১৯০৫ সাল। স্বাধীনতার ঢের দেরি। মাথাভাঙা বালিকা বিদ্যালয় নারী শিক্ষার অগ্রগতির ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে ভর্তি হলেন রাজবংশী সমাজের এক ছাত্রী। ঘটনাটি তাৎপর্যপূর্ণ। এত দিন পর্যন্ত রাজবংশী সমাজে বাল্যবিবাহের অছিলায় মেয়েদের বিদ্যালয় শিক্ষা বন্ধ হয়ে যেত। এগিয়ে এলেন কোচবিহারের দেওয়ান ও স্টেট সুপারিনটেনডেন্ট ই ওয়াই হ্যাম। পরামর্শ দিলেন, বাল্যবিবাহিত ছাত্রীদের জন্য এই বিদ্যালয়ে একটি পৃথক কক্ষের বন্দোবস্ত করা হোক। বিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু ১৮৯৩-র ২১ এপ্রিল এক রাজকর্মচারীর বাড়ির বারান্দায়। বছরখানেকের মধ্যেই তা স্থানান্তরিত হয়। নারী শিক্ষা প্রসারে এই বিদ্যালয়ের প্রথম প্রধান শিক্ষক পণ্ডিত ভুবনমোহন কুণ্ডু, নায়েব আহিলকর চন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী, দারোগা কাশীচন্দ্র সরকার, বিদ্যালয় পরিদর্শক ভুবনমোহন চৌধুরী এবং মাথাভাঙাবাসীদের নিজস্ব প্রয়াস উল্লেখযোগ্য ছিল। ১৯১০-এ মাথাভাঙার জোতদার মহম্মদের স্ত্রী ছবিরুন্নেসা বিবি বিদ্যালয়ের নিজস্ব গৃহ নির্মাণের জন্য জমি এবং ৫০০ টাকা দান করেন। বর্তমান বিদ্যালয় ভবনটি গড়ে ওঠে ১৯৩৮-এ। ১৯৪৬-এ কোচবিহার রাজসরকার এটি অধিগ্রহণ করে। শিক্ষায়তনটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীনে আসে ১৯৫০-এ। তখন পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হত। এই সময়কালে এর নাম ছিল ছবিরুন্নেসা নিম্ন বুনিয়াদি বালিকা বিদ্যালয়। সময় ও ইতিহাসের রূপান্তর ঘটলেও মহকুমা মাথাভাঙার নারী শিক্ষা প্রচার ও প্রসার কল্পে বিদ্যালয়টির ভূমিকা আজও স্মরণীয়।
|
নব্যেন্দু ঘোষ। বাড়ি জামালদহ মেখলিগঞ্জে। নবেন্দ্যুকে মেখলিগঞ্জ চেনে অপরিচিত ভারসাম্যহীনদের-এর পাশে দাঁড়ানো এক তরুণ হিসেবে। সেই তরুণই চমকে দিলেন ১৪ দিনে ২৩ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করে। ফিল্ম ডিভিশন অব ইন্ডিয়া, মুম্বইয়ের প্রযোজনায় নির্মিত এই তথ্যচিত্রটির বিষয়: শকুনের হারিয়ে যাওয়া। শিরোনাম ‘ভালচারস অন রানি’ অসমের জোড়াশাল রিজার্ভ ফরেস্টর রানিতে রয়েছে শকুনের ক্যাপটিভ ব্রিডিং সেন্টার। নব্যেন্দু জানালেন, বোম্বে ন্যাচরাল হিস্ট্রি সোসাইটি (বিএনএইচটিএস) হরিয়ানার পিঞ্জর, অসমের রানি এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজাভাতখাওয়ার শকুন প্রজনন কেন্দ্রটি দেখভাল করে সংশ্লিষ্ট রাজ্যসরকারের সহায়তায়। বিশেষজ্ঞদের মতামত উপস্থাপন করে তিনি তথ্যচিত্রটিতে দেখিয়েছেন যে ডাইক্লোফেনাক নামের এক ধরনের রাসায়ানিকই শকুন হারিয়ে যাওয়ার প্রধান কারণ। ‘স্লেন্ডার বিলড’ এবং ‘হোয়াইট ব্যাকড’ প্রজাতির শকুন ছাড়াও তিনি তথ্যচিত্রটিতে তুলে ধরেছেন ‘হিমালয়ান গ্রিফন’ প্রজাতির শকুনদের কথা। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে শকুনের জুড়ি মেলা ভার। তাদের হারিয়ে যাওয়া এবং কী ভাবে অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়া থেকে তাদেরকে রক্ষা করা যায়, তার ওপর নির্মিত এই তথ্যচিত্রটি। নব্যেন্দুর আশা, তাঁর নির্মিত তথ্যচিত্র শকুন সংরক্ষণে সহায়ক হবে।
