বিএসএনএল-এর প্যাড কী ভাবে বাম মনোভাবাপন্ন সংগঠনের আমন্ত্রণপত্র ছাপানোর কাজে ব্যবহার হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে ভিজিল্যান্স বিভাগকে দায়িত্ব দিলেন কর্তৃপক্ষ। সংস্থা সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সংস্থার শিলিগুড়ির আধিকারিকেরা বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেন। সেখান থেকে তা কলকাতার উচ্চ পদস্থ কর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়। এর পরে সংস্থার শিলিগুড়ির ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার অরুময় ডাকুয়া বিষয়টি ‘ভিজিল্যান্স’ বিভাগকে জানান। ঠিক কোন বিভাগ থেকে প্যাড বাইরে বার হল এবং তা কীভাবে ওই সংগঠনের হাতে পৌঁছাল তা খতিয়ে দেখতেই তদন্ত শুরু হয়েছে। জেনারেল ম্যানেজার বলেন, “বিষয়টি সংস্থার ভিজিল্যান্স বিভাগকে জানানো হয়েছে।” সম্প্রতি শিলিগুড়িতে বামফ্রন্টের ডাকে একটি নাগরিক কনভেনশন হয়। সেখানে বাম মনোভাবাপন্ন প্রবীণ নাগরিক মঞ্চের একটি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পত্র বিলি করা হয়। আমন্ত্রণপত্রে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসাবে এক সিপিএম নেতার নাম ছিল। অভিযোগ, ওই সিপিএম নেতাই তা বিলি করছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হতেই কিছু আমন্ত্রণপত্র ফেরৎ নেওয়া হয়। দলের তরফে ওই নেতাকে সতর্কও করা হয়। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে বিএসএনএল মহলে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। প্রাথমিক তদন্তের পর এদিন তা ভিজিল্যান্স বিভাগকে জানানো হয়। সংস্থা সূত্রের খবর, ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর পাশাপাশি যে সমস্ত বিভাগে ওই প্যাড ব্যবহার করা হত প্রাথমিকভাবে সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে শুধু এই ঘটনায় নয়, সংস্থার প্যাড, প্রিন্টারের কাগজ বিভিন্নভাবে বাইরে পৌঁছাচ্ছে বলে সংস্থার একাংশ অফিসার কর্মীই অভিযোগ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, “দফতরের কাজের ওই প্যাড এবং কাগজপত্র ব্যক্তিগত কাজেও দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। বিভিন্ন বিল কাউন্টার এবং বিভাগ থেকে তা অনেকেই নানা কাজের অছিলায় চেয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। নানা ক্ষেত্রে পড়াশুনো এমনকী ছবি আঁকার কাজে পর্যন্ত ওই কাগজ ব্যবহার হতে দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ। সংস্থার কাগজপত্রের অপব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করারও দাবি তুলেছেন ওই কর্মীরা। এই ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত জিএম বলেন, ‘‘ঘটনাটি সত্যিই উদ্বেগের। সমস্ত কিছু কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একটি নির্দেশিকাও জারি করা হবে।” প্রাথমিক তদন্তের পরে সংস্থার আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, যে প্যাডটির পিছনের অংশে প্রবীণ নাগরিক মঞ্চের আমন্ত্রণপত্র ছাপা হয়েছে তা মূলত ‘সেল-ওয়ান’ মোবাইলের বিল ছাপানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। সম্প্রতি নতুন ভাবে বিল ছাপা শুরু হওয়ায় ওই প্যাডটি কিছুদিন ব্যবহার করা হচ্ছিল না। সেগুলি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে ছিল। বিভাগগুলির প্রতিদিনকার চিঠি, হিসাবপত্র-সহ নানা প্রয়োজনীয় লেখালেখির কাজকর্মে তা ব্যবহার করা হচ্ছিল। সেক্ষেত্রে তা কোনভাবেই বাইরে যাওয়ার কথা নয়। |