|
|
|
|
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাশীপুর |
‘অ্যাডমিট কার্ড’ পাঠিয়েও কর্মপ্রার্থীদের পরীক্ষা না নেওয়ার অভিযোগ উঠল কাশীপুরের সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্প দফতরের বিরুদ্ধে। রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসকের কাছে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে তদন্ত চেয়েছেন দুই পরীক্ষার্থী। জেলাশাসকের কাছেও এই ঘটনার তদন্ত দাবি করেছে কংগ্রেসের কাশীপুর ব্লক কমিটি। সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্পের জেলা প্রকল্প আধিকারিক স্বপন মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি কাশীপুর ব্লক সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্প দফতর ব্লকের ১৩ টি পঞ্চায়েত এলাকায় অঙ্গনওয়াড়ি সহায়িকা পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দেয়। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শূণ্যপদের সংখ্যা ছিল ৪১টি। দফতর থেকে আবেদনকারীদের কাছে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য অ্যাডমিট কার্ড পাঠানো হয়। অন্যদের মতই স্থানীয় বেকো পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা রূপালি বাউড়ি ও মামনি সহিসও ওই পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড হাতে পান। তাঁদের ২৮ মে কাশীপুর কমিউনিটি হলে পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে অ্যাডমিট কার্ডে উল্লেখ করা ছিল। তবে, দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তার আগেই অনেক প্রার্থীর পরীক্ষা নেওয়া হয়ে গিয়েছিল। এমন কী বেকো বাদে বাকি ১২টি পঞ্চায়েতের ফল ২৫ মে প্রকাশ করা হয়। কিন্তু বেকোর ফল সেদিন প্রকাশ করা হয়নি।
রূপালি স্বামীর কমল বাউড়ির অভিযোগ, ২৫ মে কাশীপুর কমিউনিটি হলে গিয়ে দেখেন পরীক্ষা নেওয়ার কোনও আয়োজন নেই। কাশীপুরের সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্পের দফতরে যোগাযোগ করলে, কর্মীরা তাঁদের বাইরে বসতে বলেন। তাঁর দাবি, “অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পরে এক আধিকারিক জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। বেকো পঞ্চায়েত এলাকায় আর কোনও শূন্যপদ নেই। এই ঘটনার পরপরই আমরা মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ করি।”
কাশীপুরের ব্লক সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিক আনন্দময়ী বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, “ওই দিন আমাদের অফিসেই পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অন্য একজন কর্মপ্রার্থী এসে পরীক্ষাও দিয়েছেন। তারপরেও ওঁদের এই অভিযোগের মানে কী?” তিনি জানান, ১৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১২টি পঞ্চায়েত এলাকার ফলাফল গত ২৫ মে প্রকাশ করা হয়েছে। বেকো পঞ্চায়েত এলাকার ফল ২৮ মে পরীক্ষা নেওয়ার পরে বিকেলে প্রকাশ করা হয়।
অ্যাডমিট কার্ডে ২৮ মে পরীক্ষার দিনের উল্লেখ থাকার বিষয়টি দফতর সূত্রেও স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। এই দুই পরীক্ষার্থীকে কেন ২৮ মে পরীক্ষায় ডাকা হল, কেনইবা অ্যাডমিট কার্ডে উল্লেখিত কেন্দ্রে তাঁদের পরীক্ষা নেওয়া হল না, ১২টি পঞ্চায়েত এলাকার সফল প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করার দু’দিন পরে বেকো পঞ্চায়েতের তালিকা প্রকাশ করা হল কেন? প্রশাসনের কর্তাদের কাছে এই প্রশ্নগুলির উত্তর অবশ্য মেলেনি।
কাশীপুর কমিউনিটি হল ভাড়া দেয় কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতি। পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৮ মে ওই দফতরকে কমিউনিটি হল ভাড়া দেওয়া হয়নি। নিয়োগ কমিটির অন্যতম সদস্য তথা কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সত্যনারায়ণ বাউরি বলেন, “এ নিয়ে আমার কাছে অভিযোগ জমা পড়লে খতিয়ে দেখা হবে।” তাঁর দাবি, “কেন দু’জন পরীক্ষা দিতে পারলেন না, তার তদন্ত হলে বেনিয়মের আরও ঘটনা উঠে আসবে। আশাকরি অভিযোগের তদন্ত হবে।” কাশীপুর ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি কার্তিক মালাকার বলেন, “কেন ওই দুই প্রার্থীকে বঞ্চিত করা হল কেন তা খতিয়ে দেখার জন্য আমরা দফতরের পাঠানো অ্যাডমিট কার্ডের নকল-সহ জেলাশাসকের কাছে জমা দিয়েছি।” |
|
|
|
|
|