কাল ফের তাপপ্রবাহের আশঙ্কা
বাংলার চিন্তা বাড়িয়ে আন্দামানে পৌঁছতে দেরি বর্ষার
দিনভর প্রচণ্ড দহন এবং চরম অস্বস্তির পরে রবিবার সন্ধ্যার মেঘ এবং বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি সামান্য স্বস্তি দিল ঠিকই। কিন্তু তাতে আশা ও আশ্বাসের কিছুই দেখছে না হাওয়া অফিস। বরং আশঙ্কা বাড়িয়ে তারা জানাচ্ছে, শুরুতেই পিছিয়ে পড়েছে বর্ষা! এবং পরিস্থিতি যা, তাতে কাল, মঙ্গলবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে ফের তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করতে হতে পারে আবহাওয়া দফতরকে।
স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী ২০ মে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছে যায় বর্ষা। আন্দামান থেকেই তা বঙ্গোপসাগরের পথ ধরে ছড়িয়ে পড়ে মায়ানমার, উত্তর-পূর্ব ভারত এবং উত্তরবঙ্গে। আন্দামানে ঠিক সময়ে বর্ষা পৌঁছনো মানে সুখবর। রবিবার কিন্তু সেই সুখবরটা এল না। তার চেয়েও বড় দুর্ভাবনার কথা হল, কবে যে সেই সুসংবাদ আসবে, সেটাও জানাতে পারেননি দিল্লির মৌসম ভবন।
বর্ষা আন্দামানে পৌঁছতে দেরি করে ফেলায় আরবসাগরের পথ ধরে মৌসুমি বায়ুর কেরলে পৌঁছনোর নির্ঘণ্টেও কিছুটা বাধা পড়তে পারে বলে আবহবিদদের আশঙ্কা। সাধারণ নিয়মে ১ জুন মৌসুমি বায়ুর কেরলে পৌঁছনোর কথা। নির্দিষ্ট তারিখে সেখানে না-পৌঁছলে পশ্চিমবঙ্গেও সে আসবে অনেকটা দেরি করে। সেটাও চিন্তায় ফেলে দিয়েছে আবহবিদদের।
দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের উপরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ অক্ষরেখাটিও। ওই অক্ষরেখার দৌলতেই গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে তাপপ্রবাহ কমে গিয়েছিল। রবিবার সন্ধ্যায় ঝড়বৃষ্টিও নামিয়েছে সে। কিন্তু তাতেই তার শক্তি শেষ। হাওয়া অফিস বলছে, নিম্নচাপ অক্ষরেখাটির প্রভাবে বাতাসে যে-জলীয় বাষ্প ঢুকেছিল, এ দিনের ঝড়বৃষ্টিতেই তা প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। যেটুকু অবশিষ্ট থাকছে, তা দিয়ে সোমবারের পরে বাতাসকে আর আর্দ্র রাখা যাবে না। কারণ, নিম্নচাপ অক্ষরেখাটি ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। নিট ফল, মঙ্গলবার থেকে ফের তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করার আশঙ্কা দেখছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
টানা এক সপ্তাহের অস্বস্তিকর আবহাওয়া ও তাপপ্রবাহের পরে রবিবার সন্ধ্যার বৃষ্টিতে তাই আশ্বস্ত হতে পারছে না কলকাতা। এ দিনের বৃষ্টিতে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় অস্বস্তি কেটেছে কিছুটা। কিন্তু সেটা সাময়িক। বৃষ্টিটা সর্বত্র সমান ভাবে হয়নি। কোথাও স্রেফ হাওয়া বয়েছে। আর কিছু হয়নি। শুক্রবার সন্ধ্যাতেও ঘণ্টায় ৬৮ কিলোমিটার গতিবেগে কালবৈশাখী বয়ে গিয়েছিল মহানগরীর উপর দিয়ে। কিন্তু বৃষ্টি হয়েছিল শুধু উত্তর ও পূর্ব কলকাতার কয়েকটি এলাকায়। তা-ও সামান্য সময়ের জন্য। শনিবার ফের তাপমাত্রা উঠে যায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে আর্দ্রতাও। অস্বস্তিসূচক ফের পৌঁছে যায় ৬৮ ডিগ্রির মাত্রায়। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ এ দিন জানান, ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন এলাকায় তাপপ্রবাহ চলছে। তাপপ্রবাহ চলছে মধ্য ভারতেও। সেখান থেকে গরম ও শুকনো বাতাস ক্রমাগত ঢুকছে পূর্ব ভারতে। নিম্নচাপ অক্ষরেখা সক্রিয় হয়ে ওঠায় শুক্রবার থেকে জলীয় বাষ্প ঢুকছিল গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে। তার জন্য মধ্য ভারতের শুকনো, গরম বাতাস ঢোকা বন্ধ হয়েছিল। বাংলায় ত্রাতার ভূমিকা নেওয়া সেই নিম্নচাপ অক্ষরেখা সোমবারের পরেই ফের পুরোপুরি দুর্বল হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন গোকুলবাবু। তখন মধ্য ভারতের গরম ও শুকনো বাতাস আবার হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়বে দক্ষিণবঙ্গে। ছুটির সন্ধ্যার বৃষ্টির স্বস্তি ফের উবে যাবে।
গত সপ্তাহে দক্ষিণবঙ্গের কোথাও কোথাও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৪৫ ডিগ্রির কাছাকাছি। কলকাতায় তাপমাত্রা উঠেছিল ৪০.৫ ডিগ্রিতে। তবে কলকাতার গরমের রেকর্ড (৪৩.৭ ডিগ্রি ) অক্ষতই আছে। কিন্তু আবহবিদদের আশঙ্কা, এই সপ্তাহে ফের রেকর্ড ভাঙার সুযোগ পেতে পারে গরম। এবং তাতে দুর্গতি বাড়বে বঙ্গবাসীরই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.