ডাহুক পাখির ডাক এখন আর শোনা যায় না। পক্ষীবিশারদদের দাবি, ডাহুক (হোয়াইট ব্রেস্ট হেন) ভীষণ দ্রুত অবলুপ্তির পথে হাঁটছে। বলা ভাল দৌড়চ্ছে।
অথচ এক সময় গৃহস্থের বাড়ির পাশে ছোট-বড় জলাশয়ে হামেশাই দেখা যেত এই ডাহুকদের। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গার জলায় ডাহুক দর্শন ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। আজ জলাশয়ের বিপন্নতায় গেঁড়ি, গুগলি, পোকা, ছোট মাছ খেয়ে বেঁচে থাকা এই পাখিরা বিলুপ্ত হওয়ার পথে। সম্প্রতি বালুরঘাটের পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ‘দিশারী সংকল্প’-এর ব্লক ভিত্তিক পরিবেশ সমীক্ষায় সমগ্র দিনাজপুরে মাত্র ৭৭টি ডাহুকের দেখা মিলেছে। আগে যেখানে অজস্র ডাহুক দেখা যেত। যাদের ডাকে অলস দুপুরের নৈঃশব্দ্য ভাঙত। ডাহুকদের হারিয়ে যাওয়ার পিছনে মূল কারণ কংক্রিটের জঙ্গল। এগুলোর জন্য হারিয়ে যাচ্ছে জলাভূমি। ফলে টান পড়ছে ডাহুকের খাদ্যভাণ্ডারে। ডাহুকের মাংস খাওয়ার প্রবণতাও আরেকটি ভয়ঙ্কর দিক। জলে মেশা বিভিন্ন রাসায়ানিক ডাহুকের বংশবিস্তারের পক্ষে পর্বত-প্রমাণ বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সভ্যতার মূর্তিমান লজ্জা হয়ে আমরা এখনও আছি ঠিকই। নেই ডাহুকরা ও কুক কুক ডুক ডুক ডাক।
তুহিনশুভ্র মণ্ডল। দক্ষিণ দিনাজপুর
|
পরিবেশপ্রেমীরা গঙ্গা দূষণ রোধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। সরকার গঙ্গাকে দূষণ মুক্ত করতে অর্থ বরাদ্দ করেছে। অথচ উত্তরবঙ্গের নদীগুলোর নিয়ে কারও কোনও হেলদোল নেই। যে সব নদীর জলে গঙ্গা সহ দক্ষিণবঙ্গের নদীগুলো পুষ্ট হয়, সেই উত্তরবঙ্গের নদীগুলোকে বছরের পর বছর দূষিত করে তোলা হচ্ছে।
মূলত তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা, কালজানি, মহানন্দা সহ ছোট-বড় নদীগুলোতে ঢালাও প্রতিমা বিসর্জন, প্লাস্টিক ফেলা, বর্জ্য পদার্থ ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে এদের মৃত্যুঘণ্টা বেজে গিয়েছে। এর ওপর একটি চক্র মাছ মারার জন্য নদীতে বিস্ফোরক কিংবা বিষ প্রয়োগ করে চলেছে। প্রতি দিনই তিস্তা, তোর্সা, কালজানি, মহানন্দায় মরে ভেসে উঠেছে প্রচুর মাছ। মারা যাচ্ছে অনেক বিরল প্রজাতির মাছও। এই তালিকায় ঢুকে পড়েছে উত্তরবঙ্গের বিরল মাছ বোরলি, মহাশোল।
অথচ এ নিয়ে কেউ ভাবছে না। পরিবেশপ্রেমীরাও আশ্চর্যজনক ভাবে নিশ্চুপ। যে নদীগুলো উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণী ও প্রাকৃতিক সম্পদের একমাত্র প্রাণস্বরূপ, তারা নিঃশব্দে মৃত্যুর দিকে এগোচ্ছে।
নদীগুলো শহরের বুক চিরে প্রবাহিত হওয়ায় সর্বাধিক হচ্ছে। যেমন মহানন্দা নদী শিলিগুড়ির ওপর দিয়ে প্রবাহের সময় বীভৎস ভাবে দূষণের শিকার হচ্ছে। নদীর বুকে যত্র -তত্র গজিয়ে উঠছে খাটাল, বস্তি। চলছে নদীর চর দখল করে চাষবাস ও পশুপালন। শহরের বহু জায়গায় চুরি করে গড়ে উঠছে কংক্রিটের ঘর, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। একই অবস্থা জলপাইগুড়ি শহরের বুক চিরে চলে যাওয়া করলা নদীরও।
বিষয়গুলি নিয়ে দ্রুত ভাবার সময় এসেছে। নদীর মৃত্যু মানে একটা সভ্যতার মৃত্যু। উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে এ সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠেছে।
ঝন্টু বড়াইক। জলপাইগুড়ি
|
কলকাতা ও দক্ষিণের বড় বড় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে টেলিফোনে অ্যাপয়নমেন্ট করা যায়। অথচ জলপাইগুড়ির মতো ছোট শহরে তা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। এতে আমাদের মতো সত্তরোর্দ্ধ প্রবীণ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, যাঁদের সন্তানরা কাছে থাকে না, তাঁদের খুবই অসুবিধে হয়। কোনও সময়ে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়লে পাড়া-প্রতিবেশীর শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।
কারণ সকালে ব্যক্তিগত হাজিরার মাধ্যমে যদি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বারে নাম নথিভুক্ত করা না যায়, তা হলে বিকেলে ডাক্তারবাবু রোগী দেখবেন না। তখন চেম্বার থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে ফিরে আসতে হয়। রোগীর মুমূর্ষু অবস্থা হলেও নিয়মের ব্যতিক্রম হয় না। অবশ্য কিছু ব্যতিক্রমী চিকিৎসকও আছেন। তবে তাঁরা সংখ্যায় নগণ্য।
এই বিষয়ে কিছু চিকিৎসকের মত, যে ফোনে নাম লেখানোর পর অনেক রোগীই চেম্বারে আসেন না। এর ফল ভোগ করেন অন্য রোগীরা। তাঁদের এই যুক্তিটি যে রোগী দেখা এড়াবার কৌশল, তা বলার অপেক্ষা থাকে না।
এই ছোট শহরটায় রোগীর তুলনায় চিকিৎসকের সংখ্যা কম। রোগীদের এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বেশ কিছু চিকিৎসক নিজেদের সুবিধেমতো এই সব নিয়ম করে নিয়েছেন। যার ফলে চরম অসুবিধেয় পড়তে হয় সাধারণ মানুষ ও অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের। যাঁদের চিকিৎসকের ওপর ভরসা করা ছাড়া উপায় নেই।
অরবিন্দ কুমার সেন। জলপাইগুড়ি
|
এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে।
উত্তরের চিঠি,
আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাঃ লিঃ,
১৩৬/৮৯ চার্চ রোড
শিলিগুড়ি- ৭৩৪৪০১ |
|