আলবার্ট আইনস্টাইনের সিংহাসন অটুটই রইল।
গত বছর অগস্ট মাসে জেনিভার কাছে সার্ন গবেষণাগারের যে বিজ্ঞানীরা পৃথিবী জুড়ে খবরের শিরোনামে এসেছিলেন তাঁদের ‘পরীক্ষালব্ধ’ তথ্যে আইনস্টাইনকে ভুল প্রমাণ করে, তাঁরা আজ এখানে ঘোষণা করলেন, পরীক্ষাতেই ছিল ভুল।
ফলত নির্ভুল প্রমাণিত হলেন আইনস্টাইন।
উল্লেখ্য, যাঁরা দাবি করেছিলেন আইনস্টাইন ভ্রান্ত, তাঁদের দলনেতা চাপে পড়ে ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন। আর দাবিটি যে ভুল, তা-ও জানা গিয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, বিজ্ঞানী সম্মেলনে ওই দলের ভুল স্বীকার।
গত বছরের ঘোষণাটি ছিল সত্যিই চমকপ্রদ। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, তাঁদের পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে নিউট্রিনো নামের কণাটি ছুটতে পারে আলোর চেয়েও বেশি বেগে। দাবি হিসেবে পেশ করা হলেও, এই তথ্য কাঁপিয়েছিল বিজ্ঞানের দুনিয়া। ১৯০৫ খ্রীস্টাব্দে আবিষ্কৃত আইনস্টাইনের বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব অনুযায়ী বিশ্বে কোনও কিছুই আলোর চেয়ে বেশি বেগে ছুটতে পারে না। নিউট্রিনো যদি ভাঙে সে নিয়ম, তা হলে অনেক কিছুই উল্টে পাল্টে যায়, এমনকী ‘কার্য-কারণ’-এর সম্পর্কও। অর্থাৎ, তা হলে আগে কার্য, পরে কারণ। |
সার্ন-এ বিজ্ঞানীদের যে দল (‘অপেরা’) তাঁদের দাবি পেশ করেছিলেন, তাঁরা এখানে যোগ দিতে এসেছিলেন নিউট্রিনো বিষয়ে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে। তাঁরা বললেন, “সংশোধিত পরীক্ষায় আমরা যান্ত্রিক প্রভাবজনিত ত্রুটি দূর করেছি। ফলে পেয়েছি সঙ্গতিপূর্ণ একটি ছবি। বুঝতে পারছি, নিউট্রিনোর বেগ আলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।”
‘অপেরা’-র বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করেছিলেন সার্ন থেকে ইতালির সান গ্রাসো পরীক্ষাগারে নিউট্রিনো পাঠিয়ে। ভূস্তর ফুঁড়ে ৭৩২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে ওই কণাদের লাগা উচিত ছিল ০.০০২৪ সেকেন্ড। কিন্তু তাঁরা তখন দাবি করেছিলেন, নিউট্রিনোর সময় লেগেছিল ০.০০০০০০০৬ সেকেন্ড কম। এতেই মনে হয়েছিল ওই কণারা ছোটে আলোর চেয়েও বেশি বেগে। সান গ্রাসোয় যে বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন নিউট্রিনো নিয়ে, তাঁদের নেতা নোবেলজয়ী পদার্থবিদ কার্লো রুবিয়া। তিনি পরে ঘোষণা করেছেন, তাঁদের পরীক্ষায় নিউট্রিনো ছোটেনি আলোর চেয়ে বেশি বেগে। |