তৃণমূলের পাত্রসায়রের আরও এক নেতার বিরুদ্ধে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের শ্রমিকদের জবকার্ড ও পাশবই আটকে রাখার অভিযোগ উঠল। সুবিমান ঘোষ নামের ওই বেলুট-রসুলপুর পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার স্থানীয় কাটোরা গ্রামের ২২ জন শ্রমিক পাত্রসায়রের বিডিও-র কাছে এই অভিযোগ করেছেন। আবার সে দিনই সন্ধ্যায় রসুলপুর বাজারে স্থানীয় কিছু লোকজন সুবিমানবাবুকে মারধর করে বলে অভিযোগ। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মঙ্গলবার পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের আশিস পাত্রের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ তুলেছিলেন স্থানীয় বীজপুর ও ভেটিয়া গ্রামের ১০০ দিন প্রকল্পের কিছু শ্রমিক। পাত্রসায়রের বিডিও বাপ্পাদিত্য দত্ত জানিয়েছিলেন, ওই অভিযোগের তদন্ত হবে। সুবিমানবাবুর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ নিয়েও তাঁর আশ্বাস, “তদন্ত করা হবে।” তবে এই অভিযোগের পিছনে আশিসবাবুর মতোই সুবিমানবাবুও তৃণমূলেরই অন্যগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা অভিযোগে’ মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। কাটোরা গ্রামে সুবিমানবাবুর বাড়ি। ১০০ দিনের প্রকল্পে তিনি শ্রমিকদের দিয়ে নিজের পুকুর সংস্কার করিয়ে তাঁদের জবকার্ড ও পাশবই আটকে রাখেন বলে অভিযোগ। কাটোরার বাসিন্দা তন্ময় বাগদি, অর্চনা বাগদি, বাবুলাল বাগদিদের অভিযোগ, “মাস দু’য়েক আগে ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে তাঁর কাঁকুড়ে পুকুরের মাটি কাটার কাজ হয়। সেই কাজের মজুরি এখনও আমরা পায়নি। তখন থেকেই আমাদের জবকার্ড ও পাশবই তিনি নিজের কাছে আটকে রেখেছেন। বার বার চাওয়া সত্ত্বেও তিনি ফেরত দেননি। তিনি আমাদের মজুরির টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
যদিও অভিযোগ সম্পূর্ন সাজানো ও মিথ্যা বলে দাবি করেছেন সুবিমানবাবু। এলাকায় তিনি ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়ের বিরোধী শিবিরের নেতা বলেই পরিচিত। সুবিমানবাবুর দাবি, “কারও জবকার্ড বা পাশবই আমি আটকে রাখিনি। কারও টাকা আত্মসাৎ করিনি। আমিও চাই প্রশাসন এ নিয়ে তদন্ত করুক।” তাঁর অভিযোগ, “আমি স্নেহেশদার বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর। তাই গ্রামের বিরোধী কিছু মানুষ স্নেহেশদার মদতে আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।” স্নেহেশবাবুর পাল্টা দাবি, “আমরা দলীয়ভাবে অন্যায় কাজ সমর্থন করি না। ১০০ দিন কাজ প্রকল্পে শ্রমিকদের জবকার্ড আটকে রাখা এবং তাঁদের মজুরির টাকা আত্মসাৎ করা আইন বিরোধী কাজ। প্রশাসনের কাছে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছি।”
আবার কাটোরা গ্রামের বাসিন্দা তারাপদ বাগদি সুবিমানবাবুর বিরুদ্ধে মারধর করার অভিযোগ করেছেন। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। এর কিছুক্ষণ পরে রসুলপুরে সুবিমানবাবুকে রাস্তায় ফেলে কিছু লোক মারধর করে বলে তাঁর অভিযোগ। এই ঘটনার জন্যেও সুবিমানবাবু স্নেহেশবাবুর বিরুদ্ধে তাঁকে মারধর করায় মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। স্নেহেশবাবুও তা অস্বীকার করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে। কেউ গ্রেফতার হয়নি। |