|
|
|
|
বনধে মিশ্র প্রভাব হুগলিতে, হাওড়ায় বাস ভাঙচুর |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
বিজেপির ডাকা বনধে মিশ্র প্রভাব পড়ল হুগলি এবং হাওড়া জেলায়।
সকালে বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করেন বন্ধ সমর্থনকারীরা। তবে, পুলিশ তৎপর থাকায় কোনও জায়গাতেই অবরোধ বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয়নি। কোথাও আবার নিত্যযাত্রীরাই রুখে দাঁড়িয়েছেন অবরোধকারীদের বিরুদ্ধে। জেলার পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী জানান, গোটা জেলায় ৭৩ জন বন্ধ সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে। |
|
অচল দিনের সচল ছবি। আরামবাগ বাস টার্মিনাসে মোহন দাসের তোলা ছবি। |
সকাল ৬টা নাগাদ দলের জেলা সভানেত্রী কৃষ্ণা ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে বেশ কিছু বিজেপি সমর্থক কোন্নগর স্টেশনে অররোধ করেন। আপ সিঙ্গুর লোকাল আটকে দেন তাঁরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তবে তার আগেই অবরোধ তোলার দাবিতে সরব হন নিত্যযাত্রীরা। বন্ধ সমর্থনকারীরা অবশ্য অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু যাত্রীদের সমবেত প্রতিবাদে বেশি ক্ষণ অবরোধ চালাতে পারেননি তাঁরা। মিনিট পনেরোর মধ্যেই তুলে নেওয়া হয় অবরোধ। কোন্নগর ছাড়াও হুগলি, সিমলাগড়, রিষড়া, শ্রীরামপুর, কৈকালা, ডানকুনি, বারুইপাড়া, ত্রিবেণী স্টেশনে অবরোধ হয়। ডানকুনিতে অবরোধের ফলে আপ শতাব্দী এবং ডাউন কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস কিছু ক্ষণের জন্য দাঁড়িয়ে পড়ে। চন্দননগর, চুঁচুড়া, চাঁপদানি, পাণ্ডুয়া, ভদ্রেশ্বর, খন্যান-সহ নানা জায়গায় রাস্তা অবরোধ করা হয়।
সকাল ৭টা নাগাদ হুগলি স্টেশনে অবরোধ হয়। লাইনের উপর সুপুরি গাছের গুঁড়ি ফেলে দেন অবরোধকারীরা। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশেষ বিশ্বাস বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। লাঠি উঁচিয়ে অবরোধকারীদের হঠিয়ে দেয় পুলিশ। রবীন্দ্রনগর বাজার এলাকায় জি টি রোডে দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক স্বপন পালের নেতৃত্বে বেশ কিছু বিজেপি সমর্থক অবরোধ করেন। এখানেও লাঠি উঁচিয়ে অবরোধকারীদের তাড়া করে হঠিয়ে দেয় পুলিশ। স্বপনবাবু-সহ কয়েক জনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়। চুঁচুড়ায় বাটার কাছে তৃণমূল সমর্থকদের সঙ্গে বন্ধ সমর্থনকারীদের হাতাহাতি হয়। এ দিন রাস্তাঘাটে বাস তেমন চোখে পড়েনি। তবে, অটোরিকশা, ট্রেকার চলেছে। কিছু কিছু জায়গায় দোকানপাট বন্ধ ছিল। |
|
বনধের দিনে। উলুবেড়িয়ায় বাসে ভাঙচুর। ছবি: হিলটন ঘোষ। |
বিজেপি-র দাবি, বনধে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সাধারণ মানুষ সাড়া দিয়েছেন। স্বপনবাবুর অভিযোগ, “বন্ধ ব্যর্থ করতে পুলিশ অতি সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল। তৃণমূলও একই কারণে রাস্তায় নেমেছিল।” বনধে সরকারি দফতরে উপস্থিতির হার সরেজমিনে দেখতে বের হন চাঁপদানির তৃণমূল বিধায়ক মুজফ্ফর খান। চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারও সরকারি দফতর ঘুরে দেখেন।
আরামবাগ মহকুমায় বাস চলেছে খুব কম। অধিকাংশ জায়গাতেই দোকানপাট খোলা ছিল। খানাকুলের রামনগর মোড়ে অবরোধের চেষ্টা করলে ৩ বিজেপি সমর্থককে গ্রেফতার করে পুলিশ। মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগীর দাবি, সরকারি অফিসগুলিতে ১০০ শতাংশ হাজিরা ছিল। |
|
পুলিশের হাতে পাকড়াও বন্ধ সমর্থকারী। চুঁচুড়ায় তাপস ঘোষের তোলা ছবি। |
হাওড়ার উলুবেড়িয়ার রঘুদেবপুরে মুম্বই রোডে বনধ সমর্থকরা একটি সরকারি বাসে ভাঙচুর করে। আগুন ধরানোরও চেষ্টা হয়। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। ঘটনাস্থল থেকে কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়। উলুবেড়িয়ার গরুহাটা মোড়েও এ দিন সকালে একটি সরকারি বাসে ভাঙচুর করে বনধ সমর্থনকারীরা। খলিসানি, রঘুদেবপুরে কিছু ক্ষণের জন্য মুম্বই রোড অবরোধ করা হয়। সব জায়গাতেই পুলিশ দ্রুত অবরোধ তুলে দেয়। হাওড়া-খড়্গপুর শাখার চেঙ্গাইল এবং বাউরিয়া স্টেশনে কিছুক্ষণের জন্য অবরোধ হয়। সেখানেও পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে। জেলা পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিভিন্ন অভিযোগে মোট ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” এ দিন বাগনান, আমতা, উলুবেড়িয়া প্রভৃতি জায়গায় বেসরকারি বাস, অটোরিকশা, ট্রেকার চলেনি। তবে, সরকারি বাস চলেছে। |
|
|
|
|
|