|
|
|
|
আবেগ চেপেই অভিযোগ শুনলেন রজত গুপ্ত |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
শূন্য দৃষ্টি। ভাবলেশহীন, নির্বিকার চোখমুখ। মার্কিন জেলা আদালতে প্রায় স্তব্ধ হয়ে বসে নিজের বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ শুনলেন রজত গুপ্ত। সাড়ে তিন দশক ব্যাপী ছড়ানো কেরিয়ারে যাঁর কথা এত দিন উৎকর্ণ হয়ে শুনেছে বিশ্বের প্রথম সারির প্রায় সমস্ত কর্পোরেট সংস্থা।
সব ক্ষেত্রে অবশ্য আবেগ চাপতে পারেনি তাঁর পরিবার। বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ শোনার সময় বার বারই মুখ চাওয়াচাওয়ি করেছেন রজতবাবুর চার মেয়ে। কখনও বিস্মিত হয়েছেন। কখনও বা ভরসা জোগাতে আলতো হাত রেখেছেন মায়ের কাঁধে। আবার মেয়ের চোখে জল এলে, তাঁকে কাছে টেনে নিয়েছেন মা অনিতা গুপ্ত-ও। শুনানির সময় আগাগোড়া রজতবাবুর পিছনেই বসেছিলেন যিনি। |
|
নিউ ইয়র্কে আদালতের সামনে রজত গুপ্ত। ছবি: রয়টার্স। |
রজতবাবুর প্রায় রূপকথার মতো কেরিয়ারে বরাবরই তাঁকে সাফল্যের শিখরে দেখে এসেছে পরিবার। সেই তাল অবশ্য কিছুটা কেটেছে গত এক বছর ধরেই। কারণ, এই সময়ে প্রায় প্রতি দিন তাঁকে ক্রমাগত ধাওয়া করে গিয়েছে গ্যালিয়ন-কাণ্ড। কিন্তু তা বলে সরাসরি বাবার এমন ‘অবমাননা’ যে মেয়েরা হজম করতে পারছেন না, তা স্পষ্ট ছিল তাঁদের চোখেমুখেই।
এ দিন শুরুতেই একেবারে চাঁছাছোলা ভাষায় রজতবাবুকে আক্রমণ করেছেন প্রতিপক্ষ আইনজীবী রিড ব্রডস্কি। তাঁর অভিযোগ, গোল্ডম্যান স্যাক্সের পরিচালন পর্ষদে থাকাকালীন বহু বার সংস্থার গোপন তথ্য গ্যালিয়নের প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার রাজ রাজারত্নমকে আগাম জানিয়ে দেন রজতবাবু। যা কাজে লাগিয়ে বিপুল মুনাফা করে ওই হেজ ফান্ড। বিভিন্ন সংস্থায় নিজের পদ কাজে লাগিয়ে এমন অন্তত পাঁচ বার করেছেন তিনি।
ব্রডস্কির দাবি, রাজারত্নম এবং রজতবাবু, দু’জনের জীবনেই সাদা-কালো দু’টি দিকই একই রকম স্পষ্ট। এক দিকে, মার্কিন মুলুকের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার পর তাঁরা কাজের জগতে সাফল্যের চূড়া ছুঁয়েছেন। অন্য দিকে, অর্থের লোভে হেঁটেছেন আইন ভাঙার পথে।
আইআইটি ও হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের প্রাক্তনী ও ম্যাকিনসের প্রাক্তন কর্ণধার রজতবাবুর আইনজীবী গ্যারি ন্যাফট্যালিসের অবশ্য দাবি, শুধু সন্দেহ আর গুজবের ভিত্তিতে কাউকে দোষী ঠাওরানো অন্যায়। তাঁর প্রশ্ন, “এত বছরের দীর্ঘ কেরিয়ারে রজতবাবুর সততা, দায়বদ্ধতা নিয়ে কখনও প্রশ্ন ওঠেনি। বরং বরাবরই সকলের শ্রদ্ধা আদায় করেছেন তিনি। সেই তিনি-ই কর্মজীবনের উপান্তে এসে এমন পথে হাঁটবেন, এ কথা কি আদৌ বিশ্বাসযোগ্য?” |
|
|
|
|
|