সম্পাদক সমীপেষু...
অযৌক্তিক মন্তব্য
সম্পাদক সমীপেষু বিভাগে ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১২ তারিখে প্রকাশিত একটি চিঠিতে মার্বল প্যালেস সম্পর্কে রীতা বসুর মন্তব্যের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তাঁর দেওয়া তথ্যগুলি সঠিক নয়। মার্বল প্যালেস একটি হেরিটেজ ট্রাস্টের আওতায় রয়েছে। উত্তরাধিকার সূত্রে মল্লিক পরিবার সেটি পরিচালনা করে। এটি সম্পূর্ণ ভাবে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। সরকারি কোনও সংস্থার কাছ থেকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আর্থিক সাহায্য বা অনুদান আসে না। ট্রাস্ট-নির্ধারিত বিধি মেনে দর্শনার্থীরা সপ্তাহে পাঁচদিন বিনামূল্যে ওই ভবন পরিদর্শন করতে পারেন। সে জন্য রাজ্য সরকারের পর্যটন ব্যুরো থেকে অনুমতি নিতে হয়। রীতা বসুও ওই বিষয়টিতে অবগত ছিলেন। কিন্তু, ভবনটির মূল প্রবেশপথে দারোয়ানকে কিছু টাকা দিয়ে ভিতরে ঢুকেছিলেন তিনি। যদি রীতা বসু এতটাই সচেতন নাগরিক হন, তবে তিনি নিরাপত্তাকর্মীকে অযাচিত ভাবে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করলেন কেন? তা-ও এমন একটি হেরিটেজ ভবনে ঢোকার জন্য, যেখানে প্রবেশ অবাধ।
ঐতিহাসিক। মার্বল প্যালেস।
দর্শনার্থীদের ওই ভবনের ‘আর্ট গ্যালারি’তে ঘোরানো হবে, তা সেখানকার রক্ষণাবেক্ষণে নিযুক্ত ব্যক্তিরাই ঠিক করেন। সংগ্রহশালায় তাঁর পথ-প্রদর্শক নিরাপত্তাকর্মীর সমালোচনা করার চেষ্টা করেছেন রীতাদেবী। বহুমূল্য পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের নিরাপত্তা এবং সেখানে প্রবেশের নিয়মকানুন সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকলেও, এ ধরনের মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক। পথ-প্রদর্শক দারোয়ানকে ‘ছিনেজোঁক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন রীতাদেবী। সরকারি এবং ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সম্পত্তির পার্থক্য তিনি অনুধাবন করতে পারেননি। মার্বল প্যালেস সম্পর্কে তাঁর অমর্যাদাপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা যায়। সম্ভবত তিনি ইউরোপের কোনও সংগ্রহশালায় যাননি। না হলে মার্বল প্যালেস-এর ভিতরে কম মাত্রার আলো নিয়ে ওই মন্তব্য করতেন না।
রুবেন্সের ছবিটির সম্পর্কে বলি, স্যর পিটার পল রুবেন্সের আঁকা ‘ম্যারেজ অব সেন্ট ক্যাথারিন’ নামে ছবিটি আমার শ্বশুরের ঠাকুর্দা (দাদাশ্বশুরের বাবা) বেঙ্গল স্কুল অব আর্টের একটি প্রদর্শনী থেকে নিয়েছিলেন। লর্ড নথব্রুক সেখানে ছিলেন। প্যালেসের কোনও দারোয়ান বা গাইড রুবেন্সের ছবির বিষয়ে ভুল তথ্য দিতে পারেন না। এ নিয়ে রীতাদেবীর অভিযোগ অবান্তর।
বাঙালি কোন পথে
