বাইপাস ব্যবহার করছে না ভারী গাড়ি
পুরুলিয়ায় ট্রেলারের চাকায় পিষ্ট বালক
পাড়ার দোকান থেকে বিস্কুট কিনে বাড়ি ফেরার পথে বেপরোয়া ট্রেলারের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এ বালকের। মঙ্গলবার সকালে ওই দুর্ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়ায় পুরুলিয়া শহরের চাটানিপাড়া এলাকায়। ঘটনাস্থলটি পুরুলিয়া-জামশেদপুর ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে ন’ডিহা সব্জি বাজারের অদূরে। দুর্ঘটনার পর এলাকার ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা দেহ ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন। জাতীয় সড়কে অবরোধ শুরু হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বালকের নাম বিজয় মাজি (৮)। বাড়ি চাটানিপাড়াতেই। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৬টা নাগাদ বিজয় তার ঠাকুমার সঙ্গে বিস্কুট কিনে বাড়ি ফেরার জন্য রাস্তা পার হচ্ছিল।
অবরোধ তুলতে পুলিশের লাঠিচার্জ। পুরুলিয়ায় সুজিত মাহাতোর তোলা ছবি।
সেই সময় পুরুলিয়া থেকে জামশেদপুরগামী একটি ট্রেলার বিজয়কে পিষে দেয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। মৃতদেহ রাস্তার উপর পড়ে থাকতে দেখে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কেন বাইপাস থাকা সত্ত্বেও এরকম ভারী পণ্যবাহী যানবাহন শহরে ঢুকবে, সে প্রশ্ন তুলে উত্তেজিত জনতা জাতীয় সড়ক অবরোধ শুরু করেন।
অবরোধ তুলতে এলে পুলিশকে বাধার মুখে পড়তে হয়। পুলিশকে ঘিরে ধরে অবরোধকারীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এক সময় পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেলও ছোড়ে জনতা। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরও করা হয়। অবরোধের জেরে যানজটের সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছন ডিএসপি (শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পুরুলিয়ার মহকুমাশাসক (সদর) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য। শেষ পর্যন্ত সকাল সাড়ে নটা নাগাদ লাঠি চালিয়ে অবরোধ হটিয়ে দেয় পুলিশ।
জেলার পুলিশ সুপার সি সুধাকর অবশ্য লাঠি চালানোর কথা অস্বীকার করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ট্রেলারটিকে আটক করা হয়েছে। পলাতক চালক ও খালাসির খোঁজ চলছে। ইটের ঘায়ে চার পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। পুলিশকে আক্রমণ করার অভিযোগে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জয়পুরে ছবিটি তুলেছেন শুভ্র মিত্র।
এ দিকে বাঁকুড়ার জয়পুরেও পুলিশে লাঠি চালিয়ে বিষ্ণুপুর-আরামবাগ রাস্তা থেকে অবরোধ তুলে দেন। গেলিয়া গ্রামে তিন গ্রামবাসীর গোয়াল থেকে গরু চুরি যাওয়ায় পুলিশ দেরিতে গ্রামে গিয়েছিল বলে অভিযোগ তোলেন বাসিন্দারা। গরুরগাড়ি দিয়ে রাস্তা অবরোধ করা হয়। পুলিশের বড় বাহিনী গিয়ে লাঠি চালিয়ে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেয়। পুলিশ অবশ্য লাঠি চালানোর কথা স্বীকার করে নি।
পুরুলিয়ায় অবরোধকারী জনতার অভিযোগ, শিমুলিয়া-রাঁচি বাইপাস থাকা সত্ত্বেও প্রতিদিন ভারী পণ্যবাহী ট্রাক-ট্রেলার-লরি শহরের রাস্তায় ঢুকে পড়ে। ট্রাফিক পুলিশের নজর এড়িয়ে কী ভাবে সেগুলি শহরে ঢুকছে, তা পুলিশ-প্রশাসন জেনেও নির্বিকার। শহরের কাউন্সিলর বিভাসরঞ্জন দাস বলেন, “প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে, এই ধরনের ভারী গাড়ি যেন কোনও ভাবেই শহরের রাস্তায় না ঢোকে।” পুলিশ সুপার বলেন, “এই বিষয়টি আমরা দেখছি।” মহকুমাশাসকও বলেছেন, “লরি-ট্রাক এ ভাবে ঢুকে পড়ায় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। তাই ওই ধরনের গাড়ি যাতে বাইপাস ব্যবহার করে, তা দেখা হবে।” মৃত বালকের বাবা হারাধন মাজির ন’ডিহা বাজারে সব্জির ব্যবসা। তিনি বলেন, “সকালে দোকান শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সেই সময় বিজয় রাস্তা পার হচ্ছিল। মুহূর্তের মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটে গেল।” এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বাজারের পাশ দিয়ে ওই ট্রেলারটি যে এত দ্রুতগতিতে পার হবে, তা বোধহয় বিজয় আন্দাজ করতে পারেনি। হারাধনবাবুর কথায়, “আমার ছেলে তো চলে গেল। এ বার হয়তো এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ হবে।”
সত্যিই তা হবে কি না, প্রশাসন-পুলিশ আদৌ নড়েচড়ে বসবে কি না, সেটাই এখন দেখার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.