|
|
|
|
|
বৈঠকে থাক রাজকীয় মেজাজ |
নরম লেদারে শরীর ডুবিয়ে ঘুম ঘুম ভাব, ডুব ডুব স্বপ্ন। আয়েশ বলতে আয়েশ? সেই নবাবি মুডটাই
তুলে আনুন নিজের বৈঠকখানায়। পকেটের টান, ও সহ্য হয়ে যাবে। জানালেন পৌলমী দাস চট্টোপাধ্যায়
|
বাড়িই হোক, বা ফ্ল্যাট তাকে সাজাতে গিয়ে অধিকাংশ মানুষেরই চিন্তা থাকে নির্দিষ্ট পরিসরটিকে কত ভাল ভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই জন্যই এক সময় দ্রুত জনপ্রিয় হয়েছিল স্পেস সেভিং ফার্নিচার। এই আসবাব জায়গা তেমন দখল করত না বরং সংসারের যাবতীয় খুঁটিনাটিও পুরে দেওয়া যেত এর মধ্যে। সবচেয়ে বড় কথা, এর দামও ছিল আয়ত্তের মধ্যে। কিন্তু আপনি না হয় এই গড়পড়তা ধারণার বাইরেই থাকলেন। বহু ব্যবহারে একঘেয়ে হয়ে যাওয়া আসবাবের আবর্তে পাক না খেয়ে আপনার ড্রইংরুমটি না হয়ে বানিয়েই তুললেন দিনশেষের বিলাসিতার ঠিকানা। খরচ না হয় একটু বেশিই পড়বে। কিন্তু বাড়ি যখন আপনার, তখন একটু বেহিসেবি হতে ক্ষতি নেই!
ড্রইংরুমে সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্টটাই মূল কথা। ড্রইংরুমের আয়তন ঠিক করে দেবে থ্রি সিটার না সিক্স সিটার সোফাসেট কিনবেন। আয়তন বেশি হলে লাউঞ্জার, রিক্লাইনার সহ লেদারের সোফাসেট বেছে নিন। রিক্লাইনারের ব্যাকরেস্টটিকে পিছন দিকে অনেকটা হেলিয়ে দেওয়া যায় এবং সামনে অংশটিকে ফুটরেস্ট হিসেবে তুলে নেওয়া যায় বলে বিশ্রামের জন্য আদর্শ। কোনও কোনও সোফার ক্ষেত্রে আর্মরেস্ট-এর অংশটিকে অ্যাডজাস্ট করে হেডরেস্ট বানিয়ে নেওয়ারও সুবিধে আছে। এ বার ফেদারের নরম কুশন টেনে নিলেই একটা ছোট্ট ঘুমের জন্য আয়োজন সম্পূর্ণ। সোফাসেটের সঙ্গে অতিরিক্ত বসার জায়গা হিসেবে চেয়ারের বদলে বেছে নিতে পারেন আর্মরেস্ট, ব্যাকরেস্ট বিহীন পুফ সোফা। পুফ-এর তলায় অনেক সময় চাকা লাগানো থাকে বলে প্রয়োজন মতো সরিয়ে নেওয়া যায়। পুফ-এর একটা সুবিধে হল একে সোফার পাশে অথবা আর্মচেয়ারের সামনে ফুটরেস্ট হিসেবে ইচ্ছে মতো ব্যবহার করা যায়। |
|
তবে খেয়াল রাখবেন সোফাসেট আর পুফ-এর মধ্যে যেন একটা কনট্রাস্ট থাকে। যেমন সোফা সিঙ্গল কালারের হলে পুফ-এর ফ্যাব্রিক অবশ্যই ছোট ছোট চেক হওয়া উচিত।
যাঁরা ভাবছেন ছোট ড্রইং রুমে এত বড় সোফাসেটের জায়গা হওয়া মুশকিল, তাঁরা ডিজাইনার সিঙ্গল সোফা কিনে নিতে পারেন। ভারী সুন্দর শেপে পাওয়া যায় এই ডিজাইনার সোফা। কোনওটা পদ্মের কুঁড়ির মতো, কোনওটা আধফোটা ফুলের মতো, আবার কোনওটা ঝিনুকের খোলার মতো। সেন্টার টেবিলের তিন দিকে এই সিঙ্গল সোফা দিয়ে সাজিয়ে দিলে সম্পূর্ণ অন্য রকম একটা লুক পাওয়া যায়।
