|
|
|
|
ব্যবসায়ীকে তাঁর গাড়ির ধাক্কা দিয়েই খুন ফরাক্কায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ফরাক্কা |
দুষ্কৃতীদের হাত থেকে নিজের গাড়ি চুরি রুখতে সেই গাড়ির সামনেই দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন এক ব্যবসায়ী। দুষ্কৃতীরা প্রথমে মাথায় আঘাত করে তাঁকে মাটিতে ফেলে দেয়। তার পরে তাঁর শরীরের উপর দিয়েই চালিয়ে দেয় তাঁরই গাড়ি। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এই ঘটনার পরে ফরাক্কার খয়রাকান্দির বাসিন্দা মানব সাহা (৪৪) নামে ওই ব্যবসায়ীর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে।
মানববাবু ব্যাটারির ব্যবসায়ী। সেই সঙ্গে গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ব্যবসাও রয়েছে। তাঁদের আদি বাড়ি মুর্শিদাবাদেরই আহিরণে। এলাকায় মিশুকে স্বভাবের মানুষ বলেই পরিচিত মানববাবু দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন এনটিপিসি মোড় লাগোয়া খয়রাকান্দির দোতলা বাড়িতে। অন্য দিনের মতোই এই দিনও ওই বাড়ির সামনেই রাখা ছিল তাঁর দু’টি গাড়ি। তাঁর বড় মেয়ে মাম্পি সাহা জানায়, রাতে হঠাৎ গাড়ি চালানোর শব্দ শুনে মানববাবু বাইরে গিয়ে দেখেন, ‘লক’ ভেঙে তাঁদের একটি গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করছে কয়েক জন দুষ্কৃতী। তিনি প্রথমে চিৎকার করেন। তার পরে নিজেই দাঁড়িয়ে পড়েন গাড়ির সামনে। মাম্পি বলে, “তখন আমরা বেরিয়ে দেখি এক জন দুষ্কৃতী বাবার মাথায় আঘাত করে মাটিতে ফেলে দিয়েছে। তার পরে চোখের সামনেই ওই গাড়িটা বাবার উপর দিয়েই চালিয়ে দেয় তারা।” ইতিমধ্যে আওয়াজ পেয়ে পাড়া প্রতিবেশীরাও বেরিয়ে এসেছিলেন। দুষ্কৃতীরা তখন গাড়িটিকে ওই অবস্থায় ফেলে রেখেই পালিয়ে যায়। |
|
মানব সাহার শোকার্ত পরিবার। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায় |
মানববাবুকে খুনের প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা শুক্রবার সকালে ঘণ্টা দু’য়েক ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। অবরোধে সামিল হন কংগ্রেস, সিপিএম ও তৃণমূল নেতারাও। কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হক বলেন, “দুষ্কৃতীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ তাই স্বাভাবিক।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবুল হাসনাৎ খানের কথায়, “এই এলাকায় প্রায়ই গাড়ি চুরি হয়। কিন্তু পুলিশ কোনও দিকে নজর দেয় না।” তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সদস্য ফুরকান শেখ বলেন, “কেন এত গাড়ি চুরি হচ্ছে, তার জবাব দেওয়ার দায় তো পুলিশেরই।”
পুলিশ অবশ্য এই দিন রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করাও যায়নি। জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে দুষ্কৃতীরা পাশের রাজ্য থেকে এসেছিল। আমরা কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছি। ফরাক্কায় গিয়ে আমি নিজেই তদন্তের হাল ধরব।” তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশের বিরুদ্ধে মানুষের কী ক্ষোভ রয়েছে, তাও শুনব। তারপরে প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|