রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে কার্যত একঘরে হয়ে পড়ল কংগ্রেস। আজ পেট্রোলের দাম বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সরকারের বিরোধিতায় নেমেছে বাম ও বিজেপি। তেলের এই দাম বৃদ্ধি কার্যত এক মঞ্চে এনে ফেলেছে দুই বিরোধী পক্ষকে। একই সঙ্গে ইউপিএ-র শরিক এবং বাইরে থেকে সমর্থনকারী দলগুলিও সমালোচনা করতে ছাড়েনি। ফলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে কংগ্রেস আরও বিপাকে পড়ল বলে মনে করছেন অনেকেই।
আজ বাম ও বিজেপি, দু’পক্ষই অবিলম্বে ওই বর্ধিত দাম প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। তা না হলে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে দুই শিবিরই। মনমোহন-সরকার রাজকোষের করুণ অবস্থার ব্যাখ্যা দিলেও বিজেপির অভিযোগ, এই পরিস্থিতির জন্য মনমোহন-সরকারের ত্রুটিপূর্ণ আর্থিক নীতিই দায়ী। বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, “আমরা এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে দেব না। এ জন্য গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নামা হবে। যে আথির্র্ক পরিস্থিতির কথা বলা হচ্ছে, তার জন্য মনমোহন-প্রণবের ভুল নীতি দায়ী। আমজনতা নয়। তা হলে কেন আমজনতার ঘাড়ে বোঝা চাপানো হচ্ছে?” এই সিদ্ধান্তের ফলে ফের মূল্যবৃদ্ধির হার বাড়বে বলেও অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতারা।
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট বলেন, “আমরা সরকারকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে বাধ্য করব।” মঙ্গলবার হালিশহরে এক দলীয় সমাবেশে বৃন্দা কারাট বলেন, বৃহস্পতিবার থেকেই দেশ জুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলন হবে। সিপিআইয়ের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এবং প্রবীণ সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্ত কলকাতায় বলেন, “প্রতিবাদের রূপরেখা ঠিক করতে সবক’টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন শীঘ্রই বৈঠকে বসবে।” তাঁর আরও বক্তব্য, “সংসদ বন্ধে ঠিক পরের দিনই এমন একটি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হল! এই প্রবণতা বিপজ্জনক।”
বাম ও বিজেপি-র বিরোধিতায় অস্বাভাবিক কিছু নেই। কিন্তু কালই ইউপিএ-সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে যে মুলায়ম সিংহ যাদব সনিয়া-মনমোহনের সঙ্গে একই মঞ্চে বসেছিলেন, আজ তাঁর দলও সরকারের সমালোচনা করছে। সপা-নেতৃত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশে সরকার চালানোর জন্য তাঁদের কেন্দ্রের সাহায্য দরকার। তাই তাঁরা জাতীয় স্তরে কংগ্রেসকে সাহায্যও করবেন। তাই বলে কংগ্রেসের সব দোষের ভাগীদার হতে রাজি নন। বিশেষত যে সব সিদ্ধান্তে ভোটব্যাঙ্কে ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে, তার দায় তাঁরা ঘাড়ে নেবেন না। আজ তাই সপা নেতা রামগোপাল যাদব বলেন, “তিন বছরের মাথায় এটা হল কেন্দ্রীয় সরকারের উপহার। এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামব।” তৃণমূল-সপা-র সঙ্গে আজ এনসিপি এবং ডিএমকে-র মতো শরিক দলও কেন্দ্রের সমালোচনা করেছে। বাদ যাননি জয়ললিতার মতো আঞ্চলিক দলের নেতানেত্রীরাও। সব মিলিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে এই বিষয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সব দল আপাতত এক কাট্টা। |