বিশ্ববিদ্যালয়ে সমবায় ভোটে জিতল বামেরা
কদা ‘দুর্গ’ বর্ধমানে বহু দিন বাদে বামেদের মুখে হাসি। আর গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ তৃণমূলের অন্দরে তিক্ততা।
বামেদের স্বস্তির কারণ, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মী সমবায় ঋণদান সমিতির ভোটে কর্মচারীদের জন্য সংরক্ষিত ৩৯টি আসনের মধ্যে ২৪টি জিতেছে তাদের ‘বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ইউনিয়ন’। শিক্ষকদের জন্য সংরক্ষিত ৬টি ও আধিকারিকদের ২টি আসনেও বামপন্থীরাই জয়ী হয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে ফল ঘোষিত হয়। তবে বামপন্থীরা ‘বিজয় মিছিল’ করেননি। বরং পুলিশ থাকতে-থাকতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজবাটী কমপ্লেক্স ছেড়ে চলে যান।
বামেদের এই জয়ের জন্য মূলত আগের সরকারের আমলে ‘বেছে বেছে’ কর্মী নিয়োগকেই দায়ী করছে তৃণমূল। কিন্তু এটাও ঘটনা যে, তাদের দু’টি সংগঠন বিভেদ ভুলে একজোট হয়ে লড়তে পারেনি। তৃণমূল প্রভাবিত ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাবন্ধু সমিতি’ এবং ‘বর্ধমান ইউনিভার্সিটি কর্মচারী সমিতি’ সব আসনেই প্রার্থী দিয়ে দেয়। পরে রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়-সহ জেলার চার বিধায়ক বৈঠকে বসে দুই সংগঠনের ‘সমঝোতা’ করান। ঠিক হয়, শিক্ষাবন্ধু সমিতি ১৯টি এবং অপর সংগঠন ২০টি আসনে লড়বে।
তখন চলছে ভোটগ্রহণ। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
যেহেতু সব আসনেই দু’পক্ষ প্রার্থী দিয়েছে, সমর্থকদের বোঝানো হবে, কোন আসনে কে ‘জোট’ প্রার্থী অর্থাৎ কাকে ভোট দিতে হবে। কিন্তু সেই ‘বোঝাপড়া’ কাজে কত দূর বাস্তবায়িত হয়েছে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।
বামপন্থী কর্মচারী সংগঠনের নেতা আকাশ চট্টোপাধ্যায় ও বুদ্ধদেব চক্রবর্তীর দাবি, “এই জয় প্রত্যাশিতই ছিল। যদিও আমাদের দারুণ প্রতিকূলতার মধ্যে লড়তে হয়েছে।” শিক্ষাবন্ধু সমিতির সম্পাদক সীতারাম মুখোপাধ্যায় অবশ্য পাল্টা বলেন, “১৯৭৭ থেকে ২০১০ পর্যন্ত প্রায় ৭০০ কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। এঁদের বড় অংশই বামপন্থী সংগঠনের সমর্থক। এঁদের ভোটই নির্ণায়কের ভূমিকা নিয়েছে।” কর্মচারী সমিতির সম্পাদক শৈলেন্দ্রনাথ ঘোষও বলেন, “সমস্ত কর্মীই তো বামপন্থীদের। তাই ভোটে ওরা জিতবে, সেটাই স্বাভাবিক।”
কিন্তু হারার পরেও পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষ চেপে রাখতে পারছে না দুই সংগঠন। সীতারামবাবুর অনুগামী সাধনকুমার দত্ত, বাসুদেব সিংহরায়দের আক্ষেপ, “জোট করতে যাওয়াটাই আমাদের কাল হল! এমন একটি গোষ্ঠীকে ২০টি আসন ছাড়া হল, যারা মাত্র দু’টি আসন জিততে পেরেছে। ওদের সংগঠনের স্বীকৃতি বাতিল করা দরকার।” শৈলেন্দ্রবাবুর অনুগামী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় আবার অভিযোগ করেন, “প্রচার দেখেই বুঝেছিলাম, ওরা জোটের পক্ষে ভোট দেবে না। সেটাই ঘটেছে।” শৈলেন্দ্রবাবু নিজেও বলেন, “খারাপ লাগছে যে, জোটের প্যানেলের বাইরে যাঁদের নাম মনোনয়নপত্রে ছিল, তারা কেউ কেউ জিতে গেলেন। অথচ জোট প্রার্থীদের অনেকে হারলেন।”
এ বারের ভোটে অবশ্য বেশ কয়েকজন নেতা হেরেছেন। শৈলেনবাবু নিজে তো বটেই, তাঁর সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ আশিসকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ও হেরে গিয়েছেন। হেরেছেন বাম সংগঠনের সভাপতি আকাশ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়, সুখদেব বন্দ্যোপাধ্যায়, কার্তিক চৌধুরীরা। উত্তেজনা থাকায় সকাল থেকেই এসডিপিও (দক্ষিণ বর্ধমান) অম্লানকুসুম ঘোষের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন ছিল। তবে গোলমাল কিছু হয়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.