|
জলপাইগুড়ি শহরের প্রায় আশি শতাংশ জলাভূমি ভরাট করে ফেলা হয়েছে। অথচ আমাদের খাদ্য চাহিদার অনেকটাই যোগান দেয় জলাভূমি। পাশাপাশি জলাভূমি জলস্তর নিয়ন্ত্রণ করে আর বন্যার হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করে। প্রচুর সংখ্যক মানুষ যেমন জীবিকার কারণে জলাভূমির ওপর নির্ভরশীল তেমনি বাস্তুতন্ত্রও প্রভাবিত হয় জলাভূমির দ্বারা। জলাভূমি সংরক্ষণের ব্যাপারে মানুষের সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে জলপাইগুড়ির ‘সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাব’। সম্প্রতি সংস্থার সদস্যরা সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়গুলি মানুষের কাছে তুলে ধরেন একটি ট্যাবলোর মাধ্যমে। ছিল পথসভা। সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিষয়গুলি প্রচারপত্রের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন তাঁরা।
|
সম্প্রতি বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মায়া সেনের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল দক্ষিন দিনাজপুরের ‘বালুরঘাট রবীন্দ্রভবন’-এ। মায়া সেনের ছাত্রী শ্যামা সেন আয়োজিত এই তর্পণে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার শিল্পী মিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়। মিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথিতযশা সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর পুত্রবধূ। কঠিন তালের ধ্রুপদাঙ্গের গান শোনান তিনি। ‘করুণ সুরে’ শিরোনামের এই শ্রদ্ধাঞ্জলিতে রবীন্দ্রনাথের সেই সব গানকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল, যে সব গানে ‘সুর’ কথাটি রয়েছে। ‘আজি কোন সুরে’, ‘তুমি যে সুরের আগুন লাগিয়ে দিলে’ এমন কিছু গান পরিবেশন করা হয়।
|
ওঁদের কেউ শুধুই ‘ড্রাইভার’ বলে সম্বোধন করেন। আবার কেউ মানুষ বলে মানতেই চান না। অথচ সমাজকে সচল রাখার জন্য বিভিন্ন যান-চালকদের অবদান অনস্বীকার্য। সেই কথা ভুলে গিয়ে আমরা তাঁদের গালমন্দ করি। রাস্তায় দুর্ঘটনা হলে বা গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হলে তাঁদেরই সবার আগে আক্রমণের নিশানা করা হয়। এক বারও আমরা ভেবে দেখি না তাঁদের অবদান। প্রায় অর্ধেক দিন বা সারা রাত জেগে উত্তরবঙ্গ থেকে যাত্রীদের কলকাতায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য রাতের গহন অন্ধকার চিরে বাস ছুটিয়ে নিয়ে চলা এক ড্রাইভারকে প্রশ্ন করা হয়েছিল: আপনাদের কষ্ট হয় না? চালক এক গাল হেসে বলেছিলন, গর্বে বুক ভরে যায়। রাত-দিন কাজ করি বলে তো মানুষ গন্তব্যে পৌঁছতে পারে। তাঁদের অপরিমেয় কষ্ট, হাড়ভাঙা খাটুনি সভ্যতাকে সর্বদা গতিময় রেখেছে। সেলাম আপনাদের মতো অবিরত খেটে চলা, সভ্যতা সচল রাখা কারিগরদের।
|
উত্তরের কড়চা বিভাগে ছবি ও লেখা দিলে পুরো নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করবেন।
উত্তরের কড়চা
এ বি পি প্রাঃ লিমিটেড
১৩৬/৮৯ চার্চ রোড
শিলিগুড়ি ৭৩৪৪০১ |
|