বহরমপুর সদর হাসপাতালের সামনে থেকে সোমবার রাতে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া কংগ্রেস কর্মী বাপি ঘোষের দেহ মিলল।
বুধবার মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের কাছে তারানগর গ্রামের ঘাটে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে, ওই কংগ্রেস কর্মীর দেহ উদ্ধারের কিছুক্ষণের মধ্যেই খুনের কিনারাও হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করে পুলিশ। এ দিন সকালে তার দেহ উদ্ধারের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ওই খুনে জড়িত সন্দেহে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে তারা। জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরের দাবি, জেরায় ধৃতেরা স্বীকার করেছে, সোমবার রাতে বহরমপুর সদর হাসপাতাল লাগোয়া এলাকায় খুন করা হয় বছর পঁয়তাল্লিশের বাপিকে। তারপর একটি রিকশায় দেহটি তুলে নতুনবাজার এলাকায় দশমুণ্ড কালীবাড়ির ঘাটে ভাগীরথীতে তা ভাসিয়ে দেওয়া হয়। |
ধৃত কালু কুণ্ডু বাপির সঙ্গে হাসপাতাল এলাকাতেই থাকত। অন্য জন সানি শেখ, পেশায় রিকশাচালক। হুমায়ুন কবীর বলেন, “বাপিকে খুন করার সময় আরও অন্তত জনা ছয়েক লোক ছিল ঘটনাস্থলে। তাদের খোঁজ চলেছে।”
পুলিস সুপার জানান, বহরমপুর সদর হাসপাতাল থেকে রোগীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া দেওয়া হয়। ওই ভানা দেওয়ার ব্যাপারটা বাপিই নিয়ন্ত্রণ করত। তা নিয়ে বাপির সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্স মালিকদের বিরোধ চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। ওই বিরোধের পরিণতিতেই এই খুন কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি বছর কয়েক আগে বহরমপুর সদর হাসপাতাল লাগোয়া একটি হোটেল মালিক হানিফ শেখ ও তাঁর ছেলে লাল্টু হোটেলেই খুন হন। ওই জোড়া খুনের মামলার অভিযুক্তরা সবাই বছর তিনেক আগে বেকসুর খালাস পেয়ে গিয়েছে। হুমায়ুন বলেন, “হানিফ ও লাল্টু খুনের মামলায় বাপি ঘোষ অভিযুক্ত ছিল না। তবে হানিফের আত্নীয়দের ধারণা ওই জোড়া খুনে বাপির হাত ছিল। বাপিকে খুন করার এটিও একটি কারণ হতে পারে।”
বাপি খুনের দ্রুত কিনারা হওয়ায় খুশি জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা স্থানীয় সাংসদ অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, “পুলিশ তৎপর হওয়ায় বাপির দেহ পাওয়া গিয়েছে ঠিকই তবে এ বার প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতার করুক পুলিশ।”
তবে জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র অশোক দাসের দাবি, হাসপাতাল চত্বরের জোড়া খুনের সঙ্গে বাপি ঘোষ কোনও ভাবেই যুক্ত নন। তিনি বলেন, “বাপি খুনের ঘটনায় বড় কোনও মাথা কাজ করেছে। সেই মাথাকে আড়াল করতেই জোড়া খুনের তত্ত্ব আমদানি করছে পুলিশ। তাই নিরপেক্ষ ও প্রকৃত তদন্তের দাবিতে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আজ, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে বারো ঘন্টার বহরমপুর বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে।” |