প্রতিবাদে পথ অবরোধ বসিরহাটে
পারিবারিক বিবাদের জেরে লাঠি চালাল পুলিশ, অভিযোগ
পারিবারিক গণ্ডগোলকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার বাধল বসিরহাটের ত্রিমোহিনীতে। বুধবার রাতে পুলিশ কিছু বাড়িতে ঢুকে এলোপাথাড়ি লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার সকালে ওই এলাকায় টাকি রোড অবরোধ করে জনতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স নামাতে হয়। অসহনীয় গরমের মধ্যে অবরোধের জেরে চূড়ান্ত দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে হয় সাধারণ যাত্রীদের। বসিরহাটের এসডিপিও আনন্দ সরকার বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। নিরীহ মানুষের উপরে পুলিশ লাঠি চালিয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি জমির দখলকে কেন্দ্র করে ত্রিমোহিনীর পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা রশিদ খাঁয়ের সঙ্গে বিবাদ চলছিল তাঁরই প্রতিবেশী রুস্তম খাঁয়ের। এলাকাবাসীর অভিযোগ, রশিদ ও তাঁর আত্মীয়েরা নানা সময়ে কারণে-অকারণে প্রতিবেশীদের উপরে চড়াও হন। পুলিশ মহলে ‘প্রভাব’ থাকায় থানাও তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না। মঙ্গলবার রশিদ একটি বাচ্চাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। তাকে ভর্তি করা হয় কলকাতার হাসপাতালে।
পুলিশের বিরুদ্ধে অবরোধ।-নিজস্ব চিত্র।
এই ঘটনায় আগুনে ঘি পড়ে। রশিদ, তাঁর ছয় শ্যালক ও নিকট আত্মীয় নুর ইসলাম ওরফে ভুট্টো গাজিদের গ্রেফতারের দাবিতে সোচ্চার হয় স্থানীয় মানুষ। পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার রশিদ ও রুস্তমের পরিবারের দু’টি বাচ্চার মধ্যে খেলার সময়ে গোলমাল বেধেছিল। তাকে কেন্দ্র করে বড়রাও বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। অভিযোগ, রশিদ, তাঁর শ্যালক জবেদ গাজি, ভুট্টোরা রুস্তমের পরিবারের উপরে চড়াও হন। ওই ঘটনায় দু’পক্ষের কয়েক জন জখম হন। দশ বছরের একটি শিশু-সহ তিন জনকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ রশিদ-সহ উভয় পক্ষের দু’জনকে গ্রেফতারও করেছিল। পরে জামিনে তাঁরা ছাড়া পান। বুধবার রাতে আশা খাতুন নামে জখম শিশুটিকে স্থানান্তরিত করা হয় আরজি কর হাসপাতালে। এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।
সে সময়ে জবেদের দোকানে ভাঙচুর চলছে বলে অভিযোগ আসে পুলিশের কাছে। অভিযোগ, বুধবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ বসিরহাটের আইসি-র নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী রশিদের ‘কথায়’ বাড়ি বাড়ি ঢুকে ‘নিরীহ মানুষ’কে লাঠিপেটা করে। কয়েক জন জখম হন।
এরই প্রতিবাদে সকাল ১০টা নাগাদ ত্রিমোহিনীতে আগুন জ্বেলে, বেঞ্চ পেতে টাকি রোড অবরোধ শুরু করেন স্থানীয় মানুষজন। বসিরহাটের এসডিপিও বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে বিক্ষোভের মুখে পড়েন। গুলফাম রহমান নামে এক ব্যক্তি এসডিপিওকে বলেন, “মাছের আড়তে বসে কাজ করছিলাম। হঠাৎ সেখানে ঢুকে পুলিশ চোর-ডাকাতের মতো পেটায় আমাকে।” চায়ের দোকানের মালিক জোহরা বিবি বলেন, “সাতে পাঁচে থাকি না। গণ্ডগোল হচ্ছে দেখে চলে যাচ্ছিলাম। পুলিশ এসে আমাকে পেটাতে শুরু করে।” জনতাকে শান্ত করতে মাইক হাতে এসডিপিও ঘোষণা করেন, সমস্ত অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে। দোষীদের গ্রেফতার করা হবে। এরপরেই বেলা ১টা নাগাদ অবরোধ ওঠে।
পুলিশের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, দু’টি পরিবারের বিবাদকে কেন্দ্র করে পুলিশ যে ভাবে সাধারণ মানুষের উপরে লাঠি চালিয়েছে, তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আইসি-র অপসারণও দাবি করেছেন কেউ কেউ। লাঠির ঘায়ে ২০-২৫ জখম হয়েছেন বলে রাজনৈতিক নেতৃত্বের একাংশের দাবি।
রশিদ ও তাঁর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে জবেদের মা শামসুল নাহার বলেন, “আমরা হোটেল করেছি। সেটা অনেকের সহ্য হচ্ছে না। মিথ্যা প্রচার চালিয়ে মানুষকে আমাদের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলা হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.