জুনিয়র ডাক্তারদের বারোমাস্যা
ধর্না ছেড়ে মঞ্চে মন্ত্রীর
মুখোমুখি দাবি-দরবার

বিক্ষোভ নয়। কর্মবিরতি নয়।
ধর্নাও নয়।
মঞ্চে দাঁড়িয়ে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরা শান্ত ভাবে নিজেদের সমস্যার কথা একের পর এক বলছেন। আর সেই একই মঞ্চে বসে তা মন দিয়ে শুনছেন এবং ‘নোট’-ও নিচ্ছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) এবং বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষেরা। মাঝেমধ্যে নিজেদের বক্তব্য পেশ করছেন তাঁরাও।
মঙ্গলবার দুপুরে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অডিটোরিয়ামে কাজকর্ম, পঠনপাঠন নিয়ে মুখোমুখি দু’পক্ষের বিভিন্ন অসুবিধার কথা বলা ও শোনার জন্য এই সভার আয়োজন করেছিল চিকিৎসক সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএমএ-র রাজ্য শাখা। সেখানে কখনও উঠে এল সরকারি হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারদের নিরাপত্তার দাবি, কখনও বা জানানো হল গ্রামে কাজ করতে যাওয়া ডাক্তারদের বিভিন্ন নাগরিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার অনুরোধ। কখনও জুনিয়র ডাক্তারেরা খোলাখুলি জানিয়েছেন কোন হাসপাতালে কী কী যন্ত্র না-থাকায় তাঁরা রোগীদের যথাযথ পরিষেবা দিতে পারছেন না। আবার কখনও স্নাতকোত্তরে আসন-সংখ্যা জানানোর ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা চেয়েছেন। হস্টেল, পানীয় জল, ভাল গ্রন্থাগারের ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়েছেন। স্নাতকোত্তর পরীক্ষার জন্য টিউটোরিয়াল চালু করার প্রস্তাব দিয়েছেন। সব শুনে স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্য মঞ্চেই ঘোষণা করেন, “সব ব্যবস্থাই করে দেব আমরা। তোমাদের শুধু কথা দিতে হবে, প্রত্যেকে অন্তত তিন বছর গ্রামে গিয়ে চিকিৎসা করবে।”
এত দিন জুনিয়র ডাক্তারেরা কোনও দাবি জানাতে হলে কিংবা নিজেদের সমস্যার কথা জানাতে চাইলে সাধারণত দল বেঁধে সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ বা সুপারের কাছে গিয়ে ধর্না-বিক্ষোভের পথই নিতেন। কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিতেন। তাতে যে সব সময় সমস্যার সুরাহা হত, তা নয়। অধিকাংশ সময়েই উভয় পক্ষের মধ্যে খোলাখুলি কথা হতে পারত না। আইএমএ-র বক্তব্য, তারা এক মঞ্চে দু’পক্ষকে মুখোমুখি বসিয়ে একটু ‘অন্য রকম’ আলোচনার পরিকল্পনা করেছিল। এ ক্ষেত্রে অনেকটা মধ্যস্থের ভূমিকা নিতে চেয়েছে আইএমএ।
জুনিয়র ডাক্তারেরা এ দিন কী কী সমস্যা নিয়ে মুখ খুলেছেন?
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরা বলেছেন:
মেডিক্যাল কলেজ হওয়া সত্ত্বেও ন্যাশনালে কোনও এমআরআই, ডিজিট্যাল এক্স-রে এবং ডায়ালিসিস হয় না।
রোগীদের ফেরত পাঠালে তাঁদের আত্মীয়স্বজনের রাগ গিয়ে পড়ে জুনিয়র ডাক্তারদের উপরে।
হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের নিরাপত্তার অভাব।
মহিলা ডাক্তারদের নিরাপত্তায় মহিলা পুলিশ মোতায়নের কথা থাকলেও তার ব্যবস্থা হয়নি।
হস্টেল ও গ্রন্থাগারের অবস্থা শোচনীয়।
গবেষণার সুযোগ-সুবিধা নেই বললেই চলে। তাঁদের অভিযোগ ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিখে জানিয়েছেন তাঁরা।
বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরা জানান:
গ্রামে কাজে পাঠালে নাগরিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে।
জুনিয়র ডাক্তারদের ‘রিস্ক অ্যালাউয়েন্স’ বা ঝুঁকি ভাতার ব্যবস্থা করা হোক।
অ্যাড-হক ভিত্তিতে যে-সব চিকিৎসককে নিয়োগ করা হচ্ছে, তাঁদের স্থায়ী করা উচিত সরকারের।
এ ভাবেই দাবি ও আর্জি জানান বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের প্রতিনিধিরা। তবে সবই শান্ত ভাবে। পারস্পরিক মত বিনিময়ের পরিবেশে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.