সমস্যা মিটবে তো, প্রশ্ন নলহাটির
প্রচার পর্ব শেষ। রাত পোহালেই নলহাটিতে পুরভোট। নেতাদের বক্তৃতা থাকবে না। শুনতে হবে না ঝুড়ি ঝুড়ি গালভরা প্রতিশ্রুতির কথা। রাত পর্যন্ত মিছিল, রোডশো, বাইক বাহিনীর ‘দাপাদাপি’-র দিনও আপাতত শেষ। কাজের কাজটা হবে কি?
শুক্রবার পুরভোটের প্রচারের শেষে নলহাটির বাসিন্দারা তাঁদের ক্ষোভের কথা এ ভাবেই শোনালেন। বললেন, ভোট আসে ভোট যায়। যে কোনও ভোটের আগেই নেতা, প্রার্থীদের মুখে শুধুই প্রতিশ্রুতি ঝরে। আর শুনতে পাওয়া যায় বিরোধী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আক্রমণের ‘বুলি’। ভোট পর্ব মিটে গেলে প্রতিশ্রুতি খুব একটা বাস্তবায়িত হয় না।
প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির এই দোলাচলে নলহাটি পুরসভার তৃতীয় বারের নির্বাচন। বেশি মাত্রায় আর্দ্রতায় ভোটাররা ঘামে জবজবে হবেন, না অল্প বৃষ্টিতে বুথে পৌঁছনোর পথে আবর্জনা ভরা নর্দমার কালো জলে তাঁদের পা ভিজবে এখন সেটাই দেখার। এত কিছুর মধ্যেও কোনও এক অদৃশ্য অঙ্গুলি হেলনে রেলগেট পড়লেই স্তব্ধ হয়ে যায় নলহাটির গতি। এখনও রাস্তার উপরে বসা সব্জি বাজার, ফলের দোকান-সহ আরও রকমারি দোকান ডিঙিয়ে সাবধানে পা ফেলে শহরে ঢুকতে হয়। এখনও পুরসভার বহু জায়গায় নিকাশি নালা খোলা। খেলার সময় পড়ে গিয়ে শিশুরা অসুস্থ হয়ে যায়। কোথাও দু’টি গাড়ি পাশাপাশি গেলে রাস্তার পাশে দাঁড়ানো যায় না। শুধু তাই নয়, নিজস্ব ভবন না থাকায় এখনও আকাশে মেঘ দেখলে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ছেলেমেয়েদের গাছতলা থেকে সরিয়ে এলাকার লোকেরবাড়ি, মন্দির কিংবা প্রাথমিক স্কুলে আশ্রয় নিতে হয়।
তাঁরা বললেন
পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা করা হয়েছে। সীমান্তবর্তী ঝাড়খণ্ড ও মুর্শিদাবাদ
এলাকা সিল করা হয়েছে। ১৬টি জায়গায় ৩০টি বুথে ভোট
গ্রহণ হবে। স্পর্শকাতর ওয়ার্ড ৮, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৫।
-হৃষিকেশ মিনা

অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে

একটা ‘কংগ্রেস’ তো জিতবেই।
অনুব্রত মণ্ডল

আমরা সব ওয়ার্ডে জিতব।
বিরোধী শূন্য বোর্ড হবে।


বিপ্লব ওঝা

১২টির বেশি ওয়ার্ডে জিতব।
প্রমাণ হয়ে যাবে।
দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায়

গত বারের চেয়ে এ বার
আমাদের ভাল ফল হবে।


দীপক চট্টোপাধ্যায়

প্রচারে যে ভাবে সাড়া
পেয়েছি, ফল ভাল হবে।
সৈয়দ সিরাজ জিম্মি

কংগ্রেসের বোর্ড হবে।


অনিল সিংহ

১১টিতে প্রার্থী আছে।
আশা রাখছি।
বাসিন্দারা জানান, ১১ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে কোনও প্রাথমিক স্কুল গড়ে ওঠেনি। আজও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে রেললাইন পেরিয়ে কিংবা দেড় কিমি পথ হেঁটে স্কুলে যেতে হয়। নিকাশি নালার অভাবে অল্প বৃষ্টিতে অশোকপল্লি, ছায়াপল্লি, পূর্বপল্লি এলাকায় জল জমে যায়। দিনের বেলায় নলাটেশ্বরী পাহাড় থেকে মোরাম চুরি হয়ে যাচ্ছে। তাঁদের ক্ষোভ, প্রচারে আসা প্রার্থীদের বললেই, তাঁ বলেন, জিতলে সমস্যা মিটে যাবে। ভোটের পরে হচ্ছে হবে বলে তাঁরা কাটিয়ে দিচ্ছেন। সমস্যা তিমিরেই থেকে যাচ্ছে। দশ বছর ধরে পুরসভা ৭০০ মিটার একটা হাইড্রেন নির্মাণ করছে। মেন রাস্তার উপরে হিউম পাইপ সরিয়ে কালভার্ট করলেই সমস্যা মিটে যাবে। আজও সেটাই হল না।
তাই রাজনৈতিক মহলের ধারনা, এ বারের পুরভোট পুরপ্রধান বিপ্লব ওঝা বনাম এলাকার উন্নয়নের। রাজনৈতিক এই চাপান-উতোরের মধ্যে কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী প্রচারে এসে বিপ্লব ওঝার ৮ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে দাঁড়ানো নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর প্রশ্ন, “এমন কী হল, যে তাঁকে দু’টি ওয়ার্ডে দাঁড়াতে হচ্ছে?” যদিও বিপ্লববাবুর জবাব, “দুই ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের চাহিদা ও দলের নির্দেশে দুই ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছি।” জিতলে তো একটা ওয়ার্ড থেকে সরে যেতে হবে? বিপ্লববাবু বলেন, “সরে যেতে হবে কি না আইন জানা নেই। তবে এই মুহূর্তে এ ব্যাপারে বেশি কিছু মন্তব্য করব না।” অন্য দিকে, ভোট প্রচারে এসে মৎস্য প্রতিমন্ত্রী সুব্রত সাহা বলেছিলেন, “পুরসভার নির্বাচন এ বারে দলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। পুরসভায় তৃণমূলের হাত শক্ত করা মানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করা।” তবে বিপ্লববাবুর কথায়, “যাঁরা সমালোচনা করছেন তাঁরা, উন্নয়নের কথা বলছেন না। ব্যক্তিগত কুৎসা রটাচ্ছেন।” এই সব অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের মধ্যে না গিয়ে কংগ্রেস বিধায়ক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হবে। একটা ‘কংগ্রেস’ তো জিতবেই।” কংগ্রেস ও তৃণমূলের শরিকি লড়াইয়ে বামফ্রন্ট কতটা ফায়দা তুলতে পারবে এখন সেটাই দেখার।
রাজনৈতির চাপান-উতোর যাই থাক, পুর এলাকার বাসিন্দাদের মূল সমস্যা এখনও মেটেনি। যানজট সমস্যায় জর্জরিত নলহাটিবাসীর একটাই প্রশ্ন, আর কত নির্বাচন গেলে সমস্যা মিটবে?



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.