দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
|
মুক্তির আশা |
নয়া নিকাশি |
দেবাশিস দাস |
জমা জলের যন্ত্রণা থেকে এলাকাবাসীদের মুক্তি দিতে নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজার পরিকল্পনা করেছে বারুইপুর পুরসভা।
এত দিন বারুইপুর পুরসভার নিকাশি ব্যবস্থার সিংহভাগই নির্ভরশীল ছিল নর্দমার উপরে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই নর্দমাগুলির কোনও আউটলেট নেই। কিছু অংশের জল গিয়ে বারুইপুর-সংলগ্ন আদিগঙ্গায় মিশলেও বেশির ভাগটাই জমছে নর্দমায়। ফলে কয়েক পশলা বৃষ্টিতেই নর্দমার জল উপচে বারুইপুর শহরের বিভিন্ন জায়গায় জল জমে। প্রতি বর্ষায় বাসিন্দাদের এ দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
|
 |
তৈরি হচ্ছে নতুন নিকাশি ব্যবস্থা |
দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে ১৭টি ওয়ার্ডের বারুইপুর এলাকার নিকাশি-ব্যবস্থাকে দু’ভাগে ভাগ করে কাজ শুরু করেছে পুরসভা। সহায়তা করছে ‘ইনস্টিটিউট অফ এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ওয়েটল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’।
বারুইপুর পুরসভা-সূত্রে খবর, ৯ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝে বাসুদেবপল্লি-সংলগ্ন এলাকায় সেচ দফতরের কাছ থেকে ২.১৬২ একর জমি পেয়েছে পুরসভা। পাশাপাশি, পুরসভা সেখানে ১১ শতক জমি কিনেছে। এই জমিতেই ইনস্টিটিউট অফ এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ওয়েটল্যান্ড ম্যানেজমেন্টের সহায়তায় একটি অত্যাধুনিক সোয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। রাজ্য সরকারও সব রকম সহায়তা করছে বলে পুরসভা-সূত্রে খবর।
এলাকায় বেশ কয়েকটি পাম্প হাউস তৈরির পরিকল্পনাও করা হয়েছে। এই সব পাম্প হাউসের সাহায্যে এলাকার নোংরা জল জমা হবে সোয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে। পরে তা পরিশোধন করে ফেলা হবে আদিগঙ্গায়। ফলে সংস্কার হওয়া আদিগঙ্গার একটা বড় অংশ দূষিত জলের হাত থেকে রেহাই পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিকল্পনা কার্যকর হলে পুরসভার ৬-১১, ১৪ (একাংশ) ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জমা জলের দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। |
 |
যেমন রয়েছে নিকাশি ব্যবস্থা |
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, গঙ্গায় নোংরা জল পরিশোধন না করে ফেলা যাবে না। কিন্তু অপরিকল্পিত নিকাশি ব্যবস্থার জন্য বারুইপুর শহরের নোংরা নিকাশি জলের বেশির ভাগটাই এখনও মিশছে আদিগঙ্গায়। নতুন প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলে পুর কর্তৃপক্ষের আশা।
‘ইনস্টিটিউট অফ এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ওয়েটল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’-এর অধিকর্তা রচপাল সিংহ কাহালোঁ বলেন, “এই কাজ শেষ হলে ওই এলাকার দূষিত জল আর আদিগঙ্গায় মিশবে না।”
পাশাপাশি, ২-৫, ১৩ এবং ১৪ (একাংশ) নম্বর ওয়ার্ডে জমা জলের সমস্যা দূর করতে নিকাশি ব্যবস্থাকে উন্নত করার কাজও শুরু করেছে বারুইপুর পুরসভা। এই সব এলাকার নিকাশির জল মদারাট এলাকার মধ্য দিয়ে গিয়ে ফর্দির পোলের কাছে আড়াপাঁচ খালে ফেলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। |
|
পুরসভা-সূত্রে জানা গিয়েছে, নিকাশি ব্যবস্থার কিছু কাজ এরই মধ্যে হয়ে গিয়েছে। বাকি কাজের জন্য কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (কেএমডিএ) মাধ্যমে জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশনের (জেএনএনইউআরএম) দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে।
বারুইপুর পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের শক্তি রায়চৌধুরী বলেন, “আশা করছি আগামী দু’বছরের মধ্যে কাজ শেষ করা যাবে।”
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|