‘ইউরোপ কোন পথে’ সম্পাদকীয় (১৯-৫) প্রসঙ্গে বলতে হয়, গ্রিস দেশের পুরুষ-মহিলা উভয়েই রাস্তার উপর ছোট ছোট ছাদখোলা রেস্তোরাঁয় বসে টেলিভিশনে ফুটবল খেলা দেখে আর চিৎকার করে ‘গোল গোল’ করে। তার পর বিয়ারের বোতল, কলার খোসা রাস্তায় ছুড়ে অলস জীবন যাপন করে। মাঝে মাঝে আলেকজান্ডার আর সক্রেটিসের নাম আওড়ায়। বিখ্যাত কবি নোবেল-প্রাপ্ত সেফেরিসের হয়ে বিয়ারের বোতলে উল্লাস চালায়। এই পাহাড়ি অঞ্চলের দেশটায় কৃষি ছাড়া বিশেষ কোনও শিল্প নেই। ভেড়ার মাংস আর ভেড়ার লোম নিয়ে জীবন কাটায়। শিল্প তেমন নেই বললেই চলে। বাঙালিও চায়ের কাপে রবীন্দ্রনাথ আর রাজনীতির তুফান উঠিয়ে রাস্তাঘাটে চায়ের ভাঁড়, পলিথিনের ব্যাগ, শালপাতা ফেলে দিন শেষ করে। ‘ইউরোপ কোন পথে’ পড়ে মনে হল, বাঙালি কোন পথে!
নিরানন্দ বিদায়!

দ্বিজেন্দ্রলাল রায়
কলকাতার কড়চা বিভাগে ‘অনাদরে’ (৩০-৪) শিরোনামে দ্বিজেন্দ্রলাল রায় প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘ক্ষমতাসীনের সমালোচনা করলে যে কী নিদারুণ নিরানন্দ বিদায় ঘটে, তা বোধহয় দেখেছিল গত শতকের ষাটের দশক। ১৯৬১-তে রবীন্দ্রনাথের শতবষের্র্ লোকারণ্য, মহা ধুমধাম। তার ঠিক দু’বছর পরে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের শতবর্ষে তার ছিটেফোঁটাও নেই। সার্ধশতবর্ষেও সেই অনাদর। এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। রবীন্দ্র-দ্বিজেন্দ্র তিক্ততা ক’জন মনে রেখেছেন? তা ছাড়া রবীন্দ্রনাথ-দিলীপকুমার মধুর সম্পর্ক সেই তিক্ত ঘটনাকে ম্লান করে দিয়েছে। শুধু দ্বিজেন্দ্রলাল রায় নন, কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সমস্ত বাঙালি মনীষীই অনাদরের শিকার। বাঙালি মানসিকতাই এর জন্য দায়ী। সাড়ম্বরে রবীন্দ্রশতবর্ষ, সার্ধশতবর্ষ পালিত হয়েছে। অথচ কেউ বুঝতেই পারলেন না মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর শতবর্ষ, সার্ধশতবর্ষ, পৌনে দ্বিশতবর্ষ অতিক্রম করে দ্বিশতবর্ষের প্রায় দোরগোড়ায়। ‘গীতাঞ্জলি’রও শতবর্ষ উদ্যাপিত হল। কিন্তু রবীন্দ্রনাথেরই জন্মসঙ্গী ‘মেঘনাদ বধ কাব্য’-র শতবর্ষ, সার্ধশতবর্ষ অনাদরে অতিবাহিত হল। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী থেকে অনেক অনেক বাঙালি মনীষী, কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী-বিজ্ঞানীর নাম করা যায়, যাঁদের আমরা বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে সম্পূর্ণ রূপে বিস্মৃত হয়েছি। বর্তমানে ‘অতিসক্রিয়’ ও ‘নিষ্ক্রিয়’ শব্দ দুটি খুব চালু আছে। এই প্রসঙ্গেও উক্ত শব্দযুগল সুপ্রযোজ্য। বাঙালি রবীন্দ্রনাথের বেলায় ‘অতি সক্রিয়’, অন্যের বেলায় ‘নিষ্ক্রিয়’। অন্যান্যের সঙ্গে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের বিস্মৃতি তারই ফল।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.