অপসারিত টিডি
আমি ব্যর্থ কোথায়, প্রশ্ন সুব্রতর
তাঁকে টিডির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়াকে ‘দুঃখের’ বললেও, তিনি যে ব্যর্থ মানতে নারাজ সুব্রত ভট্টাচার্য। “ইস্টবেঙ্গলের কাছে একবারও হারিনি। দু’বার জিতেছি। একবার ড্র। চার্চিলকে দু’বার হারিয়েছি। যে সাফল্য মোহনবাগান আই লিগে কখনও পায়নি। কলকাতা লিগে রানার্স, আই লিগে চার নম্বর। তুলনামূলক ভাবে তো আমি সফল। ব্যর্থ কোথায়?” কর্তাদের চ্যালেঞ্জ না করেও বৃহস্পতিবার এই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন সদ্য অপসারিত টিডি।
সরকারি ভাবে কর্তারা এখনও কিছু না বললেও, সুব্রতকে ছেঁটে ফেলার পিছনে মূলত দু’টো কারণ দেখানো হচ্ছে। এক) কোনও ট্রফি দিতে পারেননি সুব্রত। দুই) ফুটবলারদের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল নয়। আগের সুব্রত হলে এ সব শুনে চাঁচাছোলা ভাষায় কর্তাদের বিরুদ্ধে কামান দাগতেন। কিন্তু কোচ বা ফুটবলার হয়ে মোহনবাগানকে ৬৮ ট্রফি জেতানো চির বিতর্কিত সুব্রত তো এখন ‘অন্য মানুষ’। গত আট মাসে কোচিং করতে এসে তিনি যে বদলে গিয়েছেন সেটা ধরা পড়েছে সবার চোখেই। কোনও বিতর্কে তো জড়াননিই, এড়িয়ে চলছেন সব ঝামেলা।
সেই বদলে যাওয়া সুব্রতর মুখ থেকে তাই বেরিয়েছে, “কর্তারা আমাকে সরাতেই পারেন। সে অধিকার ওদের আছে। তবে ওঁরাই তো ক্লাবের বিপদের সময় আমাকে ডেকে এনেছিলেন। টিমের হাল দেখে বলেছিলেন, আই লিগে চার নম্বরের মধ্যে থাকলেই খুশি হবেন। আমি যখন বলেছিলাম, ‘পরের বার আমি থাকি বা না থাকি ডিফেন্সটা একটু ভাল করবেন’ তখন টুটুদা আমার পিঠে হাত রেখে বলেছিলেন সুব্রতর সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তি করো।”
কিছুক্ষণ পরই অবশ্য সদ্য প্রাক্তন মোহন টিডির গলা থেকে বেরিয়ে আসে জেদ “ওয়েঙ্গারও তো আট বছর ট্রফি পায়নি। এ বার ৩৮ ম্যাচে আমি কোচিং করিয়েছি। একটা ম্যাচেও পুরো টিম পাইনি। টিমটার ফিটনেস লেভেল কোথায় ছিল সবাই দেখেছেন। মরসুমের শুরুতে কোনও ফিজিক্যাল ট্রেনিংই হয়নি। ফলে চোট হয়েছে, আমাকে ভুগতেও হয়েছে। আর ফুটবলারদের সঙ্গে সম্পর্ক। ঘরভর্তি কর্তার সামনেই তো ওডাফা আমাকে বলেছিল, কোচ, তুমি থাকলে আমি থাকব।”
ট্রফিহীন সন্তোষ কাশ্যপকে একক ভাবে দায়িত্ব দিয়ে আনছে বাগান। সুব্রতকে ছাঁটাই করে টিডির পদটাই তুলে দেওয়া হচ্ছে। আনন্দবাজারের এই খবরে তীব্র প্রতিক্রিয়া ময়দানে। সবুজ-মেরুন তাঁবুতেও। ফেসবুকে উপচে পড়ছে সমালোচনার ঝড়। কর্তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা ভাষার ক্ষোভও। এ দিন রাস্তায় বেরিয়ে সেটা টেরও পেয়েছেন মোহনবাগানের ঘরের ছেলে। সদস্য-সমর্থকদের এই আবেগ দেখেই বারবার তার গলায় ধরা পড়েছে অভিমান। “আমি নিজে কখনও সরে যাইনি। খেলোয়াড় জীবন বা কোচিং জীবনে ক্লাবের দুঃসময়ে সব সময় সামনে থেকে সাহায্য করেছি। কখনও পালিয়ে যাইনি। এ বারও যখন আমার ক্লাব বিদেশি কোচের হাতে পড়ে ডুবে গিয়েছে তখন হাল ধরতে ডাকা হয়েছিল। ক্লাবকে ফেরাইনি। সৎ ভাবে চেষ্টা করেছি। তা সত্ত্বেও সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে শুনে দুঃখ পেয়েছি। এ ভাবে যত বার সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তত বারই দুঃখ এবং যন্ত্রণা পেয়েছি।”
দু’বছর ট্রফিহীন মোহনবাগান যদি এ বারও মাঝপথে বিপদে পড়ে, ডাকলে ফের দায়িত্ব নেবেন? পালতোলা নৌকোর বহু চড়াই উতরাই পেরোনো সুব্রত বাস্তবের রুক্ষ জমিতে। “তখন পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেব। এখন কী ভাবে বলব?”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.