গভীর রাতে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের অনশনরত ঠিকা কর্মীদের মঞ্চ থেকে তুলে হাসপাতালে ভর্তি করানোয় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বালুরঘাট। বুধবার থেকে বালুরঘাট ডিপোর সামনে অনশনে বসেছিলেন ৬ আন্দোলনকারী ঠিকা কর্মী। শনিবার গভীর রাতে পুলিশ তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যায়। রবিবার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হতেই জেলার রাজনৈতিক মহলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ভোর থেকে ডিপোর সামনে রাজ্য সড়ক অবরোধে নামেন আন্দোলনকারীরা। বিক্ষোভে সামিল হন স্থানীয় পাওয়ার হাউস পাড়া এলাকার একাংশ বাসিন্দা থেকে কর্মীদের পরিবারবর্গ। কংগ্রেস, আরএসপি, সিপিএম এবং এসইউসি নেতা কর্মীরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে রাতের অন্ধকারে জোর করে শ্রমিকদের অনশন আন্দোলন তুলে দেওয়ার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে পথ অবরোধে সামিল হন। শহরে ঢোকার মূল প্রবেশ পথ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ঘুরপথে চকভবানি এলাকা দিয়ে যাত্রীযান চালানো হয়। ঘটনার প্রতিবাদে আজ, সোমবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে ২৪ ঘন্টা পরিবহণ ঘর্মঘটের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস এবং বাম শ্রমিক সংগঠন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় অভিযোগ করেন, “অন্যায় ভাবে আন্দোলন মঞ্চে হানা দিয়ে পুলিশ অনশনরত ৫ জন ঠিকা শ্রমিককে জোর করে তুলে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আঘাত হেনেছে। এর প্রতিবাদে পরিবহণ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। ছাঁটাই হওয়া ঠিকা কর্মীদের পুনর্বহাল করা না হলে আগামীতে বড় আন্দোলন হবে।” সিটু জেলা নেতা শিশির দে’র অভিযোগ, পুনর্বহালের দাবিতে কর্মীরা আমরন অনশন করছিলেন। প্রশাসনের তরফে এ ব্যাপারে সদর্থক কোনও ভুমিকা না নিয়ে উল্টে রাতের অন্ধকারে আন্দোলন তুলে দেওয়া হল। তিনি বলেন, “সোমবার ২৪ ঘন্টা জেলায় সমস্ত রকম যাত্রী পরিবহণ বন্ধ করে ঘটনার প্রতিবাদে নামা হবে।” জেলা পুলিশ সুপার চিরন্তন নাগ বলেন, “অনশনরত ৫ জন শ্রমিকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার খবর পেয়ে প্রশাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পুলিশ সেখানে যায়। রাত আড়াইটা নাগাদ অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের অ্যাম্বুল্যান্স করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।” পুনর্বহালের দাবিতে বালুরঘাট ডিপোর সামনে ছাঁটাই হওয়া ৩৭ জন কর্মীর মধ্যে ৬ জন আমরণ অনশন শুরু করেন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মতিউর মন্ডল নামে এক আন্দোলনকারীকে শনিবার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। |