রাষ্ট্রপতি পদে প্রণবের সম্ভাবনা বাড়লেও চাবি মমতার হাতেই
মুলায়ম-অজিত সিংহ-করুণানিধির পরে এ বার বিজেপিও। প্রণব মুখোপাধ্যায়কে রাষ্ট্রপতি পদে সমর্থন করতে প্রস্তুত বলে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডকে ঘরোয়া ভাবে জানিয়ে দিল প্রধান বিরোধী দলও। তবে বিজেপি চায়, তার বিনিময়ে উপরাষ্ট্রপতি পদে তাদের প্রার্থীকে সমর্থন করুক কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে আজ কংগ্রেস কোর গ্রুপের বৈঠকে সনিয়া গাঁধী এবং মনমোহন সিংহ রাষ্ট্রপতি পদে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে প্রার্থী করার ব্যাপারে নীতিগত ভাবে সমর্থন জানিয়েছেন। এবং সেই অনুযায়ী ঠিক হয়েছে, আগামী ১৫ জুন দিল্লি আসবেন করুণানিধি। ১৬ জুন প্রবীণ শরিক নেতা হিসেবে তিনি প্রণববাবুর জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারেন। আজ কোর গ্রুপের বৈঠকের পরে সনিয়ার রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেল প্রণববাবুর কাছে এসে জানিয়ে দেন, কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে তাঁর নামই চূড়ান্ত করা হবে। তবে তার আগে বিষয়টি নিয়ে এনসিপি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁরা আলোচনা করবেন।
আর এখানেই ঠোঁট এবং কাপের মধ্যে ফারাক দেখছেন অনেকে। প্রণবকে প্রার্থী করার ব্যাপারে সনিয়া-মনমোহন নরম মনোভাব নিলেও কংগ্রেসেরই একাংশ বলছে, এ ব্যাপারে চাবি এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। ইউপিএ জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক দলের প্রধানকে আজই ফোন করে দিল্লি আসার অনুরোধ করেছেন আহমেদ পটেল। কিন্তু তাঁর সঙ্গে রাষ্ট্রপতি পদে কোনও নাম নিয়ে আলোচনা হয়নি। তৃণমূল সূত্র বলছে, নাম উঠলেও তাঁরা প্রণববাবুকে সমর্থন না-ও করতে পারেন। এই পরিস্থিতিতে এখন মমতার দিকেই তাকিয়ে কংগ্রেস। কারণ এই প্রশ্নে মমতার সঙ্গে মতপার্থক্যের জেরে ইউপিএ-তে ফাটল হোক, তা চায় না তারা।
প্রণববাবুর ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দিলেও উপরাষ্ট্রপতি পদ নিয়ে বিজেপির প্রস্তাবে সাড়া দিচ্ছে না কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, কংগ্রেসের যিনি প্রার্থী হবেন, তিনি ইউপিএ এবং সমর্থক দলগুলির সমর্থন পাবেন। এবং তার ভিত্তিতেই তিনি জিতবেন বলে কংগ্রেস নেতৃত্বের আশা। কংগ্রেসের বক্তব্য, বিজেপি প্রণববাবুকে সমর্থন করতে চাইলে আপত্তি নেই। কিন্তু তার বদলে উপরাষ্ট্রপতি পদে তাদের প্রার্থীকে সমর্থন করা যাবে না। বরং প্রণব যদি রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হন, তা হলে উপরাষ্ট্রপতি পদে সংখ্যালঘু কাউকে প্রার্থী করার কথা ভাবতে পারে কংগ্রেস। কাশ্মীরের নেতা তথা প্রাক্তন জলসম্পদ মন্ত্রী সইফুদ্দিন সোজকে ওই পদে প্রার্থী করার কথা ভাবা যেতে পারে বলে কংগ্রেসের একটি সূত্রের বক্তব্য।
রাষ্ট্রপতির নির্বাচনের অঙ্কে ইউপিএ-র পরে সবথেকে বেশি ভোট রয়েছে এনডিএ জোটের। পৃথক দল হিসেবেও কংগ্রেসের পরেই বিজেপির ভোট। বিজেপির সমর্থনে প্রণববাবুকে প্রার্থী করে জিতিয়ে আনা কংগ্রেসের পক্ষে সহজ। কিন্তু মুলায়ম-মায়া-মমতার সঙ্গে বোঝাপড়ায় প্রার্থী জেতাতেই আগ্রহী সনিয়া।
কারণ? কংগ্রেস সূত্র বলছে, বিজেপির সমর্থন নিয়ে যদি প্রার্থী বাছাই করতে হয়, সে ক্ষেত্রে তাদের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতেই হবে। বিজেপি প্রণববাবুকে সমর্থন করলেও এস সি জামির, মীরা কুমার বা শিবরাজ পাটিলের মতো কেউ প্রার্থী হলে তাকে সমর্থন করবে কি না, সেটা এখনও বড় প্রশ্ন। কংগ্রেস নেতারা বলছেন, বিজেপির সমর্থন নিয়ে কোনও প্রার্থী রাষ্ট্রপতি হলে কংগ্রেসের একটা আশঙ্কা থেকে যাবে। তাঁদের বক্তব্য, যদিও রাষ্ট্রপতিকে সংবিধান মেনেই চলতে হয়, কিন্তু ২০১৪ সালে যদি আবার ত্রিশঙ্কু লোকসভা হয়? তখন রাষ্ট্রপতি একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দলকে সরকার গড়তে ডাকবেন না কি বৃহত্তম জোটকে ডাকবেন? এই জায়গায় রাষ্ট্রপতির অধিকার প্রয়োগের একটা ধূসর জায়গা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি বিজেপির প্রতি সদয় হলে কংগ্রেসের আশঙ্কার জায়গা থেকেই যায়।
রাষ্ট্রপতি ভোটের পরে মন্ত্রিসভায় একটা রদবদল আসন্ন। নানা কারণে অর্থমন্ত্রীর ভূমিকায় অখুশি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। ভোডাফোনের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব নেওয়া থেকে শুরু করে তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত, প্রতিটি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুযোগ, প্রবীণ অর্থমন্ত্রী অনেক ক্ষেত্রেই নিজের মতে চলছেন। সে ক্ষেত্রে প্রণববাবুকে নর্থ ব্লক থেকে সরিয়ে রাইসিনা হিলসে পাঠাতে তবে কি শেষ পর্যন্ত সনিয়া-মনমোহন সম্মত হবেন?
বিজেপি নেতা নিতিন গডকড়ী বলেন, “কংগ্রেস যদি আমাদের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী না হয় এবং একতরফা ভাবে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করে, তবে সে ক্ষেত্রে আমরা পাল্টা কৌশল ঠিক করব যে, কাকে সমর্থন করব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.