সম্পাদক সমীপেষু...
ভূত, যৌনতা সব গুলিয়ে ফেলেছেন
জমজমাট ভূত-বাজারে এ বার অবচেতনের মায়া’ নিবন্ধে (৩১-৫) গৌতম চক্রবর্তী আমার যে উদ্ধৃতিটি ব্যবহার করেছেন, তা ঠিক নয়। ‘ভূত ব্যাপারটা অবদমিত মনের যৌন ফ্যান্টাসির বহিঃপ্রকাশ,’ এ কথা আমি বলিনি। তাঁকে আমি যা বলেছিলাম তা হল, জীবন-মৃত্যু, সময়ের গতি, সচেতন এবং অবচেতন সম্পর্কে আমাদের চিন্তা, এগুলিকে প্রকাশ করার একটি উপায় রূপে কাজ করে ভূত এবং ভূত সম্পর্কিত নানা বিষয়। ‘ভূত’ আসলে আমাদের মনে অজানার আশঙ্কা, সেটা আমরা অবচেতন মনের থেকে বাইরের বাস্তবের উপর না-জেনে আরোপ করি। যা আসলে রয়েছে মনে, আমরা ভাবি তা যেন বাইরে থেকে আমাদের ভয় দেখাচ্ছে। ভূতে-পাওয়া, বা ভূতুড়ে বাড়ির ধারণা (‘হন্টিং’) লেখক ও চিন্তাশীল মানুষেরা দর্শন, রাজনীতি এবং মনোবিজ্ঞানে একটি শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন। রেনেসাঁর ‘আলোকপ্রাপ্ত’ যুগ শুরু হওয়ার পর যুক্তির উপর যে জোর দেওয়া হয়েছিল, তাতে ভূত চিরকালের মতো শেষ হয়ে যাবে, এমনই প্রত্যাশা করা গিয়েছিল। কিন্তু যতই আমরা অবিশ্বাসের কথা বলি, ভূত কী করে টিকে গিয়েছে এবং আজও আমাদের কল্পনাকে মুগ্ধ করছে, তার ব্যাখ্যা সহজ নয়।
ভূত যে ‘যৌন ফ্যান্টাসি’-র প্রতীক, এমন কথা আমি কখনওই উল্লেখ করিনি। সেক্সুয়াল ফ্যান্টাসির কথা এসেছিল যে প্রসঙ্গে তা হল, লিবিডোর আবেগ আমাদের অবচেতনে অবদমিত থাকে, যা চেতন মনের কাছে যন্ত্রণাদায়ক, অসহনীয়। চেতন মন তাকে সরিয়ে রাখে অবদমনের প্রক্রিয়ার সাহায্যে। সাইকো-অ্যানালিসিস এই অবদমিত ইচ্ছাগুলিকে তুলে আনতে পারে ‘ফ্রি অ্যাসোসিয়েশন’ পদ্ধতির মাধ্যমে। ভূতের বিষয় এবং অবচেতন মনে যৌন আবেগের বিষয়, এই দুটি আলোচনা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষিতে।
আর একটি ভুল গিরীন্দ্রশেখর বসু প্রসঙ্গে। আমি বলেছিলাম, গিরীন্দ্রশেখর সায়েন্স কলেজে প্ল্যানচেট করতেন এমন কথা পাওয়া যায়। কিন্তু শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বা রাজশেখর বসুর সঙ্গে বসে তিনি প্ল্যানচেট করতেন, সে কথা আমি বলিনি। আমি বলেছি যে শরদিন্দু তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন, এবং তাঁর লেখায় স্বপ্নের ব্যাখ্যার প্রসঙ্গের উল্লেখ রয়েছে।
গগনেন্দ্রনাথের ব্যঙ্গচিত্র
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবির প্রদর্শনীর পর্যালোচনায় মৃণাল ঘোষ লিখেছেন কার্টুনের মধ্যে রয়েছে তাঁর প্রতিবাদী চেতনার প্রকাশ (নানা দিগন্তে বিস্তৃত আধুনিকতার চেতনা, ১৯-৫)। সাম্প্রতিক কার্টুন কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে তা স্মরণ করা জরুরি বলে মনে করি।
স্বাধীন ভারতে ২০১২ সালে কার্টুনের ‘অপরাধে’ অভিযুক্ত হতে হয়। আর পরাধীন ভারতে, পরাক্রান্ত ইংরেজ শাসকদের গগনেন্দ্রনাথ রেয়াত করেননি। তীব্র বিদ্রুপে বিদ্ধ করেছেন তাঁর রাজনৈতিক কার্টুনে। বিশেষ ভাবে স্মরণীয় জালিয়ানওয়ালাবাগের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ১৯১৯ সালে আঁকা ঐতিহাসিক কার্টুন ‘পিস ডিক্লেয়ার্ড ইন দ্য পঞ্জাব’। নরকঙ্কাল ও নরমুণ্ডে আকীর্ণ এই ছবিতে দেখালেন, এই শান্তি আসলে মৃত্যুর শান্তি। খোদ ভাইসরয় লর্ড চেমসফোর্ড ওরিয়েন্টাল আর্ট সোসাইটির প্রদর্শনীতে এই কার্টুন দেখেছিলেন। এই ছবিটির ব্যাপারে সাম্প্রতিক কিছু তথ্য থাকলে তা জানাবার জন্য অনুরোধ জানাই।
‘কফিহাউসের সেই’
গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার
আনন্দবাজার পত্রিকার বিতর্ক অংশে অজিত গুহ রায় মহাশয় উল্লেখ করেছেন ‘পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা সুপর্ণকান্তি ঘোষের সুরে মান্না দে-র কণ্ঠে সেই বিখ্যাত গান কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই” (৯-৫)। মান্নাবাবুর এই গানটির গীতিকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় নন, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার।
মাংসের দোকান
রাজ্য জুড়ে মাংসের দোকানগুলি নিত্যদিন দৃশ্যদূষণের সৃষ্টি করেই চলেছে। হাটে-বাজারে, ঘনবসতিপূর্ণ রাস্তার ধারে প্রকাশ্যে পশুপক্ষী হত্যা আইনবিরুদ্ধ কাজ। সে সবের পরোয়া না-করেই এই সব হত্যা সংঘটিত হয়েই চলেছে। জবাইকৃত পশুর দেহ প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে বিক্রি করা হয়। অথচ এগুলি কাচে ঘেরা কেবিনে থাকা উচিত। পোল্ট্রিজাত মাংসের ক্ষেত্রেও এই দৃশ্যদূষণ অবিরত। এই দূষণ মানব-মন বিশেষ করে শিশুদের ক্ষতিসাধন করছে। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।
শরৎ উবাচ
‘ওস্তাদ থামতে জানে’(২০-৫) নিবন্ধে তথ্যগত ভুল আছে। উক্তিটি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মহাশয়ের। রবীন্দ্রনাথ পরে এই প্রসঙ্গে হেসে বলেছিলেন, ‘শরৎ, মোক্ষম রসবাণ হেনেছ হে, যাকে বলে ক্লাসিক!’ (স্মৃতিচারণ/দিলীপকুমার রায়/আনন্দ পাব./পৃ: ৪৬৭)


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.