থাকুন। দাবি করছেন সব হয়ে গিয়েছে। দেখা যাচ্ছে সবই মিথ্যে।” কালো টাকা নিয়ে সিপিআই -ই প্রথম সংসদে সরব হয়েছিল বলেও দাবি করেন তিনি। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেন, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের প্রতিটি জায়গাতেই বামফ্রন্ট জোট বেঁধে লড়বে। পরিস্থিতির নিরিখে বামেদের এই জোট আরও শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী হবে বলেও জানান সিপিআই নেতৃত্ব। |
|
|
|
|
|