রেল পুলিশকে প্রতারণা করে গ্রেফতার মহিলা
ন্ধ্যা সওয়া সাতটা হবে। কৃষ্ণনগর স্টেশনের এক পাশে রেল পুলিশের ছোট ঘর। আচমকা ঘরে ঢুকলেন সুবেশা এক সুন্দরী। থতমত পুলিশকর্মীদের সামনে মহিলা চোস্ত উচ্চারণে ইংরেজিতে বললেন, তিনি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এক ডিআইজি’র স্ত্রী। দাবি করেন, কৃষ্ণনগরের একটি কলেজে শিক্ষিকার পদে চাকরির পরীক্ষা দিতে এসেছেন। কিন্তু ট্রেনে তাঁর সর্বস্ব চুরি হয়ে গিয়েছে। রাতে হোটেলে ওঠার সঙ্গতিটুকুও নেই। পরের দিনটা কাটানোর জন্যও চান কিছু টাকা।
তাঁকে ও তাঁর ভাবভঙ্গি দেখে গত শুক্রবার সেই সন্ধ্যায় সকলেরই মনে হয়েছিল, তিনি সত্যি কথাই বলছেন। রেল পুলিশ তাঁর কথায় একটি অভিযোগও দায়ের করে। শহরের একটি ভাল হোটেলে তাঁর থাকার বন্দোবস্ত করে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে রেল পুলিশকর্মীরা নিজেদের পকেট থেকেই হাজার পাঁচেক নগদ টাকাও দেন তাঁকে। রেল পুলিশের এক কর্মী জানান, ওই মহিলা তখন ওসি’র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরও জানতে চান, যাতে সেই অ্যাকাউন্টে তিনি ওই পাঁচ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে দিতে পারেন। তাই অন্তত তখন তাঁর কথায় কারও অবিশ্বাস হয়নি।
অভিযুক্ত মহিলা। নিজস্ব চিত্র
কিন্তু ঘোর কাটল পরের দিন সকালে। রেল পুলিশের কর্মীরা ওই হোটেলে খোঁজ নিতে গিয়ে দেখলেন, মহিলা বেপাত্তা। সন্দেহ দানা বাঁধে তখনই। তবে তাঁরা যে প্রতারিত হয়েছেন, সে কথা পরিষ্কার হয়ে যায় শনিবার রাতেই। বেলডাঙার রেল পুলিশ ফাঁড়ি থেকে যখন একই ভাবে প্রতারণা করা হয়েছে বলে খবর পেলেন তাঁরা।
রবিবার সকালে মহিলা হাজির হন কাটোয়ায়। সেখানকার রেলপুলিশও ওই মহিলার কথা মতো একটি অভিযোগ দায়ের করে তাঁকে আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে তার জন্য তাঁকে বিকেলে আর একবার আসতে বলেন তাঁরা। কিন্তু তত ক্ষণে রেলপুলিশ কর্তাদের সব কথা জানিয়ে দিয়েছে কৃষ্ণনগর থানা। তারপরে সব থানাকেই সতর্ক করে দেওয়া হয় ওই মহিলা সম্পর্কে। তাই বিকেলে ওই মহিলা আবার গেলে পাল্টা চাল চালেন সেখানকার কর্মীরা। তাঁর সব কথা বিশ্বাস করে নেওয়া হচ্ছে এমন ভান করে তাঁকে বসিয়ে রাখা হয়। তার মধ্যেই কৃষ্ণনগর রেলপুলিশ থানার কর্মীরা পৌঁছে যান সেখানে। তাঁরা মহিলাকে শনাক্ত করেন। সেই রাতেই তাঁকে কৃষ্ণনগর নিয়ে চলে যাওয়া হয়।
রেল পুলিশের রানাঘাটের ডিএসপি চন্দ্রকান্ত দাসমহাপাত্র বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে সোমবার প্রতারণার অভিযোগে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” তিনি বলেন, “ওই মহিলার আচরণ, উচ্চারণ দেখেই কেউই তাঁর কথা অবিশ্বাস করেননি। পরে সব বোঝা যায়।” তিনি জানান, ওই মহিলা বিভিন্ন থানায় গিয়ে নিজের আলাদা আলাদা নাম পরিচয় দিয়েছেন। চন্দ্রকান্তবাবু বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সব ক্ষেত্রেই তিনি ভুয়ো পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর প্রকৃত পরিচয় আমরা এখনও জানতে পারিনি।” ওই মহিলা এখন অসুস্থ অবস্থায় কৃষ্ণনগরের জেলা হাসপাতালে ভর্তি। কিন্তু ওই মহিলা কেন বারবার রেলপুলিশের থানাতে প্রতারণা করতে যাচ্ছিলেন? রেলপুলিশের শিয়ালদহের সুপারিন্টেন্ডেন্ট তাপস ঘোষ বলেন, “মহিলা সুস্থ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করে সব পরিষ্কার জানা যাবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.