আমাদের চিঠি

ধ্বংসের মুখে ঐতিহাসিক যুদ্ধক্ষেত্র
প্রায় ১৮০ বছর আগে উত্তর চব্বিশ পরগনার বাদুড়িয়া ব্লকের নারকেলবেড়িয়া গ্রামে বাংলার ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রধান মীর নিশার আলি ওরফে তিতুমির ব্রিটিশ সেনাবাহিনির সঙ্গে লড়াই করার জন্য ‘বাঁশের কেল্লা’ তৈরি করেছিলেন। যুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে তিনি শহিদ হন। সেই যুদ্ধক্ষেত্র ‘বাঁশের কেল্লা’ আজ ধ্বংসের মুখে। কেল্লাটি তৈরি হয়েছিল এক একর বিরাশি শতক জমি নিয়ে। জবরদখল হতে হতে বর্তমানে অবশিষ্ট আছে মাত্র চৌদ্দ শতক। ১৯৭২-এর ২ ডিসেম্বর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় সংহতি সমিতির সম্পাদক অধ্যাপক শান্তিময় রায় কেল্লার জায়গায় তিতুমিরের স্মরণে একটি শহিদস্তম্ভ স্থাপন করেছিলেন। যত্নের অভাবে সেটিতেও ফাটল ধরেছে।
বাঁশের কেল্লায় শহিদ তিতুমিরের স্মৃতিস্তম্ভ।
প্রায় প্রতি দিনই বহু দেশি-বিদেশি পর্যটক ও ইতিহাসের ছাত্র-ছাত্রীরা বাঁশের কেল্লার ঐতিহাসিক স্থান দেখতে এসে নিরাশ হন। মহরম মাসে কারবালা উপলক্ষে এখানে বিরাট মেলা বসে। তখন হাজার হাজার লোক জমায়েত হন। অথচ ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র বিদ্রোহ করেছিলেন যিনি, সেই তিতুমিরের ঐতিহ্য রক্ষা করার কোনও প্রয়াস চোখে পড়ে না। বাঁশের কেল্লার আশপাশের কয়েকটি পুকুর থেকে আজও মাঝে মাঝে পাওয়া যায় সে দিনের যুদ্ধে মৃত শহিদদের হাড় ও করোটি।
প্রশাসন মসলন্দপুর থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত রাস্তাটির নাম ‘তিতুমির সরণি’ রেখেই দায়িত্ব শেষ করেছে। গ্রামবাসীরা যদি উদ্যোগ নিয়ে কেল্লার পাশের মূল জায়গাটি ইটের পাঁচিল দিয়ে সংরক্ষণ না করতো, তা হলে ঐতিহাসিক বাঁশের কেল্লার কোনও স্মৃতিই আজ থাকতো না। ইতিহাসের একটি গৌরবময় অধ্যায়ের সাক্ষী শহীদ তিতুমিরের ‘বাঁশের কেল্লা’। একে সংস্কার ও অধিগ্রহণ করে একটি আকর্ষণীয় ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
বিকৃত নামকরণ
রেলের নিয়মে স্থানের নাম, গ্রামের নাম, মৌজার নামে রেল স্টেশনের নামকরণ হয়ে থাকে। স্থানীয় ভাষা ছাড়াও হিন্দি ও ইংরেজিতে লেখা হয় স্টেশনের নাম। কিন্তু স্টেশনের নাম ইংরেজিতে লিখতে গিয়েই ঘটছে সারা দেশ জুড়ে স্থান-নামের বিকৃতকরণ।
ইংরেজিতে ‘ড়’ ও ‘ঢ়’ লেখা যায় না। স্বভাবতই ‘আড়রা’ হয়ে গিয়েছে আদ্রা, ‘আনাড়া’ হয়েছে আনারা, ‘কুশটাঁইড়’ হয়ে দাঁড়িয়েছে কুস্তাউড়, ‘ছড়রা’ হয়েছে ছররা। এ ধরনের অনেক উদাহরণ রয়েছে। যেখানে বাংলা নামের ইংরেজিকরণে স্থানটির অর্থ হারিয়ে যাচ্ছে।
‘আড়রা’ শব্দের আঞ্চলিক অর্থ চিৎকার করে বলা। ‘আনাড়া’ শব্দটির আনা-র অর্থ বসতি, ‘কুশটাঁইড়’-এর কুশ হল এক ধরনের ঘাস, টাঁইড়-এর আঞ্চলিক অর্থ ডাঙা জমি। এ ভাবে লুকিয়ে রয়েছে স্থান-নাম রহস্য। প্রতিটি স্থান-নামের স্থানীয় অর্থে যথেষ্ট মানে রয়েছে।
অন্য দিকে আদ্রা, আনারা, কুস্তাউর, ছররা প্রভৃতি নামের বাংলায় কোনও মানে হয় না।
ইংরেজিতে না হয় ‘ড়’, ‘ঢ়’ লেখা যায় না। কিন্তু হিন্দিতে তো যায়। হিন্দি লেখার সময়ে কেন ‘আড়রা’, ‘আনাড়া’, ‘ছড়রা’, ‘কুশটাঁইড়’ প্রভৃতি লেখা হয় না? তাই যদি হত তবে আমাদের উত্তরসূরিদের কাছে স্থান-নাম, গ্রাম-নামের রহস্য সন্ধানের ভবিষ্যতে সুযোগ থাকতো।
পরিষেবা বেহাল
দরিদ্র মানুষের কথা ভেবে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সস্তায় ২৫টাকার ‘ইজ্জত মান্থলি’ চালু করেছিলেন। যাতে এরা বৈধ যাত্রী হিসেবে গণ্য হয়। গরীব মানুষের জন্য এটা খুবই উপকারি একটি সিদ্ধান্ত। বাস্তবে এর ব্যাপক অপব্যবহার হচ্ছে। ২৫টাকার মান্থলির বেশিরভাগ গ্রাহক স্যুটবুট পরা সুযোগসন্ধানী লোকজন। এরা ব্যবসাদার, চাকুরিজীবী। স্বচ্ছন্দে ২৫টাকার টিকিট কেটে নিয়মিত ট্রেনে যাতায়াত করছে। টিটির কাছে ধরা পড়লে কিছু করার থাকছে না। মান্থলি থাকায় বৈধ যাত্রী হিসেবে পার পেয়ে যায়। ইজ্জত মান্থলির ওপর সরকারি নজরদারি না থাকায় এদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ফলে রেলের আয় কমছে।
রেলকর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হোক। যাতে প্রকৃত দরিদ্র মানুষরা এই সুযোগ পান। এবং অসাধু সুযোগসন্ধানীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
চোলাই মদের ঠেক
হাওড়া জেলার পাঁচলা থানার উত্তরের গ্রামগুলিতে চোলাই মদ ও নকল বিদেশি মদের অসংখ্য ঠেক চলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। ছেলেবুড়ো সবাই এই মদে চুর হয়ে থাকে। নিষেধ করার কেউ নেই। থানাকে বারবার জানিয়ে কোনও ফল হয়নি। এর কি কোনও প্রতিকার নেই? সমাজ এই ভাবে ধ্বংস হবে?
এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে।
আমাদের চিঠি,
সম্পাদকীয় বিভাগ,
আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাঃ লিঃ,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.