বিশরপাড়া
আক্রান্তদের ফোন পেয়ে থানা বলল, এসে লিখুন নালিশ
বাড়ির ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর চালাচ্ছে সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। আতঙ্কিত মহিলারা ফোন করছেন থানায়। এ দিকে পুলিশ তাঁদের বলছে, ‘আগে থানায় এসে অভিযোগ জমা দিন। তার পরে দেখছি।’
মঙ্গলবার এয়ারপোর্ট থানার বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুললেন বিশরপাড়ার নিহত পুলিশকর্মী অসীম দামের বাড়ির মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ: ওই খুনের ঘটনার সাক্ষী দিতে তাঁরা যাতে আদালতে না যান, সে জন্য এ দিন দুপুরে বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। ওঁদের বক্তব্য, এর আগেও তাঁদের ফোনে হুমকি দিয়েছে ওই দুষ্কৃতীরা। এবং পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ দাম পরিবারের।
এ দিনও থানার সাহায্য ‘না-পেয়ে’ শেষ পর্যন্ত তাঁরা ফোনে যোগাযোগ করেন বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের সঙ্গে। পুলিশ-সূত্রের খবর, কমিশনার নির্দেশ দেওয়ার পরে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ বাড়িতে এসে মহিলাদের থেকে অভিযোগ নেয়। ততক্ষণে অবশ্য দুষ্কৃতীরা ভাঙচুর চালিয়ে চম্পট দিয়েছে। গত ৮ মার্চ দোলের দিনে বিরাটির কাছে বিশরপাড়ার নবজীবন কলোনিতে কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল অসীম দামের বাড়িতে ঢুকে মহিলাদের শ্লীলতাহানি করেছিল স্থানীয় একদল মদ্যপ যুবক। বাধা দিতে গিয়ে তাদের হাতে খুন হন অসীমবাবু। ঘটনাস্থল এয়ারপোর্ট থানার আওতায় হলেও নিমতা থানার কাছাকাছি। কিন্তু সে দিনের কাণ্ডের পরে কোনও থানার পুলিশই অসীমবাবুর পরিবারের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি বলে অভিযোগ। যার জেরে পরে এয়ারপোর্ট থানার ওসি’র বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছিল।
পরে অসীম-হত্যার তদন্তভার রাজ্য গোয়েন্দা-পুলিশ (সিআইডি)-কে দেওয়া হয়। সিআইডি অভিযুক্ত ৮ জনের মধ্যে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। গত ১৮ মে ব্যারাকপুর আদালতে মামলার চার্জশিট জমা দিয়েছে সিআইডি। অসীমবাবুর পরিবারের অভিযোগ, এর পর থেকেই তাঁদের হুমকি দিয়ে বলা হতে থাকে, সাক্ষী দিতে কোটের্র্ গেলে প্রাণে মেরে ফেলা হবে।
কী হয়েছিল এ দিন?
অসীমবাবুর ভাগ্নি মামন ধর বলেন, ‘‘তখন বেলা একটা হবে। আমরা মেয়েরাই শুধু বাড়িতে ছিলাম। জনা দশেক ছেলে বাড়িতে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করল। কয়েক জনের হাতে পিস্তলও ছিল। ভয়ে আমরা ঘরে ঢুকে তালা লাগিয়ে দিই।” মামনের অভিযোগ, “ছেলেগুলো আমাদের অকথ্য গালিগালাজ করছিল। আর বলছিল, সাক্ষী দিতে গেলে খুন করে ফেলবে। কোনও সিআইডি বাঁচাবে না!” ওই পরিবারের দাবি, হামলাকারীদের নাম জানিয়ে তাঁরা এয়ারপোর্ট থানায় ফোন করে সাহায্য চেয়েছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। মামনের কথায়, “পুলিশ বলল, আপনারা থানায় এসে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানিয়ে যান। ওঁদের বোঝানোর চেষ্টা করলাম যে, আমরা ঘরে তালা লাগিয়ে বসে আছি! বাইরে গুন্ডারা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ভাঙচুর করছে। আগে তো এসে আমাদের বাঁচান! পুলিশ আমাদের কথায় কোনও রকম পাত্তাই দিল না!”
অগত্যা বিধাননগরের সিপিকে ফোনে ধরেন মামন। “কমিশনারকে ফোন করার প্রায় এক ঘণ্টা পরে পুলিশ এল। ততক্ষণে ওরা চলে গিয়েছে।” বলছেন তিনি। পুলিশ সময়মতো এল না কেন? বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, “হুমকির অভিযোগ পেয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ যায়নি, এটাও ঠিক নয়। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.