|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৪... |
|
সার্ধশত জনতায় অপূর্ব একা |
বইপোকা |
‘গায়ত্রীমন্ত্রে আমার উপনয়ন হয়নি, হয়েছিল রবীন্দ্রনাথের কবিতায়’। সুরেশচন্দ্র মজুমদার স্মৃতি পুরস্কার প্রাপ্তি উপলক্ষে তাঁহার প্রাপকের ভাষণ এই ভাবে শুরু করিয়াছিলেন অন্নদাশঙ্কর রায়। রবীন্দ্রনাথের অন্ধ বিগ্রহপূজা তিনি করেন নাই, ভালবাসিয়াছিলেন রবীন্দ্রনাথকে। কে জানে, হয়ত সেই কারণেই মূর্তিপূজার এই বঙ্গে ছয়শতছত্রিশ রকমের ‘আমার রবীন্দ্রনাথ’ প্রকাশিত হইয়া চলিল কিন্তু অন্নদাশঙ্করের রবীন্দ্রনাথকে একত্রে পাইতে সার্ধশতবর্ষ সমাপ্ত হইয়া গেল। তবু, বিলম্ব সম্পূর্ণ নাস্তি হইতে ভাল। সার্ধশতবর্ষের সমারোহে কিঞ্চিৎ ব্যতিক্রমী প্রকাশনা হইয়া থাকিবে অন্নদাশঙ্কর রায়ের রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে (সম্পাদনা সুরজিৎ দাশগুপ্ত, দে’জ পাবলিশিং, ২০০.০০)। ‘রক্তকরবী’র তিনজন’, ‘রবীন্দ্রাদিত্য’, ‘চোখের দেখা’, ‘রবীন্দ্রনাথ ও মুসলমান’ ইত্যাকার ১৩টি প্রবন্ধের সহিত সংকলিত ডি এম লাইব্রেরি হইতে ১৯৬২-তে প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথ গ্রন্থটিই। আছে রবীন্দ্রনাথের স্বহস্ত-সংশোধিত অন্নদাশঙ্করের কবিতাপৃষ্ঠার প্রতিলিপিও। কিন্তু এ সকলই বোধ করি বাহিরের প্রাপ্তি। সার্ধশতবর্ষের এই কোলাহলমুখর বহু জনতার মাঝে অপূর্ব একার ন্যায় জাগিয়া থাকিবে ‘জীবনশিল্পী রবীন্দ্রনাথ’ প্রবন্ধটি, যাহার শেষে অন্নদাশঙ্কর লিখিতেছেন: ‘একটি মুক্ত পুরুষের দৃষ্টান্ত লক্ষ মুক্ত পুরুষের আবাহন করে। কাল নিরবধি, পৃথিবীও বিপুলা। রবীন্দ্রনাথের উত্তরপুরুষরা এই বলে তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ থাকবেন যে, মানুষের যা চরম উত্তরাধিকার তাই তিনি দিয়ে গেলেন। সেটি হচ্ছে, ‘কী ভাবে বাঁচব’ এই জিজ্ঞাসার নিঃশব্দ উত্তর।’ |
|
|
|
|
|