সেন্টার টেবিলের শেপ নিয়েও পরীক্ষানিরীক্ষা করা যেতে পারে। মিন্টো পার্ক আর বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের সংযোগস্থলে গড়ে ওঠা ইতালীয় বিলাসবহুল আসবাবের দোকানে বিভিন্ন ধরনের সেন্টার টেবিল-এর এক নজরকাড়া সংগ্রহ দেখতে পাবেন। চিরাচরিত গোল বা স্কোয়্যার সেন্টার টেবিল-এর বদলে জলের ফোঁটার আকারের সেন্টার টেবিল সাজিয়ে চমকে দিতে পারেন অতিথিদের। অথবা বহুমূল্য আমানি স্টোন-এর পেন্টাগন শেপের টেবিলকে ঘিরে বসাতে পারেন চায়ের আসর। আধখানা চাঁদের মতো বা ‘এস’ শেপের গ্লাস টপ টেবিল তো এখন অনেক শৌখিন মানুষেরই বসার ঘরে শোভা পায়। সোফা সেটের পাশের বা কোনও কর্নার বেছে নিয়ে টু বা থ্রি সেট সাইড টেবিল রাখতে পারেন। হুবহু একই রকম দেখতে, কিন্তু বিভিন্ন মাপের এই ছোট টেবিলগুলির একটিকে অন্যটির পেটের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখা যায়, আবার প্রয়োজন মতো বের করে পর পর রেখে দেওয়া যায়। যে কোনও কনটেম্পোরারি ফার্নিচার শপেই পেয়ে যাবেন। ছোট বই, কাগজ বা ম্যাগাজিন রাখার জন্য সুইং ম্যাগাজিন র্যাক এক ধারে রেখে দিন। |
|
টিভি রাখার জন্য ঢাউস একখানা ওয়াল ক্যাবিনেট বানালে স্টোরেজ স্পেস অনেকটা পাওয়া যায় ঠিকই, কিন্তু দেখতে বড় বেশি জবড়জং লাগে। ট্রেন্ড কিন্তু এই ধরনের ক্যাবিনেটের বিপরীত। লো লাইং টিভি বা ওয়াল ক্যাবিনেট ছোট-বড় যে কোনও ড্রইং রুমের সঙ্গেই মানানসই। মাটি থেকে ক্যাবিনেট-এর স্টোরেজ স্পেসটির উচ্চতা হাতখানেকের একটু বেশি। ক্যাবিনেট-এর ওপরের দেওয়াল জুড়ে থাকতে পারে বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের ছোট-বড় শেলফ, ডিভিডি, ছোটখাটো শো-পিস, বই রাখার জন্য। যদি মনে হয় যে, আপনার সাউন্ড সিস্টেম এই ক্যাবিনেট-এ রাখা সম্ভব হচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে আস্ত একখানা সাউন্ড চেয়ারই কিনে নিতে পারেন। এতে বিল্ট ইন অডিয়ো সিস্টেম থাকে বলে ল্যাপটপে লাগিয়ে গান শোনা যাবে। তবে লো লাইং টিভি ক্যাবিনেট-এর সঙ্গে সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট যেন মানানসই হয়, অবশ্যই সে দিকে খেয়াল রাখবেন। টিভি-র মুখোমুখি লো হাইটের সোফা কাম বেড রাখা যেতে পারে। লো হাইট-এর ফোম-এর বেঞ্চও থাকতে পারে, তবে এ ক্ষেত্রে রিল্যাক্স করার সুযোগ কম থাকবে।
ড্রইং রুম ফার্নিচারের মধ্যে এখন বিভিন্ন ধরনের আর্মচেয়ারের প্রাধান্য চোখে পড়ার মতো। পুশ ব্যাক আর্মচেয়ার তো বাজারে ছিলই। এর সঙ্গে অ্যাডজাস্টেব্ল হেডরেস্ট, ফুটরেস্ট ও আর্মরেস্ট সহ আর্মচেয়ার জায়গা করে নিয়েছে ড্রইং রুমে। যাঁরা কোমর বা পিঠের ব্যথায় ভোগেন, তাঁরা অবশ্যই আর্গোনমিক চেয়ারের খোঁজ করতে পারেন। এই ধরনের চেয়ারের ক্ষেত্রে যে শুধুমাত্র উচ্চতা বাড়ানো-কমানো যায়, তা নয়। এর ব্যাকরেস্টটিকে ইচ্ছে মতো হেলিয়ে দেওয়া যায় এবং আর্মরেস্ট-এর অংশটিকে সুবিধে মতো ব্যবহার করা যায়। এই ধরনের চেয়ারের কাঠামোটি এমন ভাবে তৈরি হয়, যাতে তা কোমরের অংশে যথেষ্ট সাপোর্ট জোগাতে পারে। ফলে যাঁরা দিনের অনেকটা সময় কম্পিউটার বা টিভি-র সামনে কাটান, তাঁদের জন্য এই চেয়ার আদর্শ। |
|
|
|
|
|