পূর্ব কলকাতা
বিধাননগর
বিপর্যয় রোধে
বশেষে বিধাননগরে বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থা গড়ে উঠতে চলেছে। আপাতত চলছে পরিকল্পনা।
অভিযোগ, এত দিন বিধাননগরে বিপর্যয় মোকাবিলার ব্যবস্থা কার্যত ছিল না। অনেকে বাসিন্দাই স্থানীয় দমকল কেন্দ্রে যোগাযোগের নম্বর জানেন না। সংযুক্ত এলাকায় অনেক জলাশয় রয়েছে। সেখানে কোনও বিপদ ঘটলে ত্রাণের উপায় নেই। বার বার প্রতিশ্রুতি পেলেও বাস্তবে কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। অবশেষে সেই ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা হচ্ছে বলে দাবি পুরকর্তৃপক্ষের।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিধাননগরের বাজারগুলিতে একাধিক কেরোসিন ভর্তি ব্যারেল মজুত থাকে। কিন্তু আগুন লাগলে তার মোকাবিলায় রয়েছে কয়েকটি মাত্র অগ্নিনির্বাপক। অনেকেরই সে যন্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নেই। সম্প্রতি এক অভিযানে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দেখতে পান, মজুত করা কেরোসিন ব্যারেলের পাশে স্টোভ জ্বালিয়ে রান্না চলছে। খাদ্যমন্ত্রী জানান, এর পরে বাজারে কেরোসিন মজুত রাখা যাবে না।
বিধাননগরের পেট্রোল পাম্পগুলিও রয়েছে জনাকীর্ণ অঞ্চলে। কোথাও চারপাশে বসতি। কোথাও লাগোয়া হাসপাতাল। মাঝে শুধু সরু পাঁচিল। বিধাননগরবাসীর আশঙ্কা, অগ্নিকাণ্ড ঘটলে অনেকে হতাহত হবেন। পাশাপাশি, রেস্তোরাঁয় কী ভাবে রান্না হচ্ছে তাও পরীক্ষা করা হয় না বলে তাঁদের অভিযোগ। যেমন, ইএ ব্লকের বাসিন্দা তুষার ভট্টাচার্য বললেন, “সল্টলেক ও পাঁচ নম্বর সেক্টরে অনেকেই বিপজ্জনক ভাবে গ্যাস জ্বালিয়ে রান্না করেন। অনেকে এ সব দোকানে যান। বিপদ ঘটলে প্রাণহানিও হতে পারে।”
ঝড় কিংবা ভারী বৃষ্টিতেও নানা সমস্যা হয়। গাছ উপড়ে পড়ে। জল জমে যায়। কিন্তু এর থেকেও নানা বিপদ ঘটতে পারে। এ বিষয়েও পুরসভা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। বাসিন্দাদের সংগঠন বিধাননগর (সল্টলেক) ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, “দেরিতে হলেও বিপর্যয় মোকাবিলাটা ভাল চেষ্টা। পাশাপাশি, সচেতনতা বাড়ানোর দিকে জোর দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে বাসিন্দাদের সঙ্গে প্রশাসনের দূরত্ব কমাতে হবে।”
বিধাননগরের মহকুমাশাসক মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, বিপর্যয় মোকাবিলা সম্পর্কিত একটি কমিটি গঠন করা হবে। তা নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে মহকুমা প্রশাসন ছাড়াও পুর ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধিরাও হাজির ছিলেন। পুরসভা সূত্রে খবর, স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘস্থায়ী খসড়া প্রকল্প গড়ে তোলার পরিকল্পনা হয়েছে। প্রধানত আগুন ও জল থেকে বিপর্যয় হতে পারে। আশঙ্কাগুলি চিহ্নিত করা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া এই দু’ভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তবে জলের তুলনায় আগুনের ক্ষেত্রে সময় কম মেলে। ফলে অগ্নিনির্বাপণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিধাননগর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত বলেন, “দমকল কেন্দ্রের মানোন্নয়ন করা প্রয়োজন। বাসিন্দাদের কাছে পুলিশের মতো দমকল দফতরের নম্বরগুলি প্রচারিত করার বিষয়েও গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি, অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের একটি দলকে বিধাননগরে মজুত রাখা-সহ নানা দিক থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে সার্বিক একটি প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হবে।”


ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.