পাঁচটি খুন-সহ মোট ১৩টি অপরাধের ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী আপেল শেখকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে কেতুগ্রামের খলিপুরে তার বাড়ি থেকে আপেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের কাছ থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ও পাঁচ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে।
২০১০-এর ২০ মে কেতুগ্রামে দুই ডিওয়াইএফ কর্মী বাণেশ্বর হাজরা ও লক্ষ্মী হাজরা খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত আপেল। সে বছরেই খুন হন সিপিএম কর্মী মালেক শেখ। সেই ঘটনাতেও আপেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। গত বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সুকুর মোল্লা নামে এক ব্যক্তি খুন হন বলে অভিযোগ। আপেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সেই ঘটনাতেও। ২০০৯ সালে খেলুন শেখ ও আমিন শেখ নামে দু’জনকে খুনেও অভিযুক্ত আপেল। এ ছাড়া দু’বার পুলিশকে লক্ষ করে বোমাবাজির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বেশ কয়েকটি ঘটনায় আপেলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি ছিল। |
পুলিশ জানায়, বারবার তল্লাশি চালিয়েও খোঁজ মেলেনি আপেলের। বৃহস্পতিবার কেতুগ্রামের আইসি আব্দুল গফ্ফরের নেতৃত্বে চেঁচুড়ি গ্রামে অন্য এক অভিযুক্তকে ধরতে যায়। তাকে না পেয়ে ফিরে আসার পথে আইসি খবর পান, আপেল খলিপুর গ্রামে রয়েছে। তখন পুলিশ আপেলের বাড়ি যায়। পুলিশ ঘিরে ফেলায় আপেল পালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তাকে ধরে ফেলা হয়। তার কাছ থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল মেলে। থানায় নিয়ে গিয়ে তাকে জেরা করার পরে অন্য অস্ত্রগুলি উদ্ধার করে পুলিশ।
সিপিএমের ভাগীরথী-অজয় জোনাল কমিটির সদস্য তপন কাজির দাবি, “গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি থাকা সত্ত্বেও পুলিশ আপেলকে ধরছিল না। সে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াত। ওই দুষ্কৃতীকে ধরার জন্য এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন দাবি জানাচ্ছিলেন। তৃণমূলেরই এক গোষ্ঠীর চাপে পুলিশকে তাকে ধরতে বাধ্য হল।” তৃণমূলের কেতুগ্রাম ১ ব্লক সভাপতি রত্নাকর দে-র পাল্টা বক্তব্য, “আপেল আমাদের সক্রিয় কর্মী। দলের জন্য তাঁর অনেক অবদান রয়েছে। সিপিএম এবং পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ এনেছিল।”
জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ছিল। এ দিন তাকে ধরা হয়েছে। শুক্রবার আদালতে তুলে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হবে